ঢাকা, সোমবার, ৮ পৌষ ১৪৩১, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

আইন ও আদালত

এএসপি আনিস হত্যা: গ্রেফতারদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২৪ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
এএসপি আনিস হত্যা: গ্রেফতারদের ১০ দিনের রিমান্ড আবেদন এএসপি আনিসুল করিম হত্যা মামলায় গ্রেফতার আসামিরা

ঢাকা: জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমকে হত্যার ঘটনায় আদাবর থানার মামলায় ১০ আসামিকে ১০ দিন করে রিমান্ডের আবেদন করেছে পুলিশ।

মঙ্গলবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে তাদের আদালতে হাজির করে এই রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদাবর থানার পরিদর্শক ফারুক মোল্লা।

বেলা তিনটার দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শহিদুল ইসলামের আদালতে রিমান্ড আবেদনের ওপর শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন সিএমএম আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর হেমায়েত উদ্দিন খান হিরন।

সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ ও জিজ্ঞাসাবাদ শেষে এই ঘটনায় হওয়া মামলায় ১০ জনকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

এর আগে মঙ্গলবার নিজ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপির তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) হারুন অর রশীদ বলেন, ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে ৮-৯ জন লোক মিলে ওই পুলিশ কর্মকর্তাকে এলোপাথারি মারধর করছেন। কেউ মাথায়, কেউ বুকে আঘাত করছেন। কাউকে আবার এএসপি আনিসুল করিমের হাত বাঁধতে দেখা গেছে। তারা সবাই হাসপাতালের ওয়ার্ড বয়-ক্লিনার, সেখানে কোনো চিকিৎসক ছিলেন না। তাই আমাদের কাছে মনে হয়েছে এটি স্পষ্ট হত্যাকাণ্ড।

এ ঘটনায় নিহতের বাবা বাদী হয়ে আদাবর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। সিসিটিভি ফুটেজে উপস্থিত ১০ জনের সবাইকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতাররা হলেন- আদাবরের মাইন্ড এইড হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয়, কো অর্ডিনেটর রেদোয়ান সাব্বির, শেফ মাসুদ, ওয়ার্ড বয় জোবায়ের হোসেন, তানিফ মোল্লা, সজীব চৌধুরী, অসীম চন্দ্র পাল, লিটন আহাম্মদ, সাইফুল ইসলাম পলাশ ও ফার্মাসিস্ট তানভীর হাসান।

পরিবারের সদস্যরা জানান, পারিবারিক ঝামেলার কারণে আনিসুল মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। সোমবার (০৯ নভেম্বর) দুপুর পৌনে ১২টার দিকে আনিসুলকে মাইন্ড এইড হাসপাতালে নেওয়া হয়। হাসপাতালটিতে ভর্তির কিছুক্ষণ পরই কর্মচারীদের ধস্তাধস্তি ও মারধরে তার মৃত্যু হয় বলে অভিযোগ করেছে এএসপি আনিসুলের পরিবার।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করায় কর্মচারীরা তাকে শান্ত করার চেষ্টা করছিলেন। ঘটনার পর হাসপাতালের অ্যাগ্রেসিভ ম্যানেজমেন্ট রুমে তাকে মারধরের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে।

ভিডিওটিতে দেখা যায়, হাসপাতালে ঢোকার পরই আনিসুল করিমকে ৬ থেকে ৭ জন টেনে-হিঁচড়ে একটি কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরেন। হাসাপাতালের ব্যবস্থাপক আরিফ মাহমুদ তখন তাদের পাশে দাঁড়িয়ে ছিলেন। মাথার দিকে থাকা দুইজন হাতের কনুই দিয়ে আনিসুল করিমকে আঘাত করছিলেন। এ সময় একটি কাপড়ের টুকরা দিয়ে আনিসুল করিমের হাত পেছনে বাঁধা হয়। চার মিনিট পর তাকে যখন উপুড় করা হয়, তখনই ধীরে ধীরে নিস্তেজ হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন তিনি। এ ঘটনায় সোমবার রাতে প্রথমে ছয়জনকে আটক করে পুলিশ। পরে আরও একজনকে আটক করা হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অণুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র আনিসুল করিম ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। এক সন্তানের জনক আনিসুলের বাড়ি গাজীপুরে। সর্বশেষ আনিসুল করিম বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী কমিশনারের দায়িত্বে ছিলেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৪১৯ ঘণ্টা, নভেম্বর ১০, ২০২০
কেআই/এমজেএফ
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।