ঢাকা: ২০০৭ সালে জরুরি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে অবৈধ সম্পদ অর্জনের মামলায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পুত্রবধূ ডা. জুবাইদা খান ওরফে জুবাইদা রহমান পলাতক- আপিল বিভাগের এমন রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ আবেদন করার কথা জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।
তবে অ্যাটর্নি জেনারেল বলছেন, রিভিউ করার আগে জুবাইদা রহমানকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
রোববার (৫ জুন) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী মো. ইজারুল হক আকন্দের বেঞ্চে এ বিষয়ে জারি করা রুল শুনানিতে আসলে এমন মন্তব্য করেছেন দুই পক্ষের আইনজীবী।
শুনানিতে ডা. জুবাইদা রহমানের পক্ষে ছিলেন সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল এ জে মোহাম্মদ আলী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী খুরশীদ আলম খান।
দুদক আইনজীবী বলেন, আপিল বিভাগ ১৩ এপ্রিল দেওয়া রায়ে বলেছেন জুবাইদা রহমান পলাতক। আর তারেক রহমান তিন মামলায় দণ্ড মাথায় নিয়ে পলাতক আছেন। সুতরাং এই পলাতকদের পক্ষে আইনজীবী মামলায় লড়তে পারেন না।
এরপর আইনজীবী এ জে মোহাম্মদ আলী বলেন, আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে রিভিউ করা হবে।
এ কথার জবাবে অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, রিভিউ করার আগে জুবাইদা রহমানকে আত্মসমর্পণ করতে হবে।
এরপর আবেদনকারীদের সময় আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত আগামী রোববার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করেছেন।
২০০৭ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর ঘোষিত আয়ের বাইরে ৪ কোটি ৮১ লাখ ৫৩ হাজার ৫৬১ টাকার মালিক হওয়া ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে রাজধানীর কাফরুল থানায় এ মামলা দায়ের করে দুদক।
মামলায় তারেক রহমানের স্ত্রী জুবাইদা রহমান ও শাশুড়ি ইকবাল মান্দ বানুকে আসামি করা হয়। পরে একই বছরে জুবাইদা রহমানের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলার কার্যক্রম স্থগিত করে রুল জারি করেন হাইকোর্ট।
ওই রুলের শুনানি শেষে ২০১৭ সালের ১২ এপ্রিল রায় দেন হাইকোর্ট। রায়ে মামলা বাতিলে জারি করা রুল খারিজ করে দেন। একইসঙ্গে জুবাইদা রহমানকে আট সপ্তাহের মধ্যে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণেরও নির্দেশ দিয়েছিলেন।
ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করেন জুবাইদা রহমান।
গত ১৩ এপ্রিল জুবাইদা রহমানের আবেদন খারিজ করে দেন আপিল বিভাগ।
সেই রায়ে জুবাইদা রহমানকে পলাতক বলে উল্লেখ করেন আপিল বিভাগ।
একই মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০০৭ সালে তারেক ও জুবাইদা পৃথক রিট আবেদন করেন। রিটে জরুরি আইন ও এ মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করেন। হাইকোর্ট রুল জারি করে স্থগিতাদেশ দেন।
রুল জারির ১৫ বছর পর দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৯ এপ্রিল রিট মামলা হাইকোর্টের কার্যতালিকায় ওঠে। এরপর হাইকোর্ট রুল শুনানির জন্য ২০ এপ্রিল দিন ঠিক করেন। কিন্তু ওইদিন তারেক-জুবাইদার পক্ষে সময় চেয়ে আবেদন করা হয়। পরে হাইকোর্ট শুনানির জন্য ২৯ মে দিন ঠিক করেন।
পরে ২৯ মে ফের সময় চেয়ে আবেদন করেন তারেক ও জুবাইদার আইনজীবী। পরে হাইকোর্ট ৫ জুন রুল শুনানির জন্য দিন ধার্য করে দেন।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩২ ঘণ্টা, জুন ০৫, ২০২২
ইএস/এসএ