যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে ছুরিকাঘাতের শিকার হয়েছেন ব্রিটিশ ভারতীয় ঔপন্যাসিক সালমান রুশদি। নিউইয়র্ক থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে শতকা ইনস্টিটিউশনের মঞ্চে বক্তৃতা করতে ওঠার সময় রুশদির ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা গেছে, মঞ্চে কারও সঙ্গে পরিচয় করানো হচ্ছিল রুশদিকে। সেই সময় আচমকা তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এক ব্যক্তি। চলতে থাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাথাড়ি কোপানো। ওই সময় মঞ্চে অবস্থানকারীরা দ্রুত হামলাকারীকে ধরে ফেলেন। তার ঘাড়ে কোপ মারা হয়েছে।
এই ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গেই দর্শকদের মঞ্চ ছাড়তে বলা হয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ রুশদিকে হেলিকপ্টারে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। গ্রেফতার করা হয় হামলাকারীকেও। তাকে পুলিশ হেফাজতে রাখা হয়েছে।
র্যাবাই চার্লস স্যাভেনর নামে এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, প্রথমে আমি ভাবলাম, কী হচ্ছে এটা! কোনো স্টান্ট নাকি! তার পর যা দেখলাম, ভাবা যায় না।
ক্যাথলিন জোন্স নামে আর এক দর্শক বলেন, হামলাকারী ঝাঁপিয়ে পড়ার কয়েক মুহূর্ত পর আমাদের ভুল ভেঙেছিল।
ধারণা করা হচ্ছে, রুশদির লেখা বিতর্কিত বই ‘দ্য স্যাটানিক ভার্সেস’-এর কারণেই হামলা চালানো হয়েছে ৭৫ বছর বয়সি লেখকের ওপর। ওই বইয়ের কারণে নব্বইয়ের দশকে ইটালির মিলানেও রুশদির ওপর হামলা চালানো হয়। এমনকি, এই বইয়ের জাপানি অনুবাদক হিতোসি ইগারাসিকেও ছুরিকাঘাতে হত্যা করা হয় টোকিওর একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে।
ইরানের ইসলামী বিপ্লবের প্রধান নেতা মরহম আয়াতুল্লাহ রুহুল্লাহ খোমেনি এই বই রচনার জন্য ১৯৮৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তার বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ডের ফতোয়া জারি করেন। তবে, তার মৃত্যুর পর ইরানের সরকার সেই ডিক্রি থেকে নিজেদের দূরে সরিয়ে রেখেছে। কিন্তু ইরানসহ বিশ্বজুড়েই রুশদি-বিরোধী মনোভাব বজায় ছিল। কেউ রুশদিকে হত্যা করতে পারলে তাকে ৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি পুরস্কারের ঘোষণাও দিয়েছে ইরান। ২০১২সালে একটি আধা-সরকারি ইরানী ধর্মীয় ফাউন্ডেশন রুশদির জন্য দান ২.৮০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে বাড়িয়ে ৩.৩০ মিলিয়ন করেছে।
২০০০ সালের পর থেকে রুশদি মূলত নিউইয়র্ক সিটির ইউনিয়ন স্কয়ার এলাকায় বাস করছেন।
সূত্র: এনডিটিভি
বাংলাদেশ সময়: ০৯২৫ ঘণ্টা, ১৩ আগস্ট, ২০২২
ইআর