বিচার বিভাগের ভাবমূর্তি রক্ষায় রোববার (০৮ অক্টোবর) থেকে বৃহস্পতিবার (১২ অক্টোবর) সারাদেশের আইনজীবী সমিতিতে মানববন্ধন ও মিছিলের কর্মসূচি পালন করতে আইনজীবীদের প্রতি আহবান জানিয়েছেন তিনি।
শনিবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে সমিতির মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি ও কর্মসূচির ঘোষণা দেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির কার্যনির্বাহী কমিটির শুধুমাত্র বিএনপিপন্থী নেতারা এতে উপস্থিত ছিলেন। সংবাদ সম্মেলন পরিচালনা করেন আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ব্যরিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
আইনজীবী সমিতির সদস্যরা প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেলেও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর বাধায় পারেননি বলে অভিযোগ করেন জয়নুল আবেদীন।
তিনি বলেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট থেকে সভাপতি-সম্পাদকসহ আমরা কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা শুক্রবার (০৬ অক্টোবর) বিকেল পাঁচটার দিকে প্রধান বিচারপতির বাসার দিকে রওনা দেই। কিন্তু বাংলাদেশ বার কাউন্সিল ভবনের সামনের ট্রাফিক লাইটে পুলিশ আমাদের গাড়িবহর আটকে দেয়। পোশাক ও সাদা পোশাকধারী আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ৩০ থেকে ৩৫ জন আমার গাড়ি ঘিরে ফেলেন। তখন অবশ্য আমি অন্য একটি গাড়িতে ছিলাম। তারা জানতে চান, বারের সভাপতি কোথায়?’
‘সভাপতির গাড়িতে থাকা আমাদের সমিতির সদস্যদের নামিয়ে দিয়ে পুলিশ প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করলে আমরা ফিরে আসতে বাধ্য হই’।
জয়নুল আবেদীন বলেন, ‘গত দু’দিনে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আইনমন্ত্রী, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টাসহ সরকারি বিভিন্ন কর্মকর্তারা সাক্ষাৎ করেন। কিন্তু আমাদের সাক্ষাৎ করতে বাধা দেওয়া হয়। এতেই প্রমাণিত হয়, প্রধান বিচারপতি স্বেচ্ছায় ছুটিতে যাননি, তাকে বলপ্রয়োগে ছুটিতে পাঠানো হয়েছে। তারা প্রধান বিচারপতিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রেখেছেন, তিনি অন্তরীণ। একমাত্র সরকার নির্দেশিত ব্যক্তিরাই প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন, অন্যরা নন’।
তিনি বলেছেন, ‘প্রধান বিচারপতি লক্ষীপূজা দিতে ঢাকেশ্বরী মন্দিরে গেছেন। অস্ট্রেলিয়ান হাইকমিশনে গেছেন। আমরা আগে থেকে বলছি, তিনি অসুস্থ নন। এখন এসব বিষয়ে পরিষ্কার করতে প্রধান বিচারপতির স্টেটমেন্ট (বিবৃতি) দাবি করছি’।
তিনি আরও বলেন, ‘আইনমন্ত্রী প্রধান বিচারপতির ছুটির যে কথিত চিঠি প্রকাশ করেছেন, সেটিতে ৫টি জায়গায় বানান ভুল রয়েছে। দেশের বিভিন্ন মহল থেকে এ চিঠি নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছে যে, প্রধান বিচারপতির মতো একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি কিভাবে ৫টি বানান ভুল থাকা চিঠিতে স্বাক্ষর করতে পারেন?’
তার অভিযোগ, ‘সংবিধানের ৯৪ অনুচ্ছেদে স্বাধীন বিচার ব্যবস্থার কথা আছে। কিন্তু আজ এই স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রধান কর্তা ব্যক্তি প্রধান বিচারপতি নিজেই স্বাধীন নন। তিনি পরাধীন, তাকে সরকার বলপ্রয়োগ করে ছুটিতে পাঠিয়েছে। যা বিচার বিভাগের সঙ্গে সরকারের প্রতারণা বলে আমরা আইনজীবী সমিতি মনে করি’।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২০ ঘণ্টা, অক্টোবর ০৭, ২০১৭
ইএস/এএসআর