ঢাকা, সোমবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

হাইকোর্টে ব্যবসায়ী বুলুর জামিন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৪৭ ঘণ্টা, জুলাই ১৫, ২০১৯
হাইকোর্টে ব্যবসায়ী বুলুর জামিন

ঢাকা: দুর্নীতির দমন কমিশনের এক মামলায় বিএনএস গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এন এইচ বুলুকে তিন মাসের জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সোমবার (১৫ জুলাই) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কে এম হাফিজুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আসামি পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এম আমিন উদ্দিন।

দুদকের পক্ষে শুনানি করেন মো. খুরশীদ আলম খান ও রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক।  

পরে আমিন উদ্দিন মানিক জানান, তিন মাসের জামিন দিয়ে তার (এম এন এইচ বুলু) পাসপোর্ট আদালতে জমা রাখতে নির্দেশ দেন। পাশাপাশি ছয় মাসের মধ্যে তদন্ত রিপোর্ট আদালতে জমা দিতে দুদককে নির্দেশ দিয়েছেন।

খুরশীদ আলম খান জানান, তাকে (এমএনএইচ বুলু) আদালত তিন মাসের জামিন দিয়েছেন। তার পাসপোর্ট আদালতের কাছে থাকবে। বিদেশ যেতে হলে তাকে আদালতের অনুমতি নিতে হবে।

একশ নয় কোটি ১৭ লাখ ৫৬ হাজার নয়শ ৮১ টাকা মূল্যমানের সম্পদের তথ্য গোপন এবং চব্বিশ কোটি আটাত্তর লাখ ছেষট্টি হাজার ছয়শত বাইশ টাকা মূল্যমানের জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা ভোগ দখলের অভিযোগে বিএনএস গ্রুপের চেয়ারম্যান এম এন এইচ বুলুর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। রোববার (১৪ জুলাই) রাজধানীর রমনা থানায় দুদকের উপপরিচালক ওয়াকিল আহমদ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।  

মামলার এজাহার থেকে আমিন উদ্দিন জানান, দুদকের তলবের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৬ সালের ২০ এপ্রিল সম্পদবিবরণী দাখিল করেন এম এন এইচ বুলু। দাখিল করা সম্পদবিবরণীতে তিনি দুইশ ৫৭ কোটি ৮০ লাখ ৬১ হাজার ৮শ ৪৬ টাকার স্থাবর সম্পদ, ৬০ কোটি ৩৩ লাখ ৭৭ হাজার ৫ টাকার অস্থাবর সম্পদসহ মোট তিনশ ১৮ কোটি ১৪ লাখ ৩৮ হাজার ৮শ ৫১ টাকার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ উল্লেখ করেন।

এছাড়া তিনি তিনশ ৬৯ কোটি ৭০ লাখ ১৫ হাজার ১শ ৫৭ টাকা দায়-দেনার তথ্য জমা দেন।

দুদকে জমা দেওয়া তথ্য যাচাইয়ে বুলুর নামে দুইশ ৫৭ কোটি ৮০ লাখ ৬১ হাজার ৮শ ৪৬ টাকা মূল্যের স্থাবর সম্পদ পাওয়া যায়। অস্থাবর সম্পদ যাচাইয়ে বিভিন্ন কোম্পানির কেনা শেয়ারের মূল্য ৩৩ কোটি ৩০ লাখ ৭৫ হাজার ৮শ ২৭ টাকা, ক্রয়কৃত বিভিন্ন অস্থাবর সম্পদের মূল্য দুই কোটি ৬৩ লাখ ৩৫ হাজার ৬শ ৭৮ টাকা, ক্রয়কৃত বিভিন্ন স্থাবর সম্পদের মূল্য দুইশ ৫৭ কোটি ৮০ লাখ ৬১ হাজার ৮শ ৪৬ টাকা, তার নিজ নামে এবং মালিকানাধীন আলিফ এন্টারপ্রাইজ, বিএনএস ইন্টারন্যাশনাল, বুলু ইন্টারন্যাশনাল, নওশিন ভিনাইল ইন্ড্রাস্ট্রিজ, ওইশী ইন্টারন্যাশনাল, বস পিভিসি ভিনাইল, শাফকাত পিভিসি সোল ইন্ড্রাস্ট্রিজ প্রতিষ্ঠানগুলোর হিসাবে ব্যাংক সমাপনী উদ্ধৃত্ত ২৪ কোটি ৩৯ লাখ ৬৫ হাজার ৫শ টাকা এবং বর্ণিত ব্যাংক সমাপনী উদ্ধৃত্ত ২৪ কোটি ৩৯ লাখ ৬৫ হাজার ৫শ টাকা এবং সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর দায়-দেনা তিনশ ৬৯ কোটি ৭০ লাখ ১৫ হাজার ১শ ৫৮ টাকা প্রদর্শন করেন সম্পদ বিবরণীতে।

এছাড়া যাচাইয়ে রেকর্ডপত্র পর্যালোচনা, অভিযুক্ত ব্যক্তির বক্তব্য এবং আয়কর নথির প্রদর্শন অনুযায়ী, অভিযুক্ত ব্যক্তির নিজ ও নিজ নামীয় বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ৩শ ৬৯ কোটি ৭০ লাখ ১৫ হাজার একশ ৫৭ টাকার গ্রহণযোগ্য দায়-দেনা পাওয়া যায়। ফলে অভিযুক্ত ব্যক্তি এম এন এইচ বুলুর আয় ও দায়-দেনা একত্রে চারশ বিশ কোটি এগারো লাখ ছিয়ানব্বই হাজার সাতশত আটচল্লিশ টাকা বিরানব্বই পয়সা।

অপরদিকে মোট সম্পদ ও খরচ একত্রে চারশত চুয়াল্লিশ কোটি নব্বই লাখ তেষট্টি হাজার তিনশত একাত্তর টাকা পাওয়া যায়। ফলে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদের মূল্য চব্বিশ কোটি আটাত্তর লাখ ছেষট্টি হাজার ছয়শত বাইশ টাকা আট পয়সা পাওয়া যায়।

পরে গত বছরের অক্টোবরে দুদকে দাখিল করা সম্পদবিবরণীতে সম্পদের তথ্য গোপন এবং জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা ভোগ দখলে রাখার অভিযোগে মামলা করে।

এরপর ওই বছরের ১৪ অক্টোবর তিনি হাইকোর্ট থেকে ছয় মাসের জামিন নেন। মেয়াদ শেষে তিনি মহানগর দায়রা আদালতে আত্মসমর্পণ করলে চলতি মাসের ৯ তারিখে তার জামিন আবেদন না মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

পরে তিনি হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ১৫,২০১৯
ইএস/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।