শুক্রবার (৩১ আগস্ট) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, এনএসও গ্রুপের বিরুদ্ধে দু’টি মামলায় ওই ইমেইল জমা দেওয়া হয়েছে। ইসরায়েল ও সাইপ্রাসে মামলা দু’টি করেছেন এই কারসাজির অন্যতম টার্গেট এক কাতারি নাগরিক ও এক মেক্সিকান সাংবাদিক-মানবাধিকারকর্মী।
মামলার বাদীদ্বয় বলেছেন, ‘পেগাসাস’ নামে ওই স্পাইওয়্যার ‘টার্গেট’ ব্যক্তিদের মোবাইল ফোনে টেক্সট মেসেজের মাধ্যমে পাঠানো হয়, সেখানে একটি লিংক দেওয়া হয়, যাতে ক্লিক করলেই সংশ্লিষ্ট ফোনটি এমন সেটাপের কবলে পড়ে যায়, যাতে সেখানকার সব ফোনালাপ, টেক্সট আদান-প্রদান, ফোনের মাধ্যমে হওয়া ইমেইল আদান-প্রদান, এমনকি অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কর্মকাণ্ড ওপ্রান্তে হ্যাকারদের হাতে পৌঁছে যায়। কেবল তা-ই নয়, ‘টার্গেট’ সরাসরি কোনো আলাপ-আলোচনায় বসলেও আশপাশ থেকে তা হ্যাকারদের কাছে সরবরাহ করতে পারে ‘পেগাসাস’।
মামলায় বলা হয়, ২০১৩ সালের আগস্টের শুরুর দিকে ইসরায়েলের ওই কোম্পানিটির সঙ্গে আরব আমিরাতের চুক্তিটি হয়েছিল। আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ এবং সৌদি আরবের সেসময়কার ক্রাউন প্রিন্স (যাকে ভবিষ্যৎ বাদশাহ ভাবা হচ্ছিল) মুতায়েব বিন আব্দুল্লাহ এবং লেবাননের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী সাদ হারিরিসহ অনেক নেতা-কর্মকর্তার গোপন-স্পর্শকাতর তথ্য হাতিয়ে নিতেই সে চুক্তি করে আমিরাতের নেতৃত্ব।
মেক্সিকান সাংবাদিক-মানবাধিকারকর্মী তার মামলায় অভিযোগ করেন, এনএসও গ্রুপ তাদের নজরদারির প্রযুক্তিটি মেক্সিকো সরকারের কাছে বিক্রি করেছিল এই শর্তে যে, সেটা কেবল অপরাধী ও সন্ত্রাসীদের ধরতে ব্যবহার হবে। কিন্তু এখন তার শিকার হচ্ছেন অনেক খ্যাতনামা সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ, মানবাধিকার আইনজীবী ও অপরাধ গবেষকরা।
তবে তথ্য হ্যাক করা গেছে কি-না, বা করলেও কোন পর্যায় পর্যন্ত করা গেছে, সে বিষয়ে নিউইয়র্ক টাইমসের প্রতিবেদনে কিছু বলা হয়নি।
অবশ্য, ২০১৭ সালের মে মাসে কাতারের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও সরকারের বেশ কিছু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অ্যাকাউন্ট হ্যাক হয়। তার জেরেই আরব দেশগুলোর সঙ্গে কাতারের বিরোধ স্পষ্ট হয়ে পড়ে। যার পরিণতিতে সে বছরের ৫ জুন কাতারের সঙ্গে সৌদি ও আরব আমিরাতের নেতৃত্বে আরব দেশগুলোর সর্বাত্মক সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হতে দেখা যায়।
লন্ডনভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল গত ১ আগস্ট এক প্রতিবেদনে জানায়, এনএসও গ্রুপের একটি সন্দেহভাজন লিংক তাদের নেটওয়ার্কের একটি সাইটে শনাক্ত করা হয়। প্রায় এর শিকারও হতে বসেছিলেন এক কর্মী।
এনএসও গ্রুপ সম্প্রতি স্বীকার করে নেয়, ১০ রকমের ডিভাইস হ্যাক করতে তারা সর্বোচ্চ সাড়ে ৬ লাখ ডলার পর্যন্ত অর্থ নিয়েছে গ্রাহকদের কাছ থেকে।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৩ ঘণ্টা, সেপ্টেম্বর ০১, ২০১৮
এইচএ/