ঢাকা: ২০০২ সালে সাতক্ষীরায় তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেতা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার গাড়িবহরে হামলার মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে সাজাপ্রাপ্ত ১১ আসামির জামিন আবেদনের ওপর আগামী ২১ জুন হাইকোর্টে আদেশের জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবিরের ভার্চ্যুয়াল হাইকোর্ট বেঞ্চ রোববার (৩০ মে) এ দিন ঠিক করেন।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এস এম মুনীর। আসামিপক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন।
হাইকোর্টে জামিন আবেদন করেছিলেন সাতক্ষীরা জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারসহ ১৮ আসামি। এর মধ্যে গত ২৬ মে সাত আসামিকে জামিন দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। বাকিদের বিষয়ে রোববার (৩০ মে) আদেশের জন্য দিন রেখেছিলেন।
এদিকে সাতজনকে দেওয়া জামিন স্থগিত চেয়ে আবেদনের পর ২৭ মে আপিল বিভাগের চেম্বার জজ আদালত হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করেন। এর ধারাবাহিকতায় আবেদনটি রোববার নিয়মিত বেঞ্চে ওঠে।
শুনানি শেষে আপিল বিভাগ সাতজনকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষকে তিন সপ্তাহের মধ্যে লিভ টু আপিল করতে বলা হয়েছে। সেই সময় পর্যন্ত হাইকোর্টের দেওয়া জামিনাদেশ স্থগিত থাকবে।
রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে রোববার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন আপিল বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
২০০২ সালে সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার এক মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে ধর্ষণ করা হয়। ২০০২ সালের ৩০ আগস্ট শেখ হাসিনা সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ওই মুক্তিযোদ্ধার স্ত্রীকে দেখে মাগুরায় যাচ্ছিলেন। কলারোয়া উপজেলা বিএনপি অফিসের সামনে তার গাড়িবহর পৌঁছালে একদল সন্ত্রাসী লাঠিসোটা, ধারালো অস্ত্র, বোমা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। তারা গুলিবর্ষণ করে এবং বোমা বিস্ফোরণ ঘটায়।
এ সময় বিরোধীদলীয় নেতা প্রাণে রক্ষা পেলেও তার গাড়িবহরে থাকা সাতক্ষীরা জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার শেখ মুজিবর রহমান, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ নেত্রী ফাতেমা জাহান সাথী, জোবায়দুল হক রাসেল, শেখ হাসিনার ক্যামেরাম্যান শহীদুল হক জীবনসহ অনেকেই আহত হন। বেশ কয়েকজন সাংবাদিকও এ ঘটনায় আহত হন।
ওইদিনই কলারোয়া উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার মোসলেম উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
২০১৫ সালে এ ঘটনায় আদালতে চার্জশিট দেওয়া হয়। এর মধ্যে হত্যাচেষ্টা মামলায় এক আসামি রাকিবের বয়স ঘটনার সময় ১০ বছর ছিল উল্লেখ করে হাইকোর্টে মামলা বাতিলে আবেদন করা হয়। ২০১৭ সালে ওই আবেদনে একই সালের ২৩ আগস্ট হাইকোর্ট স্থগিতাদেশ দিয়ে রুল জারি করেন।
গত বছরের ৮ অক্টোবর ওই রুল খারিজ করে রায় দেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করে রাকিব। এ আবেদনে আপিল বিভাগ তিন মাসের মধ্যে নিম্ন আদালতে বিচার সম্পন্ন করার নির্দেশ দেন।
এরপর বিচার শেষে সাতক্ষীরার চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত গত ৪ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) হাবিবুল ইসলাম হাবিবসহ তিনজনের সর্বোচ্চ ১০ বছর করে এবং বাকি ৪৭ আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়ে রায় দেন।
বাংলাদেশ সময়: ০০৫৬ ঘণ্টা, মে ৩০, ২০২১
ইএস/এমজেএফ