ঢাকা: দোকানের কর্মচারী থেকে হাজার কোটি টাকার মালিক বনে যাওয়া মনির হোসেন ওরফে গোল্ডেন মনিরের অস্ত্র ও মাদক মামলা বিচারের জন্য ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালতে বদলির আদেশ হয়েছে।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) অস্ত্র মামলাটি ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মামুনুর রশিদ এবং মাদক মামলাটি অপর মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সত্যব্রত শিকদার বদলির এই আদেশ দেন।
আদালতে বাড্ডা থানার সাধারণ নিবন্ধন (জিআর) শাখার মুন্সি জামাল হোসেন এই তথ্য জানান।
গত ২০ জানুয়ারি ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন আদালতে এই দুই মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির গুলশান বিভাগের পরিদর্শক আব্দুল মালেক।
অস্ত্র আইনের ১৯ (এ) ধারায় গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে ১৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এই আইনে অভিযোগ প্রমাণিত হলে সর্বোচ্চ যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।
অপরদিকে মাদক মামলায় তার বিরুদ্ধে একই তদন্ত কর্মকর্তা ২০১৮ সালের মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের ৩৬(১) ধারায় অভিযোগপত্র দেন। এই মামলাতেও ১৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে। এই আইনে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ড হতে পারে।
গত বছর ২১ নভেম্বর সকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকার নিজ বাসা থেকে গোল্ডেন মনিরকে আটক করা হয়। এ সময় তার বাসা থেকে ৬০০ ভরি সোনার গহনা, বিদেশি পিস্তল-গুলি, মদ, ১০ দেশের বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা ও নগদ এক কোটি নয় লাখ টাকা জব্দ করা হয়।
এছাড়া, তার বাড়ি থেকে অনুমোদনহীন দুটি বিলাসবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়, যার প্রতিটির বাজারমূল্য প্রায় তিন কোটি টাকা। তার ‘অটো কার সিলেকশন’ নামের গাড়ির শোরুম থেকে আরও তিনটি অনুমোদনহীন বিলাশবহুল গাড়ি জব্দ করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, ঢাকা ও আশেপাশের এলাকায় দুই শতাধিক প্লট ও ফ্ল্যাটের মালিক গোল্ডেন মনির। রাজউকের কয়েকজন কর্মকর্তার যোগসাজশে জালিয়াতির মাধ্যমে অসংখ্য প্লট হাতিয়ে নেন তিনি। তবে প্রাথমিকভাবে ৩০টি প্লট ও ফ্ল্যাটের কথা স্বীকার করেছেন মনির।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার সহায়তায় দীর্ঘ অনুসন্ধান শেষে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে এ অভিযান চালানো হয়। এর আগেও গোল্ডেন মনিরের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) এবং রাজউকের একটি মামলা রয়েছে। মনির মূলত একজন হুন্ডি ব্যবসায়ী ও স্বর্ণের চোরাকারবারি। এ থেকেই মনির পরিচিতি পান ‘গোল্ডেন মনির’ হিসেবে।
গত ২১ নভেম্বর আটক করার পর র্যাব-৩ কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া গোল্ডেন মনিরকে বাড্ডা থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ সময় র্যাব বাদী হয়ে মনিরের বিরুদ্ধে অস্ত্র, বিশেষ ক্ষমতা ও মাদক আইনে তিনটি মামলা দায়ের করে।
বাংলদেশ সময়: ১৮৪৯ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২১
কেআই/এমজেএফ