গত বৃহস্পতিবার (০২ মে) আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমনটাই জানিয়েছেন তিনি। আর এর মধ্য দিয়ে প্রথমবারের মতো হামলায় জড়িতদের সঙ্গে ভারতের যোগসূত্র পাওয়ার বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা এলো দেশটির শীর্ষ নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের কাছ থেকে।
সেনাপ্রধান সেনানায়েক বলেন, আমাদের কাছে তথ্য আছে, হামলাকারীরা ভারতের কাশ্মীর, ব্যাঙ্গালুরু ও কেরালায় গিয়েছিলো।
তবে তারা কেন ভারতে গিয়েছিলো? এর জবাবে তিনি বলেন, সেখানে তারা প্রশিক্ষণ অথবা বিদেশি সংগঠনগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে গিয়েছিলো।
ইস্টার সানডেতে হামলার তিনদিন পর এর দায় স্বীকার করে আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস)। যদিও শ্রীলঙ্কা সরকার এর দায় চাপিয়েছে স্থানীয় সন্ত্রাসী সংগঠন ন্যাশনাল তাওহিদ জামাতের (এনটিজে) ওপর।
হামলার পরপরই এনটিজে’কে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ঘটনায় জড়িত সন্দেহে শতাধিক মানুষ গ্রেফতার হয়েছেন।
হামলায় বিদেশি সংগঠনের হাত আছে কি না- এ বিষয়ে শ্রীলঙ্কার সেনাপ্রধান বলেন, হামলার নমুনা ও সন্দেহভাজনদের ভ্রমণের ঘটনাগুলো খেয়াল করলে বোঝা যায়, এর নেতৃত্ব বাইরে থেকে দেওয়া হয়েছে।
ভারত সতর্ক করার পরও কেন তাতে গুরুত্ব দেওয়া হলো না- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমাদের কাছে তথ্য এসেছিলো ঠিকই। কিন্তু বাস্তব পরিস্থিতি ও গোয়েন্দা তথ্যের দিক নির্দেশনার মধ্যে যে ফাঁক ছিলো- তা এখন সবাই দেখতে পাচ্ছেন।
‘সেনাপ্রধান হিসেবে আমার বিশ্বাস, হামলার ঘটনায় রাজনৈতিক আমলাতন্ত্রসহ গোয়েন্দা ও জাতীয় নিরাপত্তাবাহিনীর ব্যর্থতা দায়ী,’ যোগ করেন মহেশ সেনানায়েক।
শ্রীলঙ্কা কেন হামলার লক্ষ্য হলো- এর জবাবে তামিল টাইগারদের সঙ্গে গৃহযুদ্ধের কথা উল্লেখ করে লেফটেন্যান্ট জেনারেল সেনানায়েক বলেন, গত ১০ বছরে এখানে অনেক বেশি স্বাধীনতা ও শান্তি বিরাজ করছে। মানুষেরা ভুলে গেছে গত ৩০ বছরে কী ঘটেছে। তারা শান্তি উপভোগ করতে গিয়ে নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করছে।
তিনি বলেন, জনগণের আত্মবিশ্বাস ফিরিয়ে দিতে ও সন্ত্রাস বা জাতিগত দাঙ্গা প্রতিরোধে দেশজুড়ে সেনা মোতায়েন করা হয়েছে। সশস্ত্র বাহিনীর ওপর আস্থা রাখুন। যত দ্রুত সম্ভব স্বাভাবিক পরিস্থিতি ফিরেয়ে আনা হবে।
গত ২১ এপ্রিল খ্রিস্টান ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব ইস্টার সানডে উদযাপনকালে শ্রীলঙ্কায় তিনটি গির্জা ও তিনটি বিলাসবহুল হোটেলে আত্মঘাতী বোমা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা।
কিছুক্ষণ পর আরও দু’টি স্থানে হামলা হয়। এতে ২৫৩ জন মানুষ প্রাণ হারান; যাদের মধ্যে বাংলাদেশি এক শিশুও রয়েছে। আর আহত হয়েছেন আরও পাঁচ শতাধিক।
বাংলাদেশ সময়: ১৫২৫ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৯
একে/এমএ