ঢাকা, শনিবার, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ২১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

রাগিব আলী ও তার ছেলে কারামুক্ত

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯২২ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৯, ২০১৭
রাগিব আলী ও তার ছেলে কারামুক্ত কারামুক্তির পর রাগিব আলীকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তি পেয়েছেন আত্মসাত মামলায় দণ্ডিত রাগিব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাই।

দীর্ঘ ১১ মাস কারাভোগের পর উচ্চ আদালত থেকে সব ক’টি মামলায় জামিন পাওয়ায় রোববার (২৯ অক্টোবর) বেলা সোয়া ১টায় তাদের মুক্তি দেওয়া হয়।

সিলেটের সিনিয়র জেলার মো. আব্দুল জলিল বাংলানিউজকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

এদিন কারা ফটকে রাগিব আলীর মালিকানাধীন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা ও কর্মচারিরা ফুলেল শুভেচ্ছা জানানোর পর তাকে মালনীছড়াস্থ বাংলোতে নিয়ে যাওয়া হয় বলে জানান তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট আব্দুল মুকিত ওপি।

গত বৃহস্পতিবার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আব্দুল ওয়াহাব মিঞার নেতৃত্বাধীন সুপ্রীম কোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চে তারাপুর চা বাগানের ভূমি বন্দোবস্তের নামে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি মামলায় ছেলেসহ রাগিব আলীর জামিন হয়।

এছাড়া, প্রতারণার মাধ্যমে তারাপুর চা বাগানের দেবোত্তর সম্পত্তিতে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ করে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাত এবং প্রতারণা করে স্থানীয় দৈনিক সিলেটের ডাক প্রকাশনা মামলায় উচ্চ আদালতে জামিন লাভ করেন তারা।

তিনটি মামলায় জামিন লাভের পর তার কারামুক্তিতে কোন বাধা ছিল না বলে জানান উচ্চ আদালতে রাগিব আলীর আইনজীবী ব্যারিস্টার আব্দুল হালিম কাফি।

১৯৯৯ সালের ২৫ আগস্ট ভূমি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত তৎকালীন সংসদীয় স্থায়ী কমিটি দেবোত্তর সম্পত্তি তারাপুর চা-বাগান অবৈধ দখল, বিধি-বহির্ভূতভাবে স্থাপনা নির্মাণের প্রমাণ পায়। পরবর্তীতে সংসদীয় উপকমিটি চা-বাগানে অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করে।

সুপারিশের প্রেক্ষিতে ২০০৫ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর সিলেট সদর উপজেলার তৎকালীন সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস এম আবদুল হাই বাদী হয়ে সিলেট কোতোয়ালী থানায় দুটো মামলা করেন । মামলা দুটির কার্যক্রম স্থগিত করেন উচ্চ আদালত।

দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৬ সালে ১৯ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ তারাপুর চা-বাগান পুনরুদ্ধারের রায় ও মামলা দুটি সক্রিয় করার নির্দেশনাও দেন।

নির্দেশনার বিষয়ে গত ১৬ মার্চ মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতকে অবহিত করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত এপ্রিল মাসে উচ্চ আদালতের নির্দেশে মামলা দু’টির তদন্ত শুরু করে পিবিআই। গত বছরের ১০ জুলাই তারাপুর চা বাগান লিজের ক্ষেত্রে স্বাক্ষর জালিয়াতির মামলাটির অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে রাগীব আলী ও তার ছেলে আবদুল হাইকে অভিযুক্ত করা হয়।

এরপর গত ১০ আগস্ট আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হলে রাগীব আলীসহ আসামিরা দেশ ত্যাগ করেন। ২৪ নভেম্বর দেশে ফেরার পথে গ্রেফতার হন রাগীব আলী। ওই দিনই আদালত তাকে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন।

এছাড়া, ১২ নভেম্বর ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে রাগীব আলীর ছেলে আব্দুল হাইকে গ্রেফতার করে জকিগঞ্জ ইমিগ্রেশন পুলিশ।

২ ফেব্রুয়ারি তারাপুর চা বাগানের ভূমি বন্দোবস্তের নামে ভূমি মন্ত্রণালয়ের স্মারক জালিয়াতি মামলার রায় হয় অত্র আদালতে। রায়ে রাগিব আলী ও তার ছেলের ১৪ বছরের দণ্ডাদেশ দেওয়া হয়।

এছাড়া মামলায় আদালত থেকে গ্রেফতারি পরোয়ানা ইস্যুর পর পলাতক থাকাবস্থায় পত্রিকা প্রকাশের কারণে রাগিব আলী ও তার ছেলের বিরুদ্ধে দায়ের করা অপর একটি মামলার রায়ে রাগিব আলী ও তার ছেলেকে এক বছর করে কারাদণ্ড দেন মহানগর মুখ্য হাকিম আদালত। বর্তমানে এসব মামলায় কারাগারে ছিলেন রাগিব আলী ও তার ছেলে আব্দুল হাই।

বাংলাদেশ সময়: ১৫১২ ঘণ্টা, এপ্রিল ৫, ২০১৭
এনইউ/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।