ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

১০ এপ্রিলকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা বিবেচনার দাবি রাখে

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২১
১০ এপ্রিলকে ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ ঘোষণা বিবেচনার দাবি রাখে

ঢাকা: জাতীয় জীবনে যে দিবসগুলো গভীর তাৎপর্য বহন করে সেগুলোর মধ্যে ১০ এপ্রিল অন্যতম। এই দিনেই স্বাধীন ও সার্বভৌম বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক আইনের সংজ্ঞা মোতাবেক একটি সরকার তথা মুজিবনগর সরকার গঠনের সক্ষমতা অর্জনের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য অর্জন করে।

শনিবার (২৯ মে) বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল’ অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স (বিলিয়া) আয়োজিত ‘মুজিবনগর সরকার: প্রজাতন্ত্রের জন্মসনদ’ শীর্ষক অনলাইন লেকচারে মূল বক্তৃতায় ই মন্তব্য করেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক।

এটি ছিল স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে বিলিয়া আয়োজিত তৃতীয় লেকচার।

বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী বলেন, ভারত ও পাকিস্তান যেদিন বৃটিশ ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্ত হয়ে স্বাধীন প্রজাতন্ত্রের মর্যাদা লাভ করেছে, সেদিনকে তারা ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছে। আমাদের স্বাধীনতা দিবস (২৬ মার্চ) রয়েছে এবং আমাদের বিজয় দিবস (১৬ ডিসেম্বর) রয়েছে, কিন্তু আমাদের ‘প্রজাতন্ত্র দিবস’ নেই। যেহেতু ১০ এপ্রিল স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশ একটি গণপ্রজাতন্ত্র হয়েছে, সেহেতু এই প্রশ্নটি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনার দাবি রাখে।

স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রের রচয়িতা ও বিলিয়ার চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল ইসলামের সভাপতিত্বে নির্ধারিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েকুজ্জামান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তৃতা করেন বিলিয়ার পরিচালক অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান।

আলোচনায় অংশ নেন ড. আবদুস সাত্তার মোল্লা, ড.জিয়া রহমান, বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের কন্যা সারমিন আহমেদ রিপি, সাংবাদিক অজয় দাশগুপ্ত, ব্যারিস্টার তানিয়া আমির, আইন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচবি কাজী আরিফুজ্জামান প্রমুখ।

প্রফেসর ড. মোহাম্মদ ফায়েকুজ্জামান বলেন, যে রাষ্ট্র গঠনের অন্যান্য উপাদান (তথা একটি স্থায়ী জনগোষ্ঠী, নির্ধারিত অঞ্চল ও অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষমতা) ১৯৭১ সালের মার্চের ৩ তারিখ থেকেই বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য নেতৃত্বে বর্তমান ছিল। সরকার গঠনের শূন্যতা ১০ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠনের মাধ্যমে দূর হয়। একটি বৈধ সরকারের সকল বৈশিষ্ট্য উপাদান বিদ্যমান ছিল। এই সরকারের অধীনেই মুক্তিবাহিনী গঠন, সেনাবাহিনীসহ ৩ বাহিনীর গঠন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র নামক প্রচার মাধ্যম প্রতিষ্ঠা এবং বিশ্বব্যাপী কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিল। তাছাড়া এই সরকার সফলভাবে শরণার্থী মোকাবিলা, সেক্রেটারিয়েট প্রতিষ্ঠা ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে মুক্ত করতে সমর্থ হয়েছিল।

সভাপতির বক্তব্যে ব্যারিস্টার এম. আমীর-উল-ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার আমাদের মুক্তিযুদ্ধের মূল চেতনা। স্বাধীনতার ঘোষণাপত্র, সংবিধানের ঘোষিত মানবাধিকারের বিধানগুলো কেবল আইন-আদালতের আলোচনায় সীমাবদ্ধ। এগুলোকে স্কুল-কলেজের পাঠ্য হওয়া উচিত, বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণা হওয়া উচিত এবং প্রাত্যহিক জীবনে এই মহত্তর ধারণাগুলোর বিকাশ ও চর্চা করা উচিত।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫১ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০২১
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।