ঢাকা, শনিবার, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৮ মে ২০২৪, ০৯ জিলকদ ১৪৪৫

আইন ও আদালত

অপহরণের পর গণধর্ষণ: ওসিসহ ১৩ জনের নামে মামলার আবেদন

উত্তম ঘোষ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮০১ ঘণ্টা, মার্চ ১, ২০২২
অপহরণের পর গণধর্ষণ: ওসিসহ ১৩ জনের নামে মামলার আবেদন

ঢাকা: অপহরণের পর গণধর্ষণ ও এতে সহযোগিতার অভিযোগে হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ১৩ জনের নামে মামলার আবেদন করেছেন এক নারী (৩৩) । মঙ্গলবার (১ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াতের আদালতে এই আবেদন করেন এক সন্তানের জননী ওই নারী।

বিচারক বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলার আবেদনের বিষয়ে পরে আদেশ দেবেন বলে জানান।

মামলায় যাদের আসামি করার আবেদন করা হয়েছে তারা হলেন- হাতিরঝিল থানার ওসি আব্দুর রশিদ, পরিদর্শক (তদন্ত) মহিউদ্দিন ফারুক, পরিদর্শক (অপারেশন) গোলাম আযম, দুই এসআই শরীফুল ও চয়ন। এছাড়াও আসামি করা হয়েছে- আলেয়া, কাজী তোফাজ্জল হোসেন, জাভেল হোসেন পাপন, জামাল, রাকিবুল হাসান, তানীম রেজা বাপ্পী, পান্নু হাওলাদার ও ইউসুফ রিপনকে।

বাদীপক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন হাওলাদার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

মামলার আবেদনে বলা হয়েছে, ভুক্তভোগী নারী এক ছেলের মা। স্বামীর সঙ্গে ছাড়াছাড়ি হওয়ার পর তিনি ঢাকার খিলগাঁওয়ে বাবার বাড়িতে বসবাস করেন। মামলার এক নম্বর আসামি তানিম রেজা বাপ্পীর সঙ্গে তার এক বছর আগে আত্মীয় রিতা আক্তারের মাধ্যমে পরিচয় হয়। এরপর তাকে বিয়ের জন্য বাপ্পী প্রস্তাব দেয় এবং ফুসলাতে থাকে।

সেই ধারাবাহিকতায় ২০২০ সালের ২২ অক্টোবর রাত সাড়ে ৮টার দিকে বাদীর ভাড়া বাসায় বাপ্পী এবং তার বন্ধু অপর আসামি পান্নু হাওলাদার , ইউনুস, বিবাহ নিবন্ধক কাজী তোফাজ্জল হোসেন, জাভেল হোসেন পাপন,  মো. জামাল,  মো. রাকিবুল হাসান ও মোসাম্মৎ আলেয়ার উপস্থিতিতে বিয়ের নাটক সাজান।

পরে বাদীর বাবার বাসায় উঠে তারা স্বামী-স্ত্রী হিসেবে বসবাস শুরু করেন। কিন্তু দুই মাস না যেতেই আসামি কথাবার্তা ও আচার আচরণে সন্দেহ হওয়ায় বাপ্পীর কাছে বিয়ের কাবিননামা চান বাদী।

কিন্তু কাবিননামা না দেখিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন বাপ্পী। এনিয়ে তাদের মধ্যে মনোমালিন্য হলে বাপ্পী তাকে হুমকি দেন ও মারধর করেন। পরে বাদী কাজী তোফাজ্জলের অফিসে যেয়ে কাবিননামা চাইলে তিনি এরকম কোনো বিয়ে পড়াননি বলে তাকে ফিরিয়ে দেন।
এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে মিথ্যা বিয়ে সাজিয়ে বাপ্পী স্বামী সেজে তাকে ধর্ষণ করেন, আর অন্যরা ধর্ষণে সহযোগিতা করেন বলেন আবেদনে উল্লেখ করেন ওই নারী।  

আবেদনে আরও বলা হয়, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টায় বাপ্পী, জাভেল হোসেন পাপন, মো. জামাল মিলে তাকে অপহরণ করে হাতিরঝিল থানা এলাকায় নিয়ে ধর্ষণ করে। আলেয়া সে ঘটনার ভিডিও ধারণ করেন। বাদী এ ঘটনায় পরের দিন রাত পৌন ৪টায় ৯৯৯ নম্বরে ফোন দিয়ে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিসি সেন্টারে ভর্তি হন।

তারও দুই দিন পর ১৬ ফেব্রুয়ারি হাতিরঝিল থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ জমা দেন। পরে পুলিশ-আসামি সবাই মিলে বাদীকে আড়াই ঘণ্টা থানায় বসিয়ে রেখে অন্য আসামিসহ আরও কয়েকজন নারীকে আটক করেন। কিন্তু গণধর্ষণের কোনো আলামত জব্দ করেনি।

এ ঘটনায়  অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা ঘটনা মীমাংসা করার কথা বলে অন্য আসামিদের কাছ থেকে বিপুল অঙ্কের টাকা ঘুষ নেন বলে থানা পুলিশের পাঁচজনের নামে অভিযোগ আনা হয়। এর মাধ্যমে পুলিশ সদস্যরা তার কথিত স্বামী বাপ্পী ও অন্য আসামিদের সাহায্য করেছেন মর্মে আবেদনে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০০ ঘণ্টা, ১ মার্চ, ২০২২
কেআই/এমএমজেড

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।