সিঙ্গাপুরে মঙ্গলবার (২১ আগস্ট) এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। এর মাধ্যমে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়টি ফের বাংলাদেশের উপর চাপালেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে কার্যত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ দেশটির ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্রেসির (এনএলডি) নেত্রী।
অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে সু চি বলেন, তাদের (রোহিঙ্গা) ফিরিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব বাংলাদেশের। আমরা ৎ কেবল সীমান্তে স্বাগত জানাতে পারি।
‘আমি মনে করি কতো দ্রুত তাদের ফিরিয়ে দিতে চায়, সে বিষয়ে বাংলাদেশকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে’। তবে এ প্রক্রিয়ার জন্য নির্দিষ্ট কোনো সময়সীমা বেঁধে দেওয়া কঠিন বলেও উল্লেখ করেন সু চি।
কয়েক প্রজন্ম ধরে রাখাইনে বসবাস করে আসলেও রোহিঙ্গাদের নাগরিকত্ব স্বীকার করে না মিয়ানমার। গত আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, নির্যাতন ও দমনপীড়ন চালায় দেশটির সেনাবাহিনী। এতে জীবন বাঁচাতে ৭ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। বিষয়টিকে ‘জাতিগত নিধন’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে জাতিসংঘ।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিশ্বসম্প্রদায় সরব হয়ে উঠলে ২০১৭ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো মুখ খোলেন সু চি। সে সময় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, রোহিঙ্গা গণহত্যার বিষয়ে বিশ্ব সম্প্রদায়ের উদ্বেগে মিয়ানমার বিচলিত নয়। তিনি ঔদ্ধত্যের সুরে বলেন, ‘রোহিঙ্গা ইস্যুতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের পর্যবেক্ষণ মিয়ানমার ভয় পায় না। ’
অনেক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে পালিয়ে গেছে স্বীকার করে রাখাইনে মানবাধিকার লঙ্ঘন ও বেআইনি সহিংসতার নিন্দা জানিয়ে সু চি বলেন, ১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে হওয়া সমঝোতার ভিত্তিতে যাচাই-বাছাই করে শরণার্থীদের ফিরিয়ে নিতে সু চি সরকার প্রস্তুত।
এরপর রোহিঙ্গাদের ফেরাতে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। গঠন করা হয় ‘যৌথ ওয়ার্কিং কমিশন’। শুধু তাই নয় অং সান সু চি ও দেশটির সেনাপ্রধান মিন অং লাইংসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে রায়ও দেন একটি আন্তর্জাতিক গণ-আদালত।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩৮ ঘণ্টা, আগস্ট ২১, ২০১৮
জেডএস