ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১১ পৌষ ১৪৩১, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল আদালত চলবে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২১২ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল আদালত চলবে সুপ্রিম কোর্ট/ ফাইল ফটো

ঢাকা: করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে নিয়মিত আদালত না খুলে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে দেশের সব আদালতে বিচারকাজ পরিচালনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।

সোমবার (১৫ জুন) এ বিষয়ে পৃথক বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন। এর আগে ৩০ মে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছিলো ১৫ জুন পর্যন্ত ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে বিচারকাজ চলবে।

উচ্চ আদালত

৩০ মে দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে ১১টি বেঞ্চ গঠনের কথা জানালেও এবার আরও দু’টি বেঞ্চ বাড়ানো হলো।

সোমবারের দেওয়া বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশব্যাপী করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধকল্পে এবং শারীরিক উপস্থিতি ছাড়া আগামী ১৬ জুন থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ‘আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এবং সুপ্রিম কোর্টের জারি করা প্র্যাকটিস ডাইরেকশন অনুসরণ করে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে শুধু ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতির মাধ্যমে হাইকোর্ট বিভাগের বিচারকার্য পরিচালনার জন্য প্রধান বিচারপতি বেঞ্চগুলো (১৩টি) গঠন করেছেন।

অধস্তন আদালত

অধস্তন আদালতের বিষয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, করোনা ভাইরাস মহামারি ‌রোধক‌ল্পে সামা‌জিক দূরত্ব বজায় রাখা ও শারীরিক উপ‌স্থি‌তি ব‌্যতি‌রে‌কে বিচারকার্য প‌রিচালনার ল‌ক্ষ্যে ‘আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর ৫ ধারার ক্ষমতাব‌লে সু‌প্রিম কোর্ট থেকে গত ৩০ মে জা‌রি করা সার্কুলা‌রের কার্যক্রম পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বলবৎ থাক‌বে।

বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া করোনা ভাইরাসের কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতে সাধারণ ছুটিতে আদালত বন্ধ রেখে গত ২৬ এপ্রিল ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়।

এজন্য সুপ্রিম কোর্টের রুলস কমিটি পুনরায় গঠন এবং ভার্চ্যুয়াল কোর্ট চালু করার জন্য প্রয়োজনীয় আইনগত প্রতিবন্ধকতা দূর করতে পদক্ষেপ নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

সেদিন প্রথমবারের মতো ভিডিও কনফারেন্সে প্রধান বিচারপতির সভাপতিত্বে ফুলকোর্ট সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কনফারেন্সে সংযুক্ত ছিলেন সুপ্রিমকোর্টের উভয় বিভাগের ৮৮ জন বিচারপতি।

এ অবস্থায় গত ৭ মে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে গণভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘আদালতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার অধ্যাদেশ ২০২০’ এর খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।

২ দিন পর ৯ মে ভার্চ্যুয়াল কোর্ট সম্পর্কিত অধ্যাদেশ জারি করা হয়। অধ্যাদেশে বলা হয়, সুপ্রিমকোর্টের আপিল বিভাগ বা ক্ষেত্রমত হাইকোর্ট বিভাগ, সময় সময়, প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) জারি করতে পারবে।

অধ্যাদেশে আরও বলা হয়, ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা আপাতত বলবৎ অন্য কোনো আইনে ভিন্নতর যাই থাকুক না কেন, যেকোনো আদালত এ অধ্যাদেশের ধারা ৫ এর অধীন জারি করা প্র্যাকটিস নির্দেশনা (বিশেষ বা সাধারণ) সাপেক্ষে, অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষরা বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীদের ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করে যেকোনো মামলার বিচার বা বিচারিক অনুসন্ধান বা দরখাস্ত বা আপিল শুনানি বা সাক্ষ্যগ্রহণ বা যুক্তিতর্ক গ্রহণ বা আদেশ বা রায় দিতে পারবে।

অডিও-ভিডিও বা অন্য কোনো ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে বিচারপ্রার্থী পক্ষ বা তাদের আইনজীবী বা সংশ্লিষ্ট অন্য ব্যক্তি বা সাক্ষীদের ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা ছাড়া অন্য বিষয়ের ক্ষেত্রে ফৌজদারি কার্যবিধি বা ক্ষেত্রমতে দেওয়ানি কার্যবিধি অনুসরণ করতে হবে।

কোনো ব্যক্তির ভার্চ্যুয়াল উপস্থিতি নিশ্চিত করা হলে ফৌজদারি কার্যবিধি বা দেওয়ানি কার্যবিধি বা অন্য কোনো আইনের অধীন আদালতে তার সশরীরে উপস্থিতির বাধ্যবাধকতা শর্ত পূরণ হয়েছে বলে গণ্য হবে।

পরে ১০ মে ভিডিও কনফারেন্সে সব বিচারপতিদের সঙ্গে বৈঠকের পর (ফুলকোর্ট) সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে একটি চেম্বার কোর্ট এবং হাইকোর্ট বিভাগে কয়েকটি বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি।

করোনা ভাইরাসের কারণে গত ২৬ মার্চ থেকে সরকারি আদেশের সঙ্গে মিল রেখে আদালত অঙ্গনেও সাধারণ ছুটি ছিল। পরে দফায় দফায় সাধারণ ছুটিরও মেয়াদ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ গত ১৬ মে দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে সাধারণ ছুটির মেয়াদ ৩০ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়। তবে সরকার ৩০ মের পর সাধারণ ছুটি আর বাড়ায়নি।

বাংলাদেশ সময়: ২২১২ ঘণ্টা, জুন ১৫, ২০২০
ইএস/এফএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।