ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ হচ্ছে অত্যাধুনিক ৬ সমরাস্ত্র

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪১০ ঘণ্টা, জুলাই ৮, ২০১৮
রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ হচ্ছে অত্যাধুনিক ৬ সমরাস্ত্র ফাইল ফটো

বেশ কিছু অত্যাধুনিক সমরাস্ত্র পেতে চলেছে রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। বলা হচ্ছে, বিশ্বের অন্য কোনো রাষ্ট্রের ভাণ্ডারে এর সমপর্যায়ের কোনো অস্ত্র নেই। 

রাশিয়ার মিলিটারি একাডেমিতে বক্তব্য রাখার সময় প্রধানমন্ত্রী ইউরি বোরিসভ জানান, বর্তমানে রাশিয়ার সামরিক বাহিনীকে ঢেলে সাজানোর কাজ চলছে। এর মাধ্যমে ২০১৮ থেকে ২০২৭ সালের মধ্যে যোগ হতে চলেছে বিশ্বের আধুনিকতম প্রযুক্তির বিভিন্ন অস্ত্র যা ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্রগুলোসহ বিভিন্ন রাষ্ট্রের সেনাবাহিনীর ব্যবহৃত অস্ত্র, এমনকি ভবিষ্যৎ অস্ত্র-প্রযুক্তিকেও ছাড়িয়ে যাবে।

রাশিয়ার সামরিক বাহিনীতে যোগ হতে চলা ছয়টি অস্ত্রের কথা প্রকাশ করেন বোরিসভ। এগুলোরমধ্যে রয়েছে:

১. সারমাত আইসিবিএম
রাশিয়ার সারমাত ইন্টারকন্টিনেন্টাল (আন্তঃমহাদেশীয়) ব্যালিস্টিক মিসাইল একটি বহুল আলোচিত এবং সর্বাধুনিক অস্ত্র প্রযুক্তিগুলোর মধ্যে অন্যতম। গত ১ মার্চের এই অস্ত্র উন্মোচন করেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। বলা হয়, এ মিসাইলটি বিপুল পরিমাণ বোঝা বহন করে উত্তর ও দক্ষিণ মেরুসহ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে পৌঁছে যেতে পারে।  
পরীক্ষা চলাকালে সারমাত আইসিবিএম।  ফাইল ফটো
কিছু পশ্চিমা মিডিয়াতে সারমাতকে বলা হয় ‘ডুমসডে ওয়েপন’ অর্থাৎ কেয়ামতের অস্ত্র। যুক্তরাষ্ট্রের মিসাইল প্রতিরক্ষা সহজেই অতিক্রম পারবে এ ক্ষেপণাস্ত্র। বর্তমানে এটি পরীক্ষাধীন রয়েছে। গত মে মাসে পুতিন জানান, ২০২০ সালের মধ্যেই সারমাত স্থাপিত হবে।

২. পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ্‌ ফাইটার
দূরপাল্লার ব্যালিস্টিক মিসাইল ছাড়াও রাশিয়ার সেনাবাহিনীতে যোগ হচ্ছে পঞ্চম প্রজন্মের স্টিলথ্‌ ফাইটার প্লেন এসইউ-৫৭। গত জুনে এই মডেলের ১২টি প্লেনের জন্য চুক্তি স্বাক্ষর করে রাশিয়ান মিলিটারি। আগামী বছরই অত্যাধুনিক এ প্লেনগুলোর ডেলিভারি হওয়ার কথা।  
এসইউ-৫৭।  ফাইল ফটো
পঞ্চম প্রজন্মের এই ফাইটার প্লেনগুলোর প্রধান বৈশিষ্ট্য এর রাডার ফাঁকি দেওয়ার ক্ষমতা। ফাইটারগুলোতে এক ধরনের বিশেষ রং বা পেইন্ট ব্যবহার করা হয় যা রাডার থেকে ছুঁড়ে দেওয়া তরঙ্গকে রাডারে ফিরে আসতে দেয় না। ফলে রাডারের পক্ষে প্লেন শনাক্ত করা সম্ভব হয় না।

৩. টি-৩৪ আরমাটা ট্যাংক
২০২০ সালের মধ্যে রাশিয়ান সেনারা পাবেন ১০০টিরও বেশি টি-১৪ আরমাটা ব্যাটেল ট্যাংক। এ মারাত্মক যুদ্ধাস্ত্রটি সম্পূর্ণ স্ব-নিয়ন্ত্রিত। সাত কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম এর ১২৫এমএম গোলা। আর মিনিটে ১২ রাউন্ড গোলাবর্ষণ করতে পারবে এ ট্যাংক।
টি-৩৪ আরমাটা ট্যাংক।  ফাইল ফটো

৪. এস-৫০০
এস-৫০০ হচ্ছে রাশিয়ার পরবর্তী প্রজন্মের সার্ফেস টু এয়ার মিসাইল বা স্যাম সিস্টেম। সার্ভিসে আসার পর এটিই হবে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী স্যাম সিস্টেম। এই সিস্টেম ৪৮০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে এবং হাইপারসনিক মিসাইলের পথরোধ করতেও সক্ষম। ২০২০ সালের মধ্যেই সার্ভিসে আসবে এ অস্ত্রটি।
এস-৪০০ (এস-৫০০'র আগের সংস্করণ) ।  ফাইল ফটো

৫. মিসাইল ডিফেন্স শিল্ড
রাজধানী মস্কোসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকার নিরাপত্তা বাড়াতে নিজেদের মিসাইল ডিফেন্স শিল্ড আপগ্রেডের সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাশিয়া। নুডল নামের নতুন এই সিস্টেম সম্পর্কে এখনই বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। তবে একটি রিপোর্টে বলা হয়, এই সিস্টেম একাধিক পারমাণবিক হামলা এবং সর্বাধুনিক ব্যালিস্টিক মিসাইলের পথরোধ করে ফেলতে পারবে। এমনটাও বলা হয়েছে যে, মহাকাশের স্যাটেলাইট ধ্বংস করতে পারবে এ মিসাইল।

৬. টিরাডা-২এস স্যাটেলাইট জ্যামার
তথ্যপ্রযুক্তির এ যুগে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ সামরিকবাহিনীর হাতে যেকোনো আক্রমণ বা হুমকি প্রতিহত করার উপায় থাকা উচিত। টিরাডা-২এস নামের এই ইলেকট্রনিক ডিভাইস কোনো কিছু ধ্বংস করবে না, তবে সফলভাবে অকেজো করে দেবে স্যাটেলাইট ও এর ভেতরের সব ধরনের যোগাযোগ ব্যবস্থা।  

বাংলাদেশ সময়: ০৯৫৮ ঘণ্টা, জুলাই ০৮, ২০১৮
এনএইচটি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।