ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

বাদল ফরাজিকে নিয়ে হাইকোর্টের রুল

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৯
বাদল ফরাজিকে নিয়ে হাইকোর্টের রুল

ঢাকা: ‘বিনা অপরাধে’ ভারতের কারাগারে প্রায় ১০ বছর বন্দি থাকার পর দেশে ফিরিয়ে আনা বাদল ফরাজিকে আদালতে হাজির করা নিয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

আইন ও সালিশ কেন্দ্রের পক্ষে করা এক রিটের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার (৭ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. আসাদুজ্জামান।

সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী মো. শাহীনুজ্জামান শাহীন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (বাশার)।
 
পরে শাহীনুজ্জামান বলেন, কেরাণীগঞ্জে কারাগারে থাকা বাদল ফরাজিকে বেআইনিভাবে আটক রাখা হয়নি, তা নিশ্চিতে কেন তাকে আদালতে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হবে না, সেই মর্মে রুল জারি করেছেন।
 
এক সপ্তাহের মধ্যে স্বারষ্ট্র সচিব (সুরক্ষা বিভাগ), পররাষ্ট্র সচিব, মহাপুলিশ পরিদর্শকসহ সংশ্লিষ্টদের রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
 
এর আগে গত বছরের ৮ জুলাই তাকে মুক্তি দিতে একটি রিট করেছিলেন সুপ্রিম কোর্টের দুই আইনজীবী। যেটি একই বছরের ১১ জুলাই উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ হয়ে যায়।

গত বছরের ৬ জুলাই বিকেলে জেট এয়ারের একটি ফ্লাইটে বাদলকে নিয়ে ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান দেশের প্রতিনিধি দল। এরপর প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করে তাকে কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের উদ্দেশে নিয়ে যাওয়া হয়।

ভারতের সঙ্গে বন্দিবিনিময় চুক্তির আওতায় দিল্লির তিহার জেলে বন্দি বাংলাদেশের নাগরিক বাদল ফরাজিকে (২৮) ফিরিয়ে আনা হয়।

ওই সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল জানান, দেশে ফিরিয়ে আনার পর বাদল ফরাজিকে জেলে রেখেই বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী যা করার তাই করা হবে।

বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের কাছে ১৭ নম্বর ফারুকি রোডের বাসিন্দা আবদুল খালেক ফরাজি ও সারাফালি বেগমের ছেলে বাদল। টি এ ফারুক স্কুলের অষ্টম শ্রেণি পাস বাদলের ইচ্ছা ছিলো তাজমহল দেখার। এমন ইচ্ছায় ২০০৮ সালের ১৩ জুলাই দুপুরে বেনাপোল অভিবাসন কার্যালয়ে সব প্রক্রিয়া শেষ করে ভারতের হরিদাসপুর সীমান্তে প্রবেশের পরই সেখানকার একটি খুনের অপরাধে বাদলকে আটক করে দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। হিন্দি বা ইংরেজি ভাষায় কথা বলতে না পারার কারণে বিএসএফের কর্মকর্তাদের বোঝাতেই পারেননি যে খুনের অভিযোগ যে বাদলকে খোঁজা হচ্ছে তিনি সেই ব্যক্তি নন।

২০০৮ সালের ৬ মে দিল্লির অমর কলোনিতে এক বৃদ্ধাকে খুনের অভিযোগে বাদল সিং নামে আসামিকে খুঁজছিলো পুলিশ। তাকে ধরতে সীমান্তেও সতর্কতা দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু শুধু দু’জনের নাম এক হওয়ায় বাংলাদেশি নাগরিক বাদল ফরাজিকে আটক করে বিএসএফ। পরে ওই খুনের অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ নম্বর ধারায় অভিযোগ দায়ের করা হয় বাদলের বিরুদ্ধে।

২০১৫ সালের ৭ আগস্ট বাদলকে দোষী সাব্যস্ত করে তাকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় দিল্লির সাকেট আদালত। দিল্লি হাইকোর্টও নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন। পরে বাদল ফরাজির স্থান হয় দিল্লির তিহার জেলে। বিনা দোষে এই সাজা মেনে না নিয়ে বাদল ফরাজি দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহায়তায় সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন। পরে শীর্ষ আদালতও বাদলের আবেদন খারিজ করে দেন। ফলে গত ১০ বছরের বেশি সময় ধরে জেলেই কাটাতে হয়েছে বাদলকে।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৭, ২০১৯
ইএস/এইচএ/

** বাদল ফরাজিকে নিয়ে হাইকোর্টে রিট

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।