ঢাকা, রবিবার, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ২২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

আইন ও আদালত

পাটগ্রামের পাথরভাঙা মালিক-শ্রমিকের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০০২ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
পাটগ্রামের পাথরভাঙা মালিক-শ্রমিকের তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট

ঢাকা: লালমনিরহাটের পাটগ্রামের পাথরভাঙা মালিকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এবং পাথরভাঙা শ্রমিকের তালিকা প্রস্তুত করে আদালতে দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়কে এ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির করা রিটের শুনানি নিয়ে মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জালিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ আশরাফ আলী এবং রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল জনাব তুষার কান্তি রায়।

রুলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন স্থানে বিদ্যমান পাথরভাঙা ইউনিটগুলোর জন্য নির্ধারিত জোন তৈরি; নির্ধারিত জোনে সকল পাথরভাঙা ইউনিটগুলো স্থানান্তর; অননুমোদিত সকল পাথরভাঙা ইউনিটসমূহ উচ্ছেদে ও পাথরভাঙা কার্যক্রমের ভয়াবহ দূষণ থেকে এলাকার পরিবেশ, শ্রমিক ও এলাকাবাসীকে রক্ষার ব্যর্থতা সংবিধান, দেশে প্রচলিত আইন, আদালতের আদেশ ও সিদ্ধান্তের লঙ্ঘন বিধায় কেন তা অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট।

একইসঙ্গে পাথরভাঙা জোনে সকল পাথরভাঙা ইউনিটগুলো স্থানান্তর; পাটগ্রাম উপজেলায় বিদ্যামান অননুমোদিত সকল পাথরভাঙা ইউনিটসমূহ উচ্ছেদ এবং শুধুমাত্র ভাঙা পাথর আমদানির নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তাও রুলে জানতে চেয়েছেন হাইর্কোট।

পাশাপাশি অননুমোদিত পাথরভাঙা কার্যক্রমের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত শ্রমিকদের ক্ষতিপূরণ প্রদান ও চিকিৎসা নিশ্চিত করা ও এ কাজের ভয়াবহ দূষণ থেকে এলাকার পরিবেশ ও শ্রমিক সুরক্ষার নির্দেশ কেন প্রদান করা হবে না তাও জানতে চেয়েছেন।

এছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়কে পাথরভাঙা মালিকদের পূর্ণাঙ্গ তালিকা এবং পাথরভাঙা শ্রমিকের স্বাস্থ্যগত অবস্থা সম্পর্কিত প্রতিবেদনসহ সকল পাথরভাঙা শ্রমিকের তালিকা প্রস্তুত ও তা আদালতে দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বেলার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।

বেলা আরও জানায়, পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নের বুড়িমারী স্থলবন্দর দেশের একটি অন্যতম স্থলবন্দর। এ স্থলবন্দর দিয়ে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ৩০০/৪০০ ট্রাক পাথর আমদানি করা হয়। জেলার পাটগ্রাম উপজেলায় লালমনিরহাট থেকে পাটগ্রাম মহাসড়কের পাশে মির্জারকোর্ট নামক এলাকায় এবং পাটগ্রাম থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দর সড়কের উভয় পাশে উফারমারা, ঘুন্টিঘর, বুড়িমারী বাজার, বুড়িমারী স্থলবন্দর জিরো পয়েন্ট ও বুড়িমারী রেলস্টেশন নামক ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার বিভিন্ন স্থানে পরিবেশগত ছাড়পত্র গ্রহণ ব্যতীত অবৈধ ও অনিয়মতান্ত্রিকভাবে চলছে পাথর ভাঙার কার্যক্রম। উল্লেখিত এলাকাসমূহে প্রায় পাঁচ শতাধিক পাথর ভাঙ্গার মেশিন কার্যকর রয়েছে।

আইনবহির্ভূতভাবে পরিচালিত এ পাথর ভাঙ্গার মেশিনগুলো খোলা স্থানে তাদের কার্যক্রম পরিচালিত করায় এবং ধুলা ও শব্দ নিরোধক ব্যবস্থা না থাকায় উল্লেখিত এলাকাগুলো ধুলার রাজ্যে পরিণত হয়েছে। এসব ধুলাবালি মানুষের নিত্য ব্যবহার্য জিনিসপত্র নষ্ট করাসহ স্বাস্থ্যহানি ঘটাচ্ছে। সেইসাথে পাথরভাঙা মেশিনের ধোঁয়া, ধুলাবালি ও পাথরের গুঁড়া বাতাসে ছড়িয়ে পড়ায় বায়ু দূষণ এবং সৃষ্ট শব্দের কারণে শব্দ দূষণ ঘটছে যা এলাকার স্বাভাবিক পরিবেশ বিনষ্ট করাসহ মানুষের পরিবেশগত অধিকার মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন করছে। উল্লেখিত এলাকাগুলোতে পাথর ভাঙার বিরূপ প্রভাব বিষয়ে দেশের প্রধান প্রধান সংবাদপত্রে একাধিকবার সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে।

রিটের বিবাদীরা হলেন—পরিবেশ সচিব, ভূমি সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, শ্রম সচিব, সড়ক পরিবহন সচিব, বাণিজ্য সচিব, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তরের রংপুর বিভাগীয় কার্যালয়ের পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট ১৯ জন।

বাংলাদেশ সময়: ২০০০ ঘণ্টা, আগস্ট ২৩, ২০২২
ইএস/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।