ঢাকা, রবিবার, ২০ আশ্বিন ১৪৩১, ০৬ অক্টোবর ২০২৪, ০২ রবিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

তিতাসের মৃত্যু: তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৮ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
তিতাসের মৃত্যু: তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ

ঢাকা: কাঁঠালবাড়ী ঘাটে ফেরিতে অ্যাম্বুলেন্সে স্কুলছাত্র তিতাস ঘোষের মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত করে তিন সপ্তাহের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলে জনপ্রশাসন সচিবকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

অতিরিক্ত সচিবের নিচে নয় এমন পদমর্যাদার কর্মকর্তার নেতৃত্বে এ তদন্ত করাবেন জন প্রশাসন সচিব।
 
একইসঙ্গে তিতাসের পরিবারকে কেন তিন কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।


 
জনস্বার্থে করা এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বুধবার (৩১ জুলাই) বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।
 
এ বিষয়ে পরবর্তী আদেশের জন্য ২৮ আগস্ট পরবর্তী দিন রেখেছেন আদালত।

মঙ্গলবার মানবাধিকার সংগঠন লিগ্যাল সাপোর্ট অ্যান্ড পিপলস রাইটস’র চেয়ারম্যান ও সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. জহির উদ্দিন লিমন জনস্বার্থে এ
রিট করেন।

রিটের বিবাদীরা হচ্ছেন, নৌপরিবহন সচিব, সড়ক পরিবহন ও সেতু সচিব, পুলিশের মহাপরিদর্শক, বিআইডব্লিউটিসির চেয়ারম্যান, যুগ্ম-সচিব আবদুস সবুর মণ্ডল, মাদারীপুরের ডিসি, পুলিশ সুপার, কাঠালবাড়ী ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক সালাম হোসাইন মিয়া ও কাঠালবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা।
 
মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় নড়াইল কালিয়া পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্র তিতাস ঘোষ (১১) গুরুতর আহত হয়। ওই সময় তাকে খুলনার একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য তার পরিবার আইসিইউ সম্বলিত একটি অ্যাম্বুলেন্সে করে বৃহস্পতিবার (২৫ জুলাই) তাকে নিয়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা হন।

রাত ৮টার দিকে কাঁঠালবাড়ি-শিমুলিয়া নৌ-রুটের শিবচরের কাঁঠালবাড়ি ১ নম্বর
ভিআইপি ফেরিঘাটে পৌঁছায় অ্যাম্বুলেন্সটি। তখন কুমিল্লা নামে ফেরিটি ঘাটে যানবাহন পারাপারের অপেক্ষায় ছিল। সরকারের এটুআই প্রকল্পের যুগ্ম-সচিব আবদুল সবুর মণ্ডল পিরোজপুর থেকে ঢাকা যাবেন- তাই ওই ফেরিকে অপেক্ষা করার জন্য জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঘাট কর্তৃপক্ষকে বার্তা পাঠানো হয়।

তিন ঘণ্টা অপেক্ষার পর ফেরিতে ওঠে অ্যাম্বুলেন্সটি। কিন্তু এর মধ্যে মস্তিষ্কে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়ে মাঝপদ্মায় অ্যাম্বুলেন্সেই মারা যায় স্কুলছাত্র তিতাস।

পরিবারের অভিযোগ, তিতাসকে বাঁচাতে তারা ফোন করেন জরুরি নম্বর ৯৯৯-এ। সাহায্য চান ঘাটে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদেরও। কিন্তু কারও অনুরোধই রাখেননি ঘাট কর্তৃপক্ষ।

বিআইডব্লিউটিসির কাঁঠালবাড়ি ফেরিঘাটের ব্যবস্থাপক আব্দুস সালাম মিয়া বলেন, ‘পদ্মায় স্রোতের কারণে ১৮টি ফেরির মধ্যে মাত্র ৮টি ফেরি চলাচল করছিল। দ্রুত পারাপারের কথা বিবেচনা করে ওই অ্যাম্বুলেন্সটিকে ভিআইপি ফেরিতে ওঠানো হয়। তবে ফেরি ছাড়তে স্বাভাবিকের খুব বেশি দেরি করা হয়নি। ’

জেলা প্রশাসক ওয়াহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে পারাপারের ব্যাপারে আমি ফেরি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছিলাম। ১ নম্বর ঘাট দিয়ে জরুরি অ্যাম্বুলেন্স এবং সরকারি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা পার হয়ে থাকেন। তবে সেখানে মুমূর্ষু রোগীর ব্যাপারে ব্যবস্থা না নিয়ে যদি ফেরি ছাড়তে দেরি করা হয় তাহলে কর্তৃপক্ষ ভুল করেছে। ’

বাংলাদেশ সময়: ১৮৪২ ঘণ্টা, জুলাই ৩১, ২০১৯
ইএস/এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।