ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৭ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ জুলাই ২০২৪, ২৪ জিলহজ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

আত্মসমর্পণ ক‌রে জা‌মিন পে‌লেন ড. ইউনূস

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭২৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ৩, ২০১৯
আত্মসমর্পণ ক‌রে জা‌মিন পে‌লেন ড. ইউনূস আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস। ছবি: বাংলানিউজ

ঢাকা: গ্রেফতা‌রি প‌রোয়ানা জারির প্রে‌ক্ষি‌তে আদাল‌তে আত্মসমর্পণ ক‌রে জা‌মিন পে‌য়ে‌ছেন শান্তিতে নো‌বেল বিজয়ী অর্থনী‌তি‌বিদ প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার (৩ ন‌ভেম্বর) ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদাল‌তের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জা‌কিয়া পারভী‌নের আদাল‌তে আত্মসমর্পণ ক‌রে জা‌মিন চান তি‌নি।

আদালত ১০ হাজার টাকা মুচ‌লেকায় একজন আইনজীবী ও একজন স্থানীয় জা‌মিনদা‌রের জিম্মায় তার জা‌মিন মঞ্জুর ক‌রেন।

ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের কারণে গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চাকরিচ্যুত তিন কর্মীর পৃথক তিনটি মামলার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার শ্রম আদালত ৩-এর চেয়ারম্যান রহিবুল ইসলাম গত ৯ অক্টোবর ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন।

 

গত ২৮ অক্টোবর হাইকোর্ট এক আদেশে আগামী ৭ নভেম্বরের মধ্যে ড. ইউনূসকে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া আদালতে আত্মসমর্পণের সুযোগ দিতে নির্দেশ দেন। তার ভাইয়ের করা এক রিট আবেদনের প্রেক্ষিতে বিচারপতি মইনুল ইসলাম চৌধুরী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। হাইকোর্টের বেঁধে দেওয়া সময়ের চারদিন আগেই ড. ইউনূস আত্মসমর্পণ করে জামিন নিলেন।  

পরোয়ানা জারি হওয়া তিনটি মামলা ছাড়াও ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে পরে আরও দু’টি মামলা হয়। সে দু’টিতে আদালত সমন জারি করেছিলেন। এই মামলাগুলোতেও আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন তিনি। সবক’টি মামলাতেই ড. ইউনূসকে অভিযোগ গঠন পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করা হয়েছে। একইসঙ্গে, সে পর্যন্ত তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন ড. ইউনূসের আইনজীবী ব্যারিস্টার মুস্তাফিজুর রহমান খান।

ড. ইউনূ‌সের আইনজীবী ব্যা‌রিস্টার মুস্তা‌ফিজুর রহমান খানের বক্তব্য

এসব মামলার অপর দুই আসামি প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজনীন সুলতানা ও উপ-মহাব্যবস্থাপক খন্দকার আবু আবেদীনকে পরবর্তী তারিখ পর্যন্ত জামিন মঞ্জুর করা হয়। তবে, তাদের ধার্য তারিখে ব্যক্তিগতভাবে হাজির থাকতে হবে বলে বাংলানিউজকে জানিয়েছেন আদালতের পেশকার মো. নুরুজ্জামান।

গত ৩ জুলাই ঢাকার তৃতীয় শ্রম আদালতে ড. মুহাম্মদ ইউনূসসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন তার প্রতিষ্ঠিত প্রতিষ্ঠান গ্রামীণ কমিউনিকেশন্সের চাকরিচ্যুত তিন কর্মচারী প্রস্তাবিত গ্রামীণ কমিউনিকেশন্স শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শাহ আলম ও সদস্য এরমানুল হক। এই তিন মামলায় ড. ইউনূস ছাড়া অপর দুই আসামি আগেই জামিন নিয়েছিলেন। তিন মামলার শুনানির দিন আগামী ৭ নভেম্বর ধার্য রয়েছে।

একই প্রতিষ্ঠানের আরও দুই কর্মচারী আব্দুল গফুর ও হোসাইন আহম্মেদ একই আদালতে গত ২৬ আগস্ট অপর দু’টি মামলা দায়ের করেন। ওই দু’টি মামলায় আদালত সমন জারি করেছিলেন। সমন জারি হওয়া দু’টি মামলাতেও ড. ইউনূসসহ তিন আসামি জামিন নিয়েছেন। এই মামলায় আগামী ৫ নভেম্বর শুনানির দিন ধার্য রয়েছে।

এসব মামলার অভিযোগে বাদীরা বলেন, শ্রমিক হিসেবে নিজেদের সংগঠিত হওয়া ও নিজেদের কল্যাণের জন্য ট্রেড ইউনিয়ন গঠনের বিষয়ে সিদ্বান্ত নেন তারা। ২০১৯ সালের ১৬ এপ্রিল ট্রেড ইউনিয়নটি রেজিস্ট্রেশনের জন্য মহাপরিচালক ও রেজিস্ট্রার অব ট্রেড ইউনিয়নে আবেদন করলে ৯ জুন তা প্রত্যাখ্যাত হয়। পরে ইউনিয়ন গঠনের খবর জানার পর তাদের চাকরিচ্যুত করা হয়।  

ইউনিয়ন গঠনের কারণে চাকরিচ্যুত করায় শ্রম আইন ২০০৬-এর ১৯৫ (ঘ) ধারা লঙ্ঘন হয়েছে। তাই বাদীরা শ্রমিক হিসেবে বাংলাদেশ শ্রম আইন ৩১৩ ধারার তাদের ন্যায়সংগত অধিকার ফিরে পাওয়ার জন্য ও ইউনিয়ন গঠন এবং তার কার্যকলাপ পরিচালনার জন্য এই মামলা করেন। উল্লেখ্য, ২৫৬টি তথ্য ব্যবস্থাপনা কেন্দ্রে আইটি সেবা দেয় গ্রামীণ কমিউনিকেশন্স।

বাংলাদেশ সময়: ১২২৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ০৩, ২০১৯ (আপডেট: ১৪৩০)
কেআই/একে

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।