বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেতে হলে সাতটি বিষয় থাকার কথা উল্লেখ করেন।
সাতটি পর্যবেক্ষণের মধ্যে রয়েছে- রাষ্ট্র পরিচালনার চার মূলনীতির প্রতি আনুগত্য এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবোধ সম্পন্ন বাংলাদেশি নাগরিক হতে হবে।
এছাড়া পেশাগত জীবনে একজন ব্যক্তির অর্জিত দক্ষতা ও পারদর্শিতাকে প্রথমত বিবেচনায় নেওয়া উচিত। ভারতের আইন কমিশনের ৮০তম প্রতিবেদনের সুপারিশ অনুসারে একজন বিচারকের পরিপক্কতা পেশাগত অভিজ্ঞতার ক্ষেত্রে একটি বয়সসীমা ধরা হয়েছে। সে হিসেবে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক মনোনয়নের ক্ষেত্রে সর্বনিম্ন ৪৫ বছর হওয়া উচিত বলেও পর্যবেক্ষণে বলেছেন হাইকোর্ট।
পর্যবেক্ষণে বলা হয়, প্রধান বিচারপতি আপিল বিভাগের নিবন্ধিত আইনজীবীদের অগ্রাধিকার ও সুপারিশ ভিত্তিতে উচ্চ আদালতে বিচারক হিসেবে নিয়োগ দিতে পারবেন। তবে হাইকোর্ট বিভাগের বৃহৎ পরিসরে সততা ও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে, এমন নিবন্ধিত আইনজীবীর ক্ষেত্রে বিবেচনা করা যেতে পারে।
বিচারক হিসেবে নিয়োগ পেতে অযোগ্যতা হিসেবে বলা হয়- অধস্তন আদালতে কর্মরত বিচারকদের ক্ষেত্রে জেলা জজ হিসেবে তিন বছর অভিজ্ঞতা সম্পন্নরা বিবেচিত হবেন না। অধনস্তন আদালত থেকে নিয়োগের ক্ষেত্রে প্রধান যোগ্যতা হওয়া উচিত মেধা ও সততা। তবে মনে রাখা উচিত যে, একজন উচ্চ মেধাসম্পন্ন ব্যক্তি সৎ নাও হতে পারেন। সেক্ষেত্রে তাকে যেকোনো প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ দেওয়া হলে তা হবে এক ধরনের বিশ্বাসঘাতকতা।
বিচারক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ব্যক্তি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা আনতে সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা প্রণয়নের নির্দেশনা চেয়ে ২০১০ সালের ৩০ মে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী রাগীব রউফ চৌধুরী এ রিট দায়ের করেন। রিটের শুনানি নিয়ে ২০১০ সালের ০৬ জুন বিচারপতি মো. ইমান আলী ও বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের হাইকোর্ট বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্টে বিচারক নিয়োগে বাছাই প্রক্রিয়ায় ‘স্বচ্ছতা ও প্রতিযোগিতা’ আনতে কেন সুনির্দিষ্ট দিক-নির্দেশনা তৈরি করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন।
গত ১৩ এপ্রিল পর্যবেক্ষণসহ রুলের নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন বিচারপতি ওবায়দুল হাসান ও বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
সোমবার (২২ মে) ৪৬ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়।
বাংলাদেশ সময়: ২১১৫ ঘণ্টা, মে ২২,২০১৭
ইএস/এএসআর