ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

আসেনি আসামি, আটকে গেল কিবরিয়া হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৪ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯
আসেনি আসামি, আটকে গেল কিবরিয়া হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ কিবরিয়া হত্যা মামলায় বৃহস্পতিবার সাবেক স্বরাষ্ট্র পতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরকে হাজির করা হয়। ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: এবার এক আসামি আদালতে হাজির না হওয়াতে আটকে গেল বহুল আলোচিত সাবেক অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। বৃহস্পতিবার (০৭ ফেব্রুয়ারি) সিলেট দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য ছিল।   

এদিন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক  মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকে গউছসহ সব আসামিকে হাজির করা হলেও অনুপস্থিত ছিলেন এক আসামি মাওলানা শেখ আবদুস সালাম। এ কারণে বৃহস্পতিবার সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।

ট্র্যাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর বাংলানিউজকে বলেন, ২০০৫ সাল থেকে দীর্ঘ ১৪ বছর কেটে গেছে। এরপরও আলোচিত এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়নি। এই মামলার সর্ব শেষ সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে ২০১৬ সালে।  

‘ওই সময় পর্যন্ত ১৭১ সাক্ষীর মধ্যে মাত্র ৪৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। এরই মধ্যে মামলায় ৩২২ কার্যদিবস পেরিয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার একজন সাক্ষী হাজির হননি। তাই আদালত পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য করেছেন আগামী ৭ মার্চ। ’   

এদিকে, মামলার বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রিতায় হতাশ খোদ আইনজীবীরাও। ট্রাইব্যুনালের পিপি কিশোর কুমার কর বলেন, মূলত মামলার অধিকতর তদন্ত, বিচারক না থাকা, সাক্ষী না আসা ও নির্দিষ্ট তারিখগুলোতে আসামিদের হাজির করতে না পারাটাই বিচারকার্য বিলম্ব হওয়ার কারণ। এ নিয়ে আমরাও হতাশ। মামলার সুষ্ঠু বিচার পাওয়ার জন্য দ্রুত শেষ করা উচিত।
২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি হবিগঞ্জ সদর উপজেলার বৈদ্যের বাজারে আওয়ামী লীগের জনসভায় গ্রেনেড হামলায় গুরুতর আহত হন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী শাহ এ এম এস কিবরিয়া। পরে চিকিৎসার জন্য ঢাকা নেওয়ার পথে মারা যান তিনি।  

এ ঘটনায় কিবরিয়ার ভাতিজা শাহ মঞ্জুরুল হুদা, আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা আবদুর রহিম, আবুল হোসেন ও সিদ্দিক আলীও নিহত হন। গুরুতর আহত হন বর্তমান জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মো. আবু জাহির। এছাড়া আহত হন প্রায় ৭০ জন নেতাকর্মীও।

ঘটনার পরদিন ২৮ জানুয়ারি তৎকালীন হবিগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও বর্তমান সাধারণ সম্পাদক সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মজিদ খান বাদী হয়ে হত্যা ও বিস্ফোরকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে দু’টি মামলা করেন। পরে মামলা দু’টি পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগে (সিআইডি) হস্তান্তর করা হয়।  

তদন্ত শেষে ২০০৫ সালে ১৮ মার্চ শহীদ জিয়া স্মৃতি ও গবেষণা পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ ১০ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দেয় সিআইডি।

এ অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেন বাদী মজিদ খান। এরপর ২০০৭ সালে মামলাটি পুনরায় তদন্তের জন্য ফের সিআইডিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। মামলার পঞ্চম তদন্তকারী কর্মকর্তা সিলেট অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) মেহেরুন্নেসা পারুল সর্বশেষ ২০১৪ সালের ১৩ নভেম্বর হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপি নেতা ও সাবেক প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী, সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জিকে গউছ, হুজি নেতা মাওলানা তাজউদ্দিনের ভগ্নিপতি হাফেজ মো. ইয়াহিয়াসহ আবু বকর, দেলোয়ার হোসেন, শেখ ফরিদ, আবদুল জলিল ও মাওলানা শেখ আবদুস সালামকে অভিযুক্ত করে সম্পূরক চার্জশিট দাখিল করেন। তাদের বিরুদ্ধে বোমা হামলা ও হত্যার অভিযোগ আনা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৬ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৯
এনইউ/এমএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।