বুধবার (২৪ অক্টোবর) মিয়ানমার বিষয়ক জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান মারজুকি দারুসম্যান এক সংবাদ সম্মেলনে এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরেন। সেখানে আরও ছিলেন মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক বিশেষ দূত ইয়াং লি।
গত বছরের আগস্টে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে অভিযান শুরু করে। এতে হাজার হাজার রোহিঙ্গাকে হত্যা করা হয়, ধর্ষণ করা হয় শত শত কিশোরী-গৃহবধূকে। লাখ লাখ রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। বিভিন্ন হিসাব মতে, আশ্রিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ৭ লাখেরও বেশি। আগে থেকে আশ্রিতদের মিলিয়ে বর্তমানে এ সংখ্যা ১১ লাখেরও বেশি।
জাতিসংঘের প্রধান আন্তোনিও গুতিয়েরেস, এই অভিযানকে ‘জাতিগত নির্মূলাভিযান বিষয়ে পাঠ্যবইয়ের উদাহরণ’ বলে উল্লেখ করেন। বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থাও সেখানে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর গণহত্যা ও জাতিগত নির্মূলাভিযানের তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে। সবশেষ মিয়ানমারের বিরুদ্ধে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধের তদন্তও শুরু করে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের চাপের মুখে মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের স্বদেশে ফিরিয়ে নিতে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও জাতিসংঘের ফ্যাক্ট-ফাইন্ডিং মিশনের প্রধান বলেন, মিয়ানমার থেকে এখনো হাজারো রোহিঙ্গা দমন-পীড়নের মুখে প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিচ্ছে। এটি একটি চলমান গণহত্যা, আমরা মনে করছি সেখানে এই মুহূর্তেও গণহত্যা চলছে।
মারজুকি দারুসম্যান জানান, রাখাইন রাজ্যে গত বছরের আগস্টে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নৃশংসতম অভিযান শুরু হওয়ার পর এখনো সেখানে প্রায় ৪ লাখের মতো মানুষ ভয়-ভীতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। তাদের ওপরেও কঠোর বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। চালানো হচ্ছে দমন-পীড়ন।
ইয়াং লি বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নেতারা আশা করেছিলেন যে (মিয়ানমারের নেত্রী) অং সান সু কি’র তত্ত্বাবধানে পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটবে অতীতের অবস্থা থেকে, কিন্তু এখন যেটা দেখা যাচ্ছে- এটা অতীতের অবস্থা থেকে খুব বেশি বদলায়নি।
মিয়ানমারে জাতিসংঘের মানবাধিকার পর্যবেক্ষণ বিষয়ক বিশেষ দূত বলেন, পরিস্থিতি এমন হলে সবাইর ওপরই নিরপেক্ষভাবে ‘ন্যায্য আইন’ বাস্তবায়ন করা হবে এবং কারও দায়মুক্তির সুযোগ নেই।
নিরাপত্তা পরিষদে প্রধানমন্ত্রীর তিন দফা পুনরুল্লেখ
বাংলাদেশ সময়: ১২১১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৫, ২০১৮
এইচএ/