ঢাকা: যৌতুকের জন্য নির্যাতনের অভিযোগে অভিনেত্রী শাহ হুমায়রা হোসেন সুবহার করা মামলায় গায়ক ইলিয়াস হোসাইনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা (ওয়ারেন্ট) জারির আবেদন করা হয়েছে। বুধবার (২ মার্চ) ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর ভারপ্রাপ্ত বিচারক জুলফিকার হায়াতের আদালতে ইলিয়াসের জামিন শুনানির দিন ধার্য ছিল।
এদিন বাদী সুবহা আদালতে হাজির হন। কিন্তু ইলিয়াস অসুস্থ থাকায় উপস্থিত হতে পারেননি। এজন্য তার আইনজীবী সময় আবেদন করেন।
অপরদিকে বাদীপক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির নবনির্বাচিত সভাপতি মাহবুবুর রহমান আসামি ইলিয়াসের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন।
এ সময় সুবহা কান্না জড়িত কণ্ঠে আদালতে কথা বলতে অনুমতি চান। তখন বিচারক বলেন, ‘আপনি অনেক আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছেন, তারা তো কথা বলছে। ' এরপর আদালত সময় আবেদন মঞ্জুর করে আগামী ২২ মার্চ জামিন শুনানির পরবর্তী দিন ঠিক করেন।
এ মামলায় উচ্চ আদালত থেকে ছয় সপ্তাহের জামিন পান ইলিয়াস। জামিনের মেয়াদ শেষ হতে যাওয়ায় গত ২২ ফেব্রুয়ারি বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদন করেন তিনি। আদালত বাদীর উপস্থিতিতে জামিন শুনানির জন্য ২ মার্চ দিন ধার্য করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ইশতিয়াক আলম এসব তথ্য জানিয়েছেন। গত ৩ জানুয়ারি রাজধানীর বনানী থানায় এই মামলা করেন সুবহা।
মামলার এজাহারে বলা হয়, গত বছর সেপ্টেম্বরে ইলিয়াসের সঙ্গে সুবহার পরিচয় হয়। পরে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। গত ১ ডিসেম্বর তারা বিয়ে করেন। বিয়ের সময় সুবহার পরিবারের পক্ষ থেকে ইলিয়াসের চাহিদা মোতাবেক ১২ লাখ টাকার রোলেক্স ব্র্যান্ডের ঘড়িসহ ১৫ লাখ ৭৫ হাজার টাকার পণ্য দেওয়া হয়। কিন্তু এতেও ইলিয়াস সন্তুষ্ট হয়নি। এর মাঝে সুবহা জানতে পারেন, ইলিয়াস আগে একাধিক বিয়ে করেছেন এবং অসংখ্য প্রেমের সম্পর্ক চলমান। এরই মাঝে ইলিয়াস সুবহার কাছে ফ্ল্যাট কেনা বাবদ ৫০ লাখ এবং গাড়ির জন্য আরও ৩০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন। গত ৯ ডিসেম্বর ইউটিউব চ্যানেল কেনার জন্য সুবহার মায়ের কাছে আরও ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন তিনি। তাকে আড়াই লাখ টাকা দেয় সুবহার পরিবার। পরে গত ২৭ ডিসেম্বর দুপুরে ফ্ল্যাট ও গাড়ি কেনার জন্য ৮০ লাখ টাকার জন্য চাপ দেন ইলিয়াস।
এ নিয়ে তাদের ঝগড়া হয়। এর জের ধরে রাত ৮টার দিকে সুবহাকে শারীরিক নির্যাতন করেন ইলিয়াস। পরদিন আবারও ৮০ লাখ টাকা যৌতুক চান তিনি। তা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ইলিয়াস সুবহাকে মারধর এবং মাথা দেয়ালের সঙ্গে ঠুকে জখম করেন। এরপর ইলিয়াস সুবহাকে ব্যথার ওষুধের কথা বলে অন্য ওষুধ খাওয়ান। একটু পর সুবহা অজ্ঞান হয়ে যান। এ সুযোগে ইলিয়াস আলমারিতে থাকা ২০ লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার এবং ৫০ হাজার টাকা নিয়ে যান।
সুবহার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৩ ঘণ্টা, ২ মার্চ, ২০২২
কেআই/এমএমজেড