ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

আইন ও আদালত

জমি কেনার আগে কিছু করণীয়

মানবাধিকার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫২৭ ঘণ্টা, মার্চ ২১, ২০১৪
জমি কেনার আগে কিছু করণীয়

জমি নিয়ে বিরোধ ও প্রতারণা যেনো সাধারণ নিয়মে পরিণত হয়েছে। জমির দাম নির্ধারণ থেকে শুরু করে বায়না ও জমি হস্তান্তর প্রত্যেকটি প্রক্রিয়ার সাথেই ওতোপ্রোতোভাবে জড়িয়ে আছে প্রতারণা।



কেবল আইন দিয়ে এর নিবারণ সম্ভব নয়। ক্রেতা ও বিক্রেতা ও সেই সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত সচেতনতার মাধ্যমেই এর থেকে মুক্তি সম্ভব।

অনেক ক্ষেত্রে জমির মালিকরা প্রথমে একজনের সাথে জমি বিক্রয়ের বায়না করে আর পরে প্রতারণার আশ্রয় গ্রহণ করে বেশি দামে অপর একজনের কাছে বায়নাকরা জমি বিক্রি করে অধিকা লাভবান হয়। একই জমি নিয়ে বহু ক্রেতার কাছে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ও সেই অনুযায়ী টাকাও নেওয়া হয়। এভাবেই প্রতারণা করা হয় নিরীহ ক্রেতাদের সাথে।
 
এ ধরনের প্রতারণা রোধ করার জন্য সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে ৫৩খ ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে। এ বিধান অনুযায়ী ১ জুলাই ২০০৫ থেকে স্থাবর সম্পত্তি (Immovable Property) বিক্রির উদ্দেশ্যে কোনো বায়না করা হলে বায়না বহাল থাকাকালে ওই জমি অন্য কোনো ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা যাবে না। যদি বিক্রি করা হয় তাহলে ওই বিক্রি বাতিল বলে গণ্য হবে।

আবার স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে দাতার নামে খতিয়ান থাকার কোনো আইনগত বাধ্যবাধকতা নেই। এক্ষেত্রে প্রতারণা করার সুযোগ হয়।

এ সমস্যার সমাধানের জন্য স্থাবর সম্পত্তি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে উক্ত খতিয়ান দলিলদাতার নামে থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ জন্য নতুন বিধান (ধারা ৫৩গ) সংযোজন করে সম্পত্তি হস্তান্তর আইনে এর প্রয়োজনীয় সংশোধন করা হয়েছে।

অনেক ক্ষেত্রে জমি বন্ধক রেখে পরবর্তীতে প্রতারণামূলকভাবে উক্ত জমি আরেকজনের কাছে পুন:বন্ধক বা বিক্রি করা হয়। এতে বন্ধকদাতা লাভবান হয় এবং বন্ধকগ্রহীতা প্রতারণার স্বীকার হয়।

এসব প্রতিরোধ করার জন্য আইনে ৫৩ধ সংযোজন করা হয়। এ ধারা অনুযায়ী স্থাবর সম্পত্তি বন্ধক দেওয়া হলে উক্ত সম্পত্তি বন্ধক গ্রহীতার সম্মতি ছাড়া অপর কোনো ব্যক্তির কাছে বিক্রি করা অথবা বন্ধক দেওয়া যাবে না।

যদি বন্ধক দেওয়া বা বিক্রি করা হয়, তবে উক্ত বিক্রি বা বন্ধক বাতিল বলে গণ্য হবে।

স্থাবর সম্পত্তি বিক্রয়, বন্ধক ও দানপত্র দলিলের সাথে স্বত্ত্ব সংক্রান্ত তথ্য নিশ্চিতকরণের জন্য কোনো এফিডেভিট যুক্ত করার বাধ্যবাধকতা না থাকায় স্বত্ত্ব বিক্রিতে জটিলতার সৃষ্টি হয়।

এ জটিলতা নিরসণের জন্য আইনে ৫৩ঙ অনুচ্ছেদ সন্নিবেশিত হয়েছে। এ বিধানানুযায়ী প্রত্যেক বিক্রয়, বন্ধক ও হেবা দলিলের সাথে দলিলদাতার স্বত্ত্ব সংক্রান্ত এফিডেভিট সংযুক্ত করা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

কাজেই, এ বিধানগুলো মেনে চললে ও জমি ক্রয় বা বিক্রয়ের ক্ষেত্রে সচেতনতা অবলম্বন করলে প্রতারণার থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব।  

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad