ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

আইন ও আদালত

ভরণ-পোষণের অধিকার

মানবাধিকার ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ৮, ২০১৪
ভরণ-পোষণের অধিকার ছবি: প্রতীকী

সাধারণত ভরণ-পোষণ বলতে বোঝায় খাদ্য, বস্ত্র ও বাসস্থানের ব্যবস্থা বা সংস্থানকে। পারিবারিক বিরোধ নিয়ে যতো মামলা হয় তার একটি বড় অংশই হচ্ছে ভরণ-পোষণ সংক্রান্ত্র মামলা।

আমাদের দেশে প্রধানত বিয়ে ভেঙ্গে গেলেই আদালতের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর ভরণ-পোষণ বিষয়টির সুরাহা হয়।

এর আগে স্বামী বা স্ত্রী কারোই ভরণ-পোষণের আইন বা অধিকার নিয়ে তেমন কোনো ধারণাই থাকেনা বললেই চলে। আইন ও অধিকার সম্পর্কে অজ্ঞতাই মূলত এর জন্য দায়ী।

ভরণ-পোষণ বিষয়টি আর্থিক মূল্যের সাথে সম্পর্কিত নয়। এটি একটি ন্যায়বিচার ভিত্তিক দায়িত্ব যা স্ত্রী বা ছেলেমেয়ের এমনকি বর্তমানে বাবা-মারও অধিকার।
তাই আইনে ভরণ-পোষণের আর্থিক পরিমাণ বলা নাই। কিন্তু আইনে বিষয়টির সুষ্পষ্ট ধারণা আছে।

সাধারণত স্বামী-স্ত্রীর পারিবারিক, সামাজিক ও আার্থিক অবস্থা বিবেচনা করে ভরণ-পোষণের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। আমাদের দেশে সব ধর্মানুসারিদের ভরণ-পোষণ সংক্রান্ত বিষয়গুলা তাদের নিজ নিজ পারিবারিক আইন ও প্রথা অনুযায়ী পরিচালিত হয়। তবে সব ধর্মেই সাধারণত একজন স্বামী তার স্ত্রীর ভরণ-পোষণ দিতে আইনত বাধ্য। ছেলে-মেয়ে বা বাবা-মার ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য।

তবে, স্বামীর এ বাধ্যবাধকতা ততক্ষণ পর্যন্তই বিদ্যমান থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত একজন স্ত্রী এ অধিকার পাওয়ার জন্য যে শর্ত আছে তা পালন করে। স্বামীর আর্থিক অবস্থার জন্য স্ত্রী তার অধিকার থেকে কখনোই বঞ্চিত হবে না। তার ভরণ-পোষণের পরিমাণ কমবেশি হতে পারে। কিন্তু কখনো তিনি অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না।

তবে, স্ত্রীকে অবশ্যই স্বামীর সঙ্গে বা স্বামীর তত্তাবধানে থাকতে হবে। তবে, সঙ্গে থাকা বা তত্ত্বাবধানে থাকারও কিছু শর্ত আছে। এ ক্ষেত্রে আলাদাভাবে বসবাস করলেও স্ত্রী ভরণপোষণ পাবে। যেমন, স্বামী যদি অভ্যাসগতভাবে খারাপ আচরণ করে থাকে, যদি স্বামী তাৎক্ষণিক দেনমোহর পরিশোধ না করে, বা নিষ্ঠুর আচরণ করলে বা দীর্ঘকাল স্ত্রীর কাছ থেকে দূরে থাকলে ইত্যাদি।

এছাড়া অনুমতি ছাড়া যদি স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করে তাহলে স্ত্রী কাছে না থাকলেও তার ভরণপোষণ অধিকার হারাবে না।

এরকম আরো কিছু শর্ত রয়েছে যেগুলো স্বামী ও স্ত্রী সবারই পালনীয়। আইনে আছে, স্বামীর মৃতকালে ইদ্দত পালনকালে বিধবা ভরণ-পোষণ পাবেন না, তবে স্ত্রী যদি অনত্মঃসত্ত্বা হন সে সন্ত্রান জন্ম নেয়া পর্যন্ত তিনি ভরণ-পোষণ পাবেন।

এছাড়া স্ত্রী যদি ব্যাভিচারী হন তবে তিনি ভরণ-পোষণ অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন। স্বামীর জীবদ্দশায় ভরণপোষণ পাওয়া স্ত্রীর অধিকার। স্বামী এ অধিকার প্রদান না করলে তা দেওয়ানি ও ফৌদজারি অপরাধ। স্ত্রী ছাড়াও সন্ত্রান ও বাবা-মাও ভরণপোষণের অধিকারী।

কোনো স্ত্রী যদি তার ভরণপোষণ না পায় তবে তিনি ১৯৮৫ সালের পারিবারিক আদালত অধ্যাদেশ অনুযায়ী মামলা করতে পার। আমাদের ফৌজদারি আইন বা (সিআরপিসি) অনুযায়ীও আদালতের মাধ্যমে স্ত্রী তার অধিকার আদায় করতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২১ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৮, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।