ঢাকা, সোমবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ২৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এএসআই ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২১
ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ এএসআই ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে

ঢাকা: বোন এবং পুলিশ কর্মকর্তা দুলাভাইয়ের সহযোগিতায় বিয়ের মিথ্যা আশ্বাসে ধর্ষণের অভিযোগে  তিন জনের মামলা করেছেন এক কলেজছাত্রী। অভিযুক্তরা হলেন- শ্যালক হাফিজুর রহমান মেহেদী, তার বোন রোকেয়া ওরফে রুনা এবং দুলাভাই তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সহকারি উপ-পরিদর্শক (এএসআই) ওলিউল্লাহ সরকার।

রোববার (১৯ ডিসেম্বর) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম তামান্না ফারাহ’র আদালতে ওই কলেজছাত্রী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

বাদীপক্ষের আইনজীবী আজাদ রহমান মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, প্রতারণামূলকভাবে বিয়ের বিশ্বাসে স্বামী-স্ত্রী হিসেবে যৌন সম্পর্ক, ভ্রুণ হত্যা, অপরাধমূলক বিশ্বাস ভঙ্গ, প্রতারণা জালজালিয়াতির দায়ে ৪১৩/৪৯৩/৪২০/৪০৬/৩২৩/৫০৬/৪৬৬/৪৬৮ আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) এ বিষয়ে তদন্ত করে আগামী ২৬ জানুয়ারি প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগী কলেজছাত্রীর সঙ্গে আসামি রোকেয়ার পরিচয় হয়। সেই সূত্রে তিনি রোকেয়ার বাসায় গত বছর ২৫ জানুয়ারি সাবলেট হিসেবে রুম ভাড়া নেন। রোকেয়ার ভাই হাফিজুর রহমান মাঝে মধ্যে বোনের বাসায় আসা যাওয়া করেন। ওলিউল্লাহ ও রোকেয়া ভুক্তভোগী তরুণীর সঙ্গে হাফিজুরকে অবিবাহিত বলে পরিচয় করিয়ে দেন। এরপর ভিকটিম ও হাফিজুরের মধ্যে বন্ধুত্ব সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তারা একসঙ্গে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করেন।

অভিযোগে আরও বলা হয়, বন্ধুত্বের সুবাদে হাফিজুর ভিকটিমকে কুপ্রস্তাব দেন। ভিকটিম তা প্রত্যাখান করেন। এরপর বিভিন্ন সময়ে হাফিজুর ভিকটিমকে বিভিন্নভাবে প্ররোচনা দিয়ে যৌনমিলনে আকৃষ্টের চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে ভিকটিম অতিষ্ট হয়ে হাফিজুরকে বিয়ে করতে বলেন। হাফিজুর এতে রাজি হলেও বিয়ের বিষয়টি পরিবারকে জানাতে বারণ করেন। এতে ভিকটিম অনিচ্ছা সত্বেও রাজি হন।

বিয়ের রেজিস্ট্রির কথা বলে হাফিজুর ভিকটিমের কাছ থেকে দুই কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি নেয়। গত ২১ মার্চ একটি হলফনামা তৈরি করে হাফিজুর দাবি করে ভিকটিমের সঙ্গে তার বিয়ে হয়েছে। ৬ লাখ টাকার একটি কাবিননামাও দেখায়। পরে ভিকটিমসহ তিন আসামি একত্রে বসবাস করতে থাকেন। বিয়ের বিয়ষটি ওলিউল্লাহ ও রোকেয়াকে জানালে তার নীরব ভূমিকা পালন করেন।

এরপর হাফিজুর রহমান তার বিশেষ প্রয়োজনে ভিকটিমের কাছ থেকে দুই দফায় এক লাখ টাকা নিয়ে আত্মসাৎ করেন। এছাড়া দুলাভাই ওলিউল্লাহ ও রোকেয়াও ভিকটিমের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেন।

হাফিজুরের কর্মস্থল ছিল ময়মনসিংহ শহরে। এজন্য ভিকটিমকে মাঝেমধ্যে স্ত্রী হিসেবে সেখানেও নিয়ে যায়। এ অবস্থায় ভিকটিম গর্ভবতী হলে গত ৩০ অক্টোবর আসামিরা জোর করে তাকে ওষুধ খাইয়ে গর্ভের সন্তান নষ্ট করে ফেলে। গত ২ নভেম্বর হাফিজুর আবার ময়মনসিংহ চলে যায়।

পরবর্তীতে গত ৬ নভেম্বর ভিকটিম হাফিজুরের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি বিয়ের কথা অস্বীকার করে জানান, মিথ্যা হলফনামা তৈরি করে ভিকটিমকে ধর্ষণ করেছেন। বাড়িতে তার বউ-বাচ্চা আছে। পরবর্তীতে গত ১২ নভেম্বর ওলিউল্লাহ ও রোকেয়াও একই কথা জানায় এবং ভিকটিমকে ওই দিন বাসা থেকে বের করে দেন।

মামলায় বাদী অভিযোগ করেন, জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে হলফনামা তৈরি করে তার কাছ থেকে দেড় লাখ আত্মসাৎ ও বিয়ে না করে হাফিজুর তাকে ধর্ষণ করেন। আর এএসআই ওলিউল্লাহ এবং তার স্ত্রী রোকেয়া এতে সহযোগিতা করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৯, ২০২১
কেআই/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।