ঢাকা: গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে (পার্ট-২) তার ফাঁসি কার্যকর চেয়েছেন মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াত নেতা মীর কাসেম আলী। দীর্ঘদিন ধরে এ কারাগারের কনডেম সেলে বন্দি রয়েছেন তিনি।
কারা সূত্র জানায়, সম্প্রতি কারাগারে দেখা করতে গেলে স্ত্রী খন্দকার আয়শা খাতুনসহ পরিবারের অন্য সদস্যদের এ কথা বলেন মীর কাসেম। রায়ের পর থেকে প্রতিমাসে একবার তার সঙ্গে দেখা করতে যান মীর কাসেমের পরিবারের সদস্যরা।
বাবার সঙ্গে সাক্ষাত শেষে তার ছোট ছেলে মীর আহমদ বিন কাসেম সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আপিলেও যদি মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল থাকে, তাহলে বাবা জেল কর্তৃপক্ষের কাছে অনুরোধ করেছেন, যেন তা কাশিমপুর কারাগারেই দেওয়া হয়’।
রায় পুনর্বিবেচনা চেয়ে মীর কাসেমের করা রিভিউ আবেদন খারিজ করে মঙ্গলবার (৩০ আগস্ট) সকালে ফাঁসির দণ্ড বহাল রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
পরে রাতে ট্রাইব্যুনাল থেকে রায়ের কপি ও ফাঁসি কার্যকরের অবহিতপত্র কেরানিগঞ্জের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়।
কারাগারের সিনিয়র জেল সুপার জাহাঙ্গীর কবির ও জেলার নেসার আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘রাত নয়টা ৫ মিনিটে কাগজপত্র গ্রহণ করেছি। গাজীপুরের কাশিমপুর কেন্দ্রীয় কারাগার-২ এ সেগুলো পাঠানো হবে’।
মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানি বাহিনীর সহযোগী কিলিং স্কোয়াড আলবদর বাহিনীর তৃতীয় শীর্ষ নেতা মীর কাসেমকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে রায় কার্যকরের বিষয়টি এখন চূড়ান্ত ধাপে রয়েছে। এখন কেবল অপরাধ স্বীকার করে সংবাবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চাইতে পারবেন ডালিম হোটেলের জল্লাদ মীর কাসেম।
রাষ্ট্রপতির ক্ষমার বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়ে গেলে কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে এ রায় বাস্তবায়ন করবে সরকার। এর আগে তাকে সুযোগ দেওয়া হবে স্বজনদের সঙ্গে দেখা করারও।
সূত্র জানায়, মীর কাসেমের ফাঁসি কোন কারাগারে কার্যকর করা হবে তা এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কেরানিগঞ্জে অবস্থিত ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ফাঁসির মঞ্চ ধোয়া-মোছা করা হয়েছে। তবে সেখানেই ফাঁসি কার্যকর হচ্ছে কি-না তা নিশ্চিত করতে পারেনি সূত্রটি।
ফাঁসির মঞ্চ প্রস্তুত রয়েছে কাশেমপুর কারাগার পার্ট-২ তেও। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারাগারের এক কর্মকর্তা বলেন, ২০১২ সালে গ্রেফতারের পর মীর কাসেমকে এখানে আনা হয়। ২০১৪ সালের নভেম্বরে ট্রাইব্যুনালের ফাঁসির রায় হওয়ার পর তাকে নেওয়া হয় এ কারাগারের কনডেম সেলে।
এরপর থেকে সেখানেই আছেন তিনি। এখানকার ফাঁসির মঞ্চেও আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। তাই এটিও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
‘তবে এখানে যে ফাঁসি কার্যকর হবে, সে বিষয়ে আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি’- বলেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ২১৪৭ ঘণ্টা, আগস্ট ৩০, ২০১৬
এজেডএস/এমএ/এএসআর