ঢাকা: অনলাইনে ক্যাসিনো কাণ্ডের অন্যতম হোতা সেলিম প্রধানের সঙ্গে দেখা করতে তার রাশিয়ান স্ত্রী আনা প্রধানের আদালতে উপস্থিত হওয়ার কথা রয়েছে। বুধবার (৩ আগস্ট) অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য রয়েছে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬-এর বিচারক আসাদ মো. আসিফুজ্জামানের আদালতে এদিন তাকে হাজির করা হবে বলে জানা গেছে।
সেলিম প্রধানের আইনজীবী শাহীনুর ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, তার বিরুদ্ধে মোট ৪টি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে দুদকের একটি মামলায় বুধবার সাক্ষ্যগ্রহণের দিন ধার্য আছে।
তবে ওইদিন সেলিম প্রধানের স্ত্রী আনা প্রধানের আদালতে আসার তথ্য তিনি নিশ্চিত করতে পারেননি৷ যদিও সেলিম প্রধানের পারিবারিক সূত্রে স্ত্রী আনা প্রধান আদালতে হাজির হবেন বলে জানা গেছে।
অবৈধভাবে ৫৭ কোটি টাকার সম্পদ অর্জনের এই মামলায় ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর সেলিম প্রধানের উপস্থিতিতে অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। এরপর গত ২ ফেব্রুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সেদিন সাক্ষ্য দেন মামলার বাদী দুদক উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান।
২০১৯ সালের ২৭ অক্টোবর দুদক উপ-পরিচালক গুলশান আনোয়ার প্রধান বাদী হয়ে সেলিম প্রধানকে আসামি করে এই মামলা করেন। মামলায় তার বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে ১২ কোটি ২৭ লাখ ৯৫ হাজার ৭৫৪ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ করা হয়েছিল। কিন্ত দুদক মামলাটি তদন্ত করে মোট ৫৭ কোটি টাকার অধিক অবৈধ সম্পদের প্রমাণ পাওয়ায় তার বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দেয়।
এতে বলা হয়, দুর্নীতি ও ক্যাসিনোর মাধ্যমে সেলিম প্রধান মোট ৫৭ কোটি ৪১ লাখ ৪৮ হাজার টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন করেছেন। এর মধ্যে স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ ৩৫ কোটি ৪১ লাখ ৯৭ হাজার টাকার। অর্জিত ২১ কোটি ৯৯ লাখ টাকা থাইল্যান্ড ও যুক্তরাষ্ট্রে পাচার করেছেন।
সেলিম প্রধান জাপান-বাংলাদেশ সিকিউরিটি প্রিন্টিং পেপার্সের চেয়ারম্যান। এই কোম্পানিতে তার ৪০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। ৬৯ হাজার শেয়ারের বিপরীতে এখানে বিনিয়োগ দেখানো হয়েছে ৬৯ লাখ টাকা। তবে সেলিম প্রধানের নামে শেয়ার মানি ডিপোজিট পাওয়া গেছে ২৩ কোটি ৫৫ লাখ ৮৪ হাজার ৬৫০ টাকা। এ টাকা তিনি অর্জন করেছেন অবৈধভাবে। প্রিন্টিং পেপার্স কোম্পানি ২০১০ সালে মুনাফা করে ২৯ লাখ ৩৩ হাজার ৮৫৩ টাকা।
২০১১ সালে মুনাফা করে এক কোটি ৪৬ লাখ ২১ হাজার ৭২ টাকা। এখান থেকে ২০১১-১২ অর্থবছরে আট কোটি টাকা ঋণ নেন বলে সেলিম প্রধান তার ব্যক্তিগত আয়কর নথিতে উল্লেখ করেছেন। তবে এই কোম্পানি থেকে কীভাবে ঋণ নিয়েছেন সেই সংক্রান্ত কোনো বৈধ কাগজপত্র প্রদর্শন করতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি।
এর আগে ক্যাসিনো বিরোধী অভিযান চলাকালে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে সেলিম প্রধানকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এরপর তার নামে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে বেশ কয়েকটি মামলা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭১১ ঘণ্টা, আগস্ট ০২, ২০২২
কেআই/এমএমজেড