ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আন্তর্জাতিক

যুদ্ধ প্রশিক্ষণে চীনের ‘রোবট রোগী’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩৬ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৯
যুদ্ধ প্রশিক্ষণে চীনের ‘রোবট রোগী’ রোবটের শারীরিক পরীক্ষা করছেন এক প্রশিক্ষণার্থী। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: যুদ্ধের ময়দানে আহতদের চিকিৎসা ও ভীতি দূর করতে সেনা সদস্যদের প্রশিক্ষণের জন্য এবার ‘রোবট রোগী’ তৈরি করেছে চীন। ‘ওয়ারিয়র’ নামে মানবসদৃশ এ রোবটের রয়েছে স্বয়ংক্রিয় হৃদস্পন্দন ও তিনশ’ ক্ষতসহ ৩০টিরও বেশি সেন্সর। এটি আহতদের মতোই কাঁদবে, চিৎকার করবে, চিকিৎসা দিলে প্রতিক্রিয়া দেখাবে সঙ্গে সঙ্গেই।   

সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে চীনা সশস্ত্র বাহিনীর সংবাদমাধ্যম পিএলএ ডেইলি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, চীনা সামরিক বাহিনীর মেডিক্যাল প্রশিক্ষণ ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন প্রক্রিয়ায় অংশ হিসেবে রোবটটি তৈরি করা হয়েছে।

যুদ্ধের ময়দানে সেনা সদস্যরা যত ধরনের আঘাত পেতে পারেন, এটি তার সব অনুকরণে সক্ষম।  

‘ওয়ারিয়রের’ রয়েছে নিজস্ব পালস ও হৃদস্পন্দন। এটি শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া, কাঁশি দেওয়া, কান্নাকাটি ও চিৎকার করতে পরে। এমনকি এর রক্তচাপও মাপতে পারবেন প্রশিক্ষণার্থীরা।

এটাই চীনে তৈরি প্রথম মেডিক্যাল প্রশিক্ষণ রোবট। এর আগে তারা বিদেশ থেকে এ ধরনের রোবট আমদানি করে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালাতো।

ফোর্থ মিলিটারি মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ঝাও ইমিনের নেতৃত্বে একটি গবেষণা দল রোবটটির নকশা করেছেন। চীনা সেনাবাহিনীর দক্ষতা বাড়াতে মেডিক্যাল প্রশিক্ষণের জন্য নতুন পাঠ্যক্রম, প্রশিক্ষণ সুবিধা ও সরঞ্জামও তৈরি করেছেন তারা।

চীনা সেনাবাহিনীর ‘বোটর রোগী’ ।  ছবি: সংগৃহীত

ঝাও ইমিন বলেন, প্রযুক্তি ও সরঞ্জামের তুলনায় সবচেয়ে বেশি ভয়ঙ্কর হলো আমাদের মনোসংযোগে পিছিয়ে থাকা।  

বেইজিংভিত্তিক সামরিক বিশেষজ্ঞ ঝাও চেনমিং বলেন, জাতিসংঘের শান্তিমিশনে দক্ষিণ সুদান ও মালিতে কয়েকজন চীনা সেনা সদস্যের মৃত্যুর আগপর্যন্ত যুদ্ধক্ষেত্রে চিকিৎসকদের প্রশিক্ষণের প্রতি দেশটির যথাযথ নজর ছিল না।

তিনি বলেন, মেডিক্যাল প্রশিক্ষণের সবদিক থেকেই চীন অনেক অনেক পিছিয়ে। বিশেষ করে, ১৯৭৯ সালে ভিয়েতনাম যুদ্ধের পর থেকে চীন শান্তিপূর্ণ থাকায় এমনটা হয়েছে।

দেশটির সাবেক এক সেনা কর্মকর্তা বলেন, ভবিষ্যতে যুদ্ধক্ষেত্রে আরও আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহৃত হবে। এ কারণে সর্বাধুনিক মেডিক্যাল সেবার প্রয়োজন হবে।

তিনি বলেন, চীনের মেডিক্যাল স্টেশন ও হাসপাতালগুলোর আরও উন্নয়ন প্রয়োজন। যদিও, ইতোমধ্যে সেনাবাহিনী এ ব্যাপারে কিছুটা এগিয়েছে।  

২০০৩ সালে ইরাক আক্রমণের প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সেনাবাহিনীর মেডিক্যাল সেবা ব্যবস্থার উন্নয়নে অত্যাধিক গুরুত্ব দেওয়া শুরু করে। ২০০৪ সালে সর্বপ্রথম স্বয়ংক্রিয় ‘রোবট রোগী’ তৈরি করে ইউনাইটেড স্টেটস আর্মি রিসার্চ ল্যাবরেটরি। পরে, চিকিৎসা প্রশিক্ষণের জন্য এর একটি সংস্করণ তারা বাণিজ্যিকভাবে বাজারজাত করা শুরু করে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, জুন ১১, ২০১৯
একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।