শ্রীলঙ্কার ইতিহাসের সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে দেশ ছেড়ে পালান সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। দেশ ছেড়ে প্রথমে মালদ্বীপ যান, পরে সেখান থেকে সিঙ্গাপুর পৌঁছান তিনি।
মঙ্গলবার (১৬ আগস্ট) এ তথ্য প্রকাশ করেন মন্ত্রি পরিষদের মুখপাত্র বন্দুলা গুনাবর্ধন। কার্যত গোতাবায়া সিঙ্গাপুর থেকে থাইল্যান্ড যেতে যে চার্টার্ড প্লেন ব্যবহার করেছেন, সেটির খরচ দিয়েছে লঙ্কান সরকার।
দেশটির অনলাইন সংবাদমাধ্যম ডেইল মিরর এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরে। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, গোতাবায়ার এক দেশ থেকে আরেক দেশে যেতে সরকারই অর্থায়ন করেছে, এ তথ্যটি কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন বন্দুলা গুনাবর্ধন।
বন্দুলা বলেন, গত সপ্তাহে একটি চার্টার্ড ফ্লাইটে সিঙ্গাপুর থেকে থাইল্যান্ডে যান সাবেক প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে। এ সফরের জন্য শ্রীলঙ্কা সরকার একটি বিল দিয়েছে।
মন্ত্রিসভার বৈঠক পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এ মুখপাত্র আরও বলেন, সরকার বিল পরিশোধ করেছে, কারণ এটি সরকারেরই দায়িত্ব।
তিনি আরও বলেন, যে সকল প্রেসিডেন্ট অবসর নিয়েছেন বা যারা মারা গেছেন, তাদের পরিবারের সদস্য বা স্ত্রীরা সাধারণ ও বিশেষ কিছু সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। প্রেসিডেন্ট এনটাইটেলমেন্ট অ্যাক্ট নম্বর ৪ ১৯৮৬ এর আওতায় তাদের ভাতা দেওয়া হয়। গোতাবায়াও এ ভাতা পাওয়ার যোগ্য। তাই সরকারও তার সফরের বিল পরিশোধে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
গোতাবায়ার আগে যারা লঙ্কান প্রেসিডেন্ট ছিলেন তারাও এ সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন বলেও জানান বন্দুরা। তিনি বলেন, এ আইনের আওতায় সাবেক প্রেসিডেন্ট মাইথ্রিপালা সিরিসেনা, চন্দ্রিকা কুমারাতুঙ্গা ও শ্রীমতি হেমা প্রেমাদাসা সুবিধা ভোগ করছেন। তাদের বাসস্থান, ভাতা ও অন্যান্য সুবিধা দেওয়া হয়েছে।
গোতাবায়ার দেশে ফেরার খবর চাউর হয়েছিল সম্প্রতি। তবে, কবে তিনি ফিরবেন, সে ব্যাপারে কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। তিনি যদি দেশে ফেরেন; সরকার কি তাকে সহায়তা দেবে? এমন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রিসভার মুখপাত্র বলেন, তিনি যদি দেশে ফিরে আসেন, সরকারকে অবশ্যই তার প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে হবে। একজন সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য তার সবকিছুই পাবেন।
পদত্যাগের দাবিতে দেশজুড়ে বিক্ষোভের মুখে গত ১২ জুলাই দেশ ছেড়ে পালান এক সময়কার লঙ্কা বীর গোতাবায়া। এদিন দিবাগত রাতে একটি সামরিক বিমানে তিনি প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপে চলে যান। স্ত্রী-দেহরক্ষীসহ চারজনকে নিয়ে বন্দরনায়েক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মালদ্বীপের উদ্দেশে রওনা দেন তিনি। সামরিক বাহিনীর পরিবহন বিমান অ্যান্তোনভ–৩২ এ করে দেশ ছাড়েন তারা।
অবশ্য, এ দিনের আগেও একাধিকবার দেশ ছাড়ার পরিকল্পনা করেন তিনি। কিন্তু নৌবাহিনীর টহল নৌযান ব্যবহার করে তার পরিকল্পনা ভেস্তে দেয় দেশটির সাধারণ নাগরিক।
বাংলাদেশ সময় : ১৭৫৩ ঘণ্টা, আগস্ট ১৬, ২০২২
এমজে