ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

মোহাম্মদ বিন সালমান ‘লাপাত্তা’ কেন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬১৬ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
মোহাম্মদ বিন সালমান ‘লাপাত্তা’ কেন? ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান কোথায়?

প্রায় মাসখানেক ধরে ‘হদিস মিলছে না’ সৌদি আরবের প্রভাবশালী ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের। গত ২১ এপ্রিল রিয়াদে রাজপ্রাসাদে গোলাগুলি-বিস্ফোরণের ঘটনার পর তার এভাবে ‘লাপাত্তা’ হয়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে ইরানি সংবাদমাধ্যমে জোর আলোচনা চলছে, বিন সালমান কি তবে বেঁচে নেই?

ইরানের সবচেয়ে রক্ষণশীল পত্রিকা বলে পরিচিত কায়হান ‘একটি আরব দেশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো গোপন নথি’র বরাত দিয়ে জানায়, ২১ এপ্রিল রাতে রাজপ্রাসাদে গুলি ও বিস্ফোরণের সময় বিন সালমানের গায়ে দু’টি বুলেটবিদ্ধ হয়। তারপর থেকে তাকে আর জনসম্মুখে দেখা যায়নি।

এ ব্যাপারটি আরও খোলাসা করে প্রেস টিভি বলছে, সেই রাতের পর সৌদি কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে বিন সালমানের নতুন কোনও ছবি বা ভিডিও প্রকাশ হয়নি। এমনকি এপ্রিলের শেষ দিকে সদ্যনিযুক্ত মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পোম্পিও তার অভিষেক বিদেশ সফরে সৌদি গেলেও কোনও ক্যামেরার ফুটেজে দেখা যায়নি ‘ভবিষ্যৎ বাদশাহ’র চেহারা।

ইরানের আরেক সংবাদ সংস্থা ফার্স’র ভাষ্য, মোহাম্মদ বিন সালমানকে তার বাবা বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ ক্রাউন প্রিন্স পদে অধিষ্ঠিত করার পর প্রায় নিয়মিতই তিনি গণমাধ্যমের সামনে হাজির হয়েছেন। কিন্তু রিয়াদের রাজপ্রাসাদে গোলাগুলির পর দীর্ঘ ২৭ দিন তার লাপাত্তা হয়ে যাওয়া নানা প্রশ্ন সামনে আনছে।

অবশ্য রাশিয়ার সংবাদ সংস্থা স্পুটনিকের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সেদিন রাতের পর এমন সব জল্পনা তৈরি হলেও সপ্তাহখানেক পরের এক অনুষ্ঠানেও বিন সালমানকে দেখা যায়।

গত বছরের জুনে ভাতিজা মোহাম্মদ বিন নায়েফকে সরিয়ে ছেলে মোহাম্মদের ‘ভবিষ্যৎ বাদশাহ’ হওয়ার পথ সুগম করতে তাকেই ক্রাউন প্রিন্স বানান সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজ আল সৌদ। তারপর থেকে কার্যত সৌদি রাষ্ট্রই যেন চালাচ্ছিলেন মোহাম্মদ। সৌদি রাজত্বের রাজনৈতিক, সামরিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে নানা অভাবনীয় সংস্কার আনেন তিনি। এমন সংস্কার আনেন যে, তার হাত ধরে ‘আধুনিক প্রগতিশীল সৌদি আরব’ গড়ার সূচনাও দেখছিলেন অনেক পর্যবেক্ষক।  

যদিও এই সংস্কার কার্যক্রমে ইরান-কাতারের সঙ্গে বাকযুদ্ধে জড়ানোর পাশাপাশি ইয়েমেন-সিরিয়া যুদ্ধেও ভূমিকার জন্য সমালোচনায় পড়েন তিনি। সবশেষ ফিলিস্তিনিদের বিক্ষোভের প্রেক্ষিতে ইসরায়েলের প্রতি অনুকম্পামূলক একটি মন্তব্যও তুমুল সমালোচনার ঝড় তোলে।

এরমধ্যেই গত ২১ এপ্রিল রিয়াদের রাজপ্রাসাদ থেকে তুমুল গোলাগুলি ও বিস্ফোরণের শব্দ শুনতে পাওয়ার কথা জানায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম। সম্ভাব্য কোনও ‘অভ্যুত্থানচেষ্টার’ ফল ওই গোলাগুলি বলেও ধারণা করেছিলেন অনেকেই। সেসময় সৌদির সামরিক বাহিনীর সূত্রে জানা যায়, প্রাসাদের খুব কাছ দিয়ে উড়ে যাওয়া একটি ড্রোন ভূপাতিত করতেই রক্ষীরা গুলি ছুড়েছিল।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ঘটনার সময় সৌদি বাদশা সালমান প্রাসাদ ছেড়ে কাছাকাছি একটি সামরিক ঘাঁটিতে আশ্রয় নেন। তবে বিপদে পড়েন মোহাম্মদ।

এই বিপদ, তার ‘নেই’ হয়ে যাওয়ার মতো কি-না, সে প্রশ্নটাই এখন উসকে দিলো ইরানি সংবাদমাধ্যম।

বাংলাদেশ সময়: ২২০৫ ঘণ্টা, মে ১৯, ২০১৮
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।