ঢাকা: প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের ওপর হামলা ও পাঁচ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে রেখে মামলা দিয়ে কারাগারে পাঠানোকে স্বাধীন সংবাদ মাধ্যমের ওপর হস্তক্ষেপের শামিল বলে মন্তব্য করেছেন সুপ্রিম কোর্টে কর্মরত সাংবাদিকদের সংগঠন ল'রিপোর্টার্স ফোরাম (এলআরএফ)।
মঙ্গলবার (১৮ মে) বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি মাশহুদুল হক ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইয়াছিন বিবৃতিতে রোজিনা ইসলামের ওপর হামলা ও আটকে রেখে মামলা দিয়ে রিমান্ড আবেদনের ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
নেতৃদ্বয় বলেন, রোজিনা ইসলামের অনুসন্ধানী সাংবাদিকতায় স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা ভীত হয়ে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তার ওপর হামলা চালায়। শুধু হামলা করেই তারা ক্ষ্যান্ত হয়নি, মামলা দায়ের করে থানায় হস্তান্তর করে তাকে রিমান্ডে নিতেও আবেদন করে।
তারা বলেন, একজন সিনিয়র সাংবাদিকের ওপর এ নির্যাতন ও মামলার ঘটনায় আমরা তীব্র নিন্দা জানাই। এ ঘটনা স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের ওপর গুরুতর হস্তক্ষেপের শামিল। দায়িত্বপালনকালে একজন সাংবাদিককে নির্যাতন ও মামলা দেওয়ার ঘটনা আইনের শাসনের ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। আমরা অবিলম্বে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের নিঃশর্ত মুক্তি, মামলা প্রত্যাহার এবং তার ওপর হামলাকারীদের বিচারের দাবি জানাই। অন্যথায় রাষ্ট্রের সঙ্গে গণমাধ্যমের মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হলে তার দায় সংশ্লিষ্টদেরই নিতে হবে। যেকোনো প্রয়োজনে এলঅআরএফ সবসময় তার পাশে থাকবে।
এর আগে সোমবার (১৭ মে) বিকেলে সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সচিবের পিএসের কক্ষে ৫ ঘণ্টারও বেশি সময় আটকে রাখা হয় রোজিনাকে। এরপর রাত সাড়ে ৮টার দিকে রোজিনা ইসলামকে সচিবালয় থেকে পুলিশি পাহারায় শাহবাগ থানায় নেওয়া হয়। তার বিরুদ্ধে সরকারি নথি সরানো ও ছবি তোলার অভিযোগ করা হয়েছে।
সোমবার রাতেই রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে শাহবাগ থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। মামলার নম্বর-১৬।
দণ্ডবিধি ৩৯৭ এবং ৪১১ অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট ১৯২৩ এর ৩/ ৫ এর ধারায় এ মামলা করেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের উপ-সচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। এ মামলার একমাত্র আসামি করা হয়েছে রোজিনা ইসলামকে।
এ মামলায় পুলিশের রিমান্ড আবেদন নাকচ করে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়। একইসঙ্গে তার জামিন বিষয়ে শুনানির জন্য আগামী ১৮ মে দিন ধার্য করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০৪ ঘণ্টা, মে ১৮, ২০২১
কেআই/ওএইচ/