ঢাকা: লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় এক মাদ্রাসাছাত্রকে যৌন নির্যাতনের পর মারধরের ঘটনায় করা মামলায় মাদরাসার অধ্যক্ষকে জামিন দেননি হাইকোর্ট।
রোববার (১৮ এপ্রিল) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. রাজিক আল জলিলের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ ওই শিক্ষকের আবেদন উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেন।
আদালতে অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদ মোহাম্মদ ইউসুফের জামিন আবেদনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী রুহুল কুদ্দুস কাজল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাইনুল হাসান।
গত ১ মার্চ রাতে উপজেলার চন্দ্রগঞ্জ বাজার এলাকার আত-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফযুল কোরআন মাদরাসা থেকে তিনিসহ আরো এক শিক্ষককে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতার আব্দুর রশিদ ভোলার বোরহান উদ্দিন থানার কাচিয়া ইউনিয়নের চকডোষ গ্রামের দক্ষিণ চকডোষ গ্রামের ক্বারী সিরাজুল হকের ছেলে।
অপরজন হলেন, মাসুম বিল্লাহ। যিনি মাদরাসার হেফজ বিভাগের শিক্ষক ও কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানার উত্তর হাওলা ইউনিয়নের ফেনুয়া গ্রামের হারুনুর রশিদের ছেলে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী শিশু আত-তামরীন ইন্টারন্যাশনাল হিফযুল কোরআন মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের ছাত্র। মাদরাসায় আবাসিকে থেকে সে পড়ালেখা করতো। গত কয়েকদিন আগে শিক্ষক মাসুম বিল্লাহ খাওয়ার রুমে ডেকে নিয়ে ওই শিশুকে যৌন নির্যাতন করেন।
>>>মাদ্রাসাছাত্রকে নির্যাতনের অভিযোগে ২ শিক্ষক গ্রেফতার
ঘটনাটি কাউকে জানালে তাকে প্রাণনাশ করা হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়। সম্প্রতি মাদরাসা সাতদিনের জন্য ছুটি দিলে নির্যাতনের শিকার ওই শিশুও অন্যদের মতো বাড়িতে চলে যায়। পরবর্তীকালে মাদরাসা খোলা হলেও সে বাড়ি থেকে মাদরাসায় যেতে অস্বীকৃতি জানায়। কিন্তু মাদরাসায় যেতে মা তাকে বাধ্য করে। এ সময় শিশুটি তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনা তার মাকে জানায়। গত ২৬ ফেব্রুয়ারি বিকেলে ওই শিশুর মা ও আত্মীয়-স্বজন মাদরাসায় গিয়ে অধ্যক্ষ আব্দুর রশিদকে ঘটনাটি জানান। ঘটনাটি তদন্ত করে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ পরবর্তীতে এমন ঘটনা যেন না ঘটে এজন্য অনুরোধ জানানো হয়।
এদিকে, অধ্যক্ষ ওই ঘটনার কোনো তদন্ত না করেই ঘটনা প্রকাশ করে মাদরাসার সুনাম ক্ষুণ্ন করার অভিযোগে পরদিন শিশুটিকে মারধর করে মাদরাসায় আটকে রাখে। সোমবার (১ মার্চ) খবর পেয়ে নির্যাতনের শিকার শিশুর মা ও আত্মীয়-স্বজনরা মাদরাসায় যান। শিশুটিকে আহত অবস্থায় দেখতে পেয়ে তারা পুলিশে খবর দেয়। পুলিশ অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আব্দুর রশিদ ও মাসুম বিল্লাহকে আটক করে। পরে এ ঘটনায় ওই শিশুর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় দুই শিক্ষককে গ্রেফতার দেখানো হয়।
শিশুটির মা বলেন, আমার ছেলের সঙ্গে শিক্ষকরা খুব খারাপ কাজ করেছে। আমি অধ্যক্ষের কাছে বিচার চেয়েছি। কিন্তু তিনি আমার ছেলেকে পিটিয়ে জখম করেছেন। আমি তাদের উপযুক্ত বিচার চাই।
চন্দ্রগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ কে ফজলুল হক বাংলানিউজকে বলেন, শিশুর মায়ের দায়ের করা মামলায় আটক দুই শিক্ষককে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। তাদের আদালতে সোর্পদ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৮, ২০২১
ইএস/এনটি