বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১১ টায় কঠোর নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে মামলার প্রধান আসামি সিরাজ উদদৌলা, আওয়ামী লীগ নেতা রহুল আমিন ও কমিশনার মাকসুদসহ ১৬ আসামিকে ফেনীর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে হাজির করা হয়।
এরআগে বুধবার (০৩ জুলাই) প্রধান আসামি সিরাজ উদদৌলার ব্যক্তিগত সহকারী সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিনের সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়।
এর আগে গত ২৭ জুন মামলার বাদী ও প্রথম সাক্ষী নুসরাতের বড়ভাই মাহমুদুল হাসান নোমানের সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। এরপর তাকে জেরা শুরু করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা। যা শেষ হয় রোববার (৩০ জুন)। পরে গত ১ ও ২ জুলাই নুসরাত জাহান রাফির বান্ধবী নিশাত সুলতানা ও সহপাঠী নাসরিন সুলতানা ফূর্তির সাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়। ২ জুলাই নাসরিন সুলতানা ফূর্তির জেরা শেষে মাদ্রাসার পিয়ন নুরুল আমিন আদালতে সাক্ষ্যদান শুরু করেন। ৩ জুলাই তার সাক্ষ্যদান শেষ হলে আদালত মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী মোস্তফার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন। এরপর সাক্ষ্য দেবেন লোকমান হোসেনসহ বাকিরা।
এদিকে, নুসরাতকে হত্যার আগে গত ২৭ মার্চ শ্লীলতাহানির অপর আরেকটি মামলায় একমাত্র আসামি মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। বুধবার ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জাকির হোসেনের আদালতে এ চার্জশিট জমা দেওয়া হয়।
পিবিআই জানান, গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা নুসরাতকে তার কক্ষে ডেকে নিয়ে শ্লীলতাহানি করে। পরে নুসরাতের মা শিরিন আক্তার বাদী হয়ে সোনাগাজী মডেল থানায় মামলা দায়ের করলে পুলিশ অধ্যক্ষকে আটক করে। এরপর পলিশ সদর দফতর মামলাটি তদন্তে পিবিআইকে দায়িত্ব দেয়। পিবিআই ৯৬ দিনের মাথায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২৭১ পৃষ্টার অভিযোগপত্রে চিকিৎসক ও পুলিশসহ মোট ২৯ সাক্ষী রয়েছে বলে জানায় পিবিআই।
বৃহস্পতিবার ফেনীর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেনের আদালতে মামলার শুনানি হয়। শুনানি শেষে মামলাটি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মামুনুর রশিদের আদালতে পাঠানো হয়। সেখানে আদালত আগামী ৯ জুলাই মামলাটির চার্জ শুনানির দিন ধার্য করেছে বলে জানান বাদী পক্ষের আইনজীবী।
গত ৬ এপ্রিল ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসায় আলিম পরীক্ষা কেন্দ্রে গেলে নুসরাতকে ছাদে ডেকে নিয়ে তার শরীরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে করা শ্লীলতহানির মামলা তুলে না নেওয়ায় তাকে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে; যা মৃত্যুশয্যায়ও বলে গেছেন নুসরাত। ১০ এপ্রিল ঢাকার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন নুসরাতের মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৫ ঘণ্টা, জুলাই ০৪, ২০১৯
এসএইচডি/ওএইচ/