ব্যাংকক: থাইল্যান্ডের বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। সোমবার রাজধানী ব্যাংককের কিছু ঝুকিঁপূর্ণ এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার সতর্কতা জারি করা হয়েছে।
বন্যার পানি বৃদ্ধি এবং নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাওয়ায় ব্যাংককের লাখ লাখ মানুষ চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে।
ব্যাংকক পৌরসভা কর্তৃপক্ষ গত রোববার রাতে জানায়, বিশাল পানির ঢল ব্যাংককের নিম্নাঞ্চলের দিকে ধেয়ে আসছে। পানি ছয়টি জেলা শহর এবং রাজধানীর উত্তরাঞ্চলের কাছাকাছি চলে এসেছে।
গত তিন মাস ধরে ভারী মৌসুমি বৃষ্টির কারণে দেশটির অনেক অঞ্চল বন্যা কবলিত হয়েছে। সারা দেশে এ যাবত ৩৫০ জনের প্রাণহানির খবর পাওয়া গেছে। কমপক্ষে ৯০ লাখ মানুষের বসত-বাড়ি এবং সম্পদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
পর্যটন শহর চাতু যাক এবং দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিমান বন্দরের শহর দন মুয়েয়াংসহ ব্যাংককের ছয়টি জেলায় ঝুকিঁ বাড়ছে।
এদিকে, ব্ন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত শত শত কারখানার ক্ষতি পুষিয়ে দিতে অর্থনৈতিক সহায়তা দেওয়ার বিষয়ে আগামী মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা করা হবে বলে সরকার জানিয়েছে।
রাজধানীকে বাঁচাতে শহরের ভেতর ও বাইরের স্লুইচ গেটগুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। নিষ্কাশন নালা এবং নদী দিয়ে পানি সাগরের উল্টো দিকে প্রবাহিত করা হচ্ছে। এ কারণে ব্যাংককের উত্তর দিকের শহরগুলো নতুন করে বন্যা ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে।
রোববার প্রধানমন্ত্রী ইংলাক সিনাওয়াত্রা বলেছেন, ‘এখানে কয়েকটি বিষয় আমরা নিয়ন্ত্রণ করতে পারছি না। পানি দুই দিক থেকে একসঙ্গে আসছে। ’
এদিকে ২৮ থেকে ৩০ অক্টোবরের মধ্যে চাও ফ্রায়া নদীতে বড় জোয়ার হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এতে নদীর দু’কূল ছাপিয়ে পানি ব্যাংককের উত্তরাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি আরও গুরুতর করে দিতে পারে।
চাও ফ্রায়া নদীতে আকস্মিকভাবে পানি বেড়ে যাওয়ায় রোববার থাই সেনারা আবারও দুর্বল বাঁধ দিয়েছে। নদীর আশপাশের প্রায় ৩ হাজার বাসিন্দাকে নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংককের উত্তরে থামাসাত বিশ্ববিদ্যালয় এখন একটি আশ্রয় কেন্দ্র। সোমবার সকালে পানির উচ্চতা বেড়ে এক দশমিক ৫ মিটারে পৌঁছালে আশপাশের লোকজন সেখানে গিয়ে আশ্রয় নিয়েছে।
কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, দেশজুড়ে এক হাজার ৭৪৩টি আশ্রয়কেন্দ্রে এক লাখ ১০ হাজারেও বেশি মানুষ আশ্রয় নিয়েছে।
তবে ব্যাংককের জনপ্রিয় পর্যটন এলাকাগুলো ও রাজধানীর মূল বিমান বন্দর এখনও বন্যা কবলিত হয়নি।
বাংলাদেশ সময়: ২০৩৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৪, ২০১১