ঢাকা: অবৈধ সম্পদের মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট ফের জামিন পেয়েছেন।
সোমবার (২২ আগস্ট) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ এর বিচারক আল আসাদ মো. আসিফুজ্জামান শুনানি শেষে এই আদেশ দেন।
এদিন সম্রাটের উপস্থিতিতে মামলায় চার্জগঠন ও জামিন আবেদনের জন্য শুনানির দিন ধার্য ছিল। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে অসুস্থ সম্রাটকে অ্যাম্বুলেন্সে করে আদালতে হাজির করেন কারা কর্তৃপক্ষ।
এদিন দুপুরে সম্রাটের পক্ষে আইনজীবী এহসানুল হক সমাজী জামিন আবেদনের শুনানি করেন৷
দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিনের বিষয়ে পরে আদেশের জন্য রাখেন। বিকেলে বিচারক পরবর্তী ধার্য তারিখ পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন।
একই দিনে সম্রাটের আইনজীবী চার্জশুনানির জন্য সময় চান। সময় আবেদন মঞ্জুর করে আদালত আগামী ১৯ সেপ্টেম্বর শুনানির দিন ধার্য করেন।
১১ মে সম্রাটের জামিন মঞ্জুর করে আদেশ দেন একই আদালত।
ওইদিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্বিবদ্যালয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এরপর ১৮ মে সম্রাটের জামিন বাতিল করে আদেশ দেন বিচারপতি নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ। আদেশে সম্রাটকে সাত দিনের মধ্যে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে বলা হয়।
উচ্চ আদালতের আদেশ অনুযায়ী সম্রাট ২৪ মে বিচারিক আদালতে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিন চান। আদালত জামিন শুনানি না করে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম এদিন দুই কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের নামে মামলা করেন।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। এরপর গত ২২ মার্চ তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে আদেশ দেন ঢাকার মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কে এম ইমরুল কায়েশ। একই সঙ্গে অভিযোগ গঠনের দিন ঠিক করে মামলাটি এই আদালতে বদলির আদেশ দেন।
ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িত থাকার অভিযোগে ২০১৯ সালের ৭ অক্টোবর সম্রাটকে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম থেকে গ্রেফতার করে র্যাব। পরে তাকে বিভিন্ন মামলায় রিমান্ডে নেওয়া হয়। এখন তিনি কারাগারে আছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৭০৩ ঘণ্টা, আগস্ট ২২, ২০২২
কেআই/এএটি