ঢাকা, বুধবার, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ২৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

ইচ্ছেঘুড়ি

ধারাবাহিক গল্প (শেষ পর্ব)

ভৌতিক পাণ্ডুলিপি | শোয়েব হাসান

গল্প/ইচ্ছেঘুড়ি | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬০৬ ঘণ্টা, মার্চ ৪, ২০১৬
ভৌতিক পাণ্ডুলিপি | শোয়েব হাসান

[শেষ পর্ব]
সেদিন নরেন্দ্র রায় বলেছিলেন তিনি নাকি একটা পাণ্ডুলিপি লেখা প্রায় শেষ করেছেন। কিন্তু রাতে কোনো পাণ্ডুলিপি খুঁজে পায়নি সে।

এখন মোটামুটি নিশ্চিত এতোদিন যা যা হয়েছে সবই হ্যালুসিনেশন। সাময়িক এটা হতে পারে। অত্যধিক ভৌতিক গল্প পড়ার দরুন এ সমস্যা হয়েছে তার।

কিন্তু সেদিনের পর থেকে হঠাৎ করেই তার লেখালেখি করার ইচ্ছা পেয়ে বসে। ইতোমধ্যে একটা পাণ্ডুলিপি তৈরিও করে ফেলেছে। কয়েকটা প্রকাশকের কাছে জমাও দিয়েছিল। তাদের মধ্যে একটা নাম করা প্রকাশনী বইটা ছাপার আগ্রহও প্রকাশ করেছে। আজ ফাইনাল করে এসেছে।

ঘড়ির দিকে তাকায়। দুপুর বারোটা। কিছু বই কেনার দরকার। এখন সে নীলক্ষেত যাবে বই কিনতে। সেদিন বইটা পুড়িয়ে ফেলার পর থেকে আর কোনো সমস্যা হয়নি। হাফ ছেড়ে বেঁচেছে সে। আজ সেই পুরনো বইয়ের দোকানেই এসেছে। কি অদ্ভুত! প্রেত বইটার আর এক কপি দেখতে পায়। পুড়িয়ে ফেলা পুরনো বইটি কেনার সময় যে জায়গায় ছিল, সেই আগের জায়গায়ই আছে। পুরাতন বই হলে কি হবে, একাধিক কপি থাকাটাও বিচিত্র না। প্রায় সত্তর-আশি বছর আগের আরেকটা বইয়ের দুই কপি থাকাটা রহস্যজনক, প্রায় অসম্ভবও বলা চলে। অনিন্দ্যকে দেখে দোকানি। মুচকি হাসি দিয়ে ডাকে।

- ভাই কি বই লাগবে?
- আচ্ছা ভাই ওই বইটা আপনার কাছে কত কপি আছে। হাত দিয়ে ইশারা করে সে।
- ভাই পুরনো বইতো, দুই কপিই ছিল। একটা তো সেদিন আপনি নিয়ে গেলেন, আর এক কপি আছে।
স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়ে অনিন্দ্য। বইটা হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করে দেখে। এর এক কপি বই তাকে কি ভোগান্তিই না ভুগিয়েছে। অতীতের কথা মনে করে হাসি পায়। কিন্তু তার হাসি বন্ধ হয়ে যায় বইয়ের এক পাতায় এসে। তার একটা স্বভাব বই কিনেই নিজের নাম আর সংগ্রহের তারিখ লিখে রাখা। এই বইটাতেও তার নাম লেখা আছে। পুড়িয়ে ফেলা বইটাতে যেভাবে লিখেছিল হুবহু একই ভাবে।

কীভাবে সম্ভব। ভালো করে চেক করে। না তারই তো হাতের লেখা। সে একটার পর একটা পৃষ্ঠা উল্টায়। একদম শেষ পাতায় লেখা দেখে তার ঘাম ঝরতে শুরু করে। সেখানে ছোট করে একটা টিকা লেখা। সম্ভবত প্রকাশনী লিখেছে। এই বইয়ের পিশাচ নামে দ্বিতীয় একটা খণ্ড আছে। কিন্তু সেটা কমপ্লিট না করেই লেখক মারা যান।
অনিন্দ্য আজ যেই পাণ্ডুলিপি জমা দিয়ে এসেছে সেটার নামও তো পিশাচ। নরেন্দ্র রায়ের কথা মনে পড়ে তার। তিনি বলেছিলেন মারা যাওয়ার পরেও লিখে যাচ্ছেন ... তাহলে কি অনিন্দ্যকে দিয়েই বেনামে তার বই প্রকাশ করিয়েছে। ভয়ে গা শির শির করছে। কোনো উত্তর খুঁজে পায় না সে...। থাক না পেলে নাই। কিছু প্রশ্নের উত্তর না জানাই ভালো!


বাংলাদেশ সময়: ১৬১১ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৬
এএ


** কিশোর গল্প (পর্ব-২):ভৌতিক পাণ্ডুলিপি | শোয়েব হাসান
** কিশোর গল্প (পর্ব-১):ভৌতিক পাণ্ডুলিপি | শোয়েব হাসান

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।