ঢাকা: করোনা পরীক্ষা না করে মনগড়া রিপোর্ট দেওয়ার অভিযোগে হওয়া মামলায় জেকেজির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরী, তার স্বামী ও প্রতিষ্ঠানটির সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে উজ্জ্বল সরকার নামে এক প্রকৌশলী সাক্ষ্য দিয়েছেন।

বুধবার (০৬ জানুয়ারি) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাদবীর ইয়াছির আহসান চৌধুরীর আদালতে সাক্ষ্য দেন তিনি।

উজ্জ্বল সরকার জবানবন্দিতে বলেন, জেকেজিতে স্ত্রী-মেয়েসহ তিন জন করোনা পরীক্ষা করান। করোনা পরীক্ষার জন্য ১৫ হাজার টাকা দেওয়া হয়। এই পরীক্ষা শেষে দুইজনেরই করোনা পজিটিভ আসে। পরে অন্য জায়গায় পরীক্ষা করা হলে সেখানে নেগেটিভ আসে।

এরপর আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তাদের জেরা করেন। এ নিয়ে মামলাটিতে ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৭ জনের সাক্ষ্য শেষ হলো।

সাক্ষ্য দেওয়া ওই গৃহকর্মীর নাম আকলিমা আক্তার। আগামী ২৭ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য তারিখ ধার্য করেন।

সাবরিনা-আরিফুল ছাড়াও এ মামলার অন্য আসামিরা হলেন—আবু সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ূন কবির হিমু, তানজিলা পাটোয়ারী, বিপ্লব দাস, শফিকুল ইসলাম রোমিও ও জেবুন্নেসা।

গত ২০ আগস্ট একই আদালত আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। ওইদিনই সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ২৭ আগস্ট দিন ধার্য করা হয়। এরপর ২৭ আগস্ট বাদী কামাল হোসেনের জবানবন্দির মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।

গত ৫ আগস্ট তাদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) পরিদর্শক লিয়াকত আলী।  

করোনার ভুয়া রিপোর্ট প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান জেকেজি হেলথ কেয়ারের কর্ণধার আরিফুল চৌধুরীর স্ত্রী ডা. সাবরিনা চৌধুরী জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের একজন চিকিৎসক। মামলার পর ওই প্রতিষ্ঠান থেকে তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। জেকেজির চেয়ারম্যানের দায়িত্বে সাবরিনা আছেন বলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী জানায়।

গত বছর ১২ জুলাই সাবরিনাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তেজগাঁও বিভাগীয় উপ-পুলিশ (ডিসি) কার্যালয়ে আনা হয়। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন জেকেজির প্রতারণা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা, ডিসিসহ পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি সদুত্তর দিতে না পারায় তাকে তেজগাঁও থানায় আগেই আরিফুলের বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়।

গত বছর ২৩ জুন করোনার ভুয়া সনদ দেওয়া, জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগে আরিফুলসহ ছয় জনকে গ্রেফতার করে তেজগাঁও থানা পুলিশ। গ্রেফতারের পর থানা হাজতে থাকা অবস্থায় আরিফুলের ক্যাডার বাহিনী থানায় ভাঙচুর, হামলা এবং মারধর করে পুলিশকে।

জানা যায়, জেকেজির কর্ণধার স্বামী-স্ত্রী মিলে করোনা টেস্টের ভুয়া সনদ বিক্রি করেছেন। প্রতিটি টেস্টের জন্য জনপ্রতি নিয়েছেন সর্বনিম্ন পাঁচ হাজার টাকা। আর বিদেশি নাগরিকদের কাছ থেকে জনপ্রতি তারা নিতেন ১০০ ডলার।

বাংলাদেশ সময়: ২৩২০ ঘণ্টা, মার্চ ৩১, ২০২১
কেআই/আরএ