আগামী ২৯ অক্টোবর এ আবেদনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন হাইকোর্ট।
এ বিষয়ে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর রোববার (২২ অক্টোবর) ওই আবেদন জানানো হয় বিচারপতি বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চে।
আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তাপস কুমার বিশ্বাস।
পরে মনজিল মোরসেদ বলেন, ‘একই হাইকোর্ট বেঞ্চের নির্দেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে দাখিল করা প্রতিবেদনে তুরাগ নদে ৩০টি অবৈধ স্থাপনার মাধ্যমে দখলে রাখার কথা বলা হয়েছে। রোববার প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। এরপর আমরা এসব অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদে আবেদন জানিয়েছি। এ বিষয়ে শুনানির দিন আগামী ২৯ অক্টোবর ধার্য করেছেন হাইকোর্ট’।
‘টাইম টু ডিক্লেয়ার তুরাগ ডেড’ শিরোনামে গত বছরের ০৬ নভেম্বর ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনের সূত্র ধরে হিউম্যান রাইটস পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট আবেদনটি করা হয়। ০৯ নভেম্বর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তুরাগ নদে মাটি ভরাট ও অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ বন্ধে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। এছাড়াও আদালতের আদেশ বাস্তবায়ন করে সংশ্লিষ্টদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।
হাইকোর্টের নির্দেশে অনুসারে বিআইডব্লিউটিএ উচ্ছেদ কার্যক্রমের বিষয়ে ছবিসহ একটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। যেখানে ওই এলাকা থেকে ৯টি অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করার কথা উল্লেখ করা হয়। কিন্ত ছবিতে দেখা যায় দখল করা অনেক স্থাপনা আছে, যা নদীর তীরে জমিতে বিদ্যমান।
এ বিষয়ে তদন্তের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ০৫ জানুয়ারি গাজীপুরের তুরাগ নদের টঙ্গী কামারপাড়া ব্রিজের দু’পাশে অবৈধ স্থাপনা অপসারণ হয়েছে কি-না এবং আর কোনো স্থাপনা আছে কি-না- সে বিষয়ে বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ উল্লাহ’র হাইকোর্ট বেঞ্চ। তদন্ত করে গাজীপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে এ বিষয়ে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।
হাইকোর্টের ওই আদেশে বিচার বিভাগীয় তদন্ত শেষে গত ১৫ অক্টোবর প্রতিবেদন দাখিল করেন গাজীপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ আসসামছ জগলুল হোসেন।
১০৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে ১৯৭টি অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে কোন কোন প্রতিষ্ঠান, সংস্থা, সংগঠন ও ব্যক্তি সীমানা পিলারের ভেতরে প্রবেশ করে কি পরিমাণ নদী অবৈধভাবে দখল করেছে- তা তুলে ধরা হয়েছে। এতে ৩০ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের দখলের কথা উল্লেখ করা হয়েছে
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘দখল ও দূষণ দুই’ই তুরাগ নদীকে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বর্ষায় কিছুটা পানি পেয়ে তুরাগ প্রাণে বেঁচে ওঠার চেষ্টা করলেও শুষ্ক মৌসুমে সে মরা পুঁতিগন্ধময় এক নর্দমায় পরিণত হয়। তাই তুরাগ নদী ও এর তীরের জনপদকে বাঁচাতে হলে দখল ও দূষণের করালগ্রাস থেকে এ নদীকে রক্ষা করতে হবে’।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪৫ ঘণ্টা, অক্টোবর ২২, ২০১৭
ইএস/এএসআর