পপসম্রাট আজম খানকে রাখা হয়েছে লাইফ সাপোর্ট রাখা হয়েছে। পেরিয়ে গেছে ১০০ ঘন্টারও বেশি সময় ।
আজম খানের বড় মেয়ে ইমা খান বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, তারা এখন ভীষণ দ্বিধার মধ্যে আছেন। সতীর্থ শিল্পীদের অনেকেই পপগুরুকে যতদিন সম্ভব লাইফ সাপোর্ট দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার পক্ষে।
বাংলানিউজ এ বিষয়ে দেশের কয়েকজন বরেণ্য শিল্পীর মমামত জানতে চেয়েছিল। শিল্পীদের সবাই আজম খানকে লাইফ সাপোর্ট দিয়ে যতদিন বাঁচিয়ে রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন। তারা এখনো মনে প্রাণে বিশ্বাস করেন, আবারও সুস্থ হয়ে গানের জগতে ফিরে আসবেন পপগুরু।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের রকলিজেন্ড আইয়ুব বাচ্চু বলেন, ‘আল্লাহ-তায়ালার ইচ্ছাতে পৃথিবীতে অনেক অসম্ভব ঘটনাও ঘটে। শরীরের সবকিছু অচল ও অসাড় হয়ে যাওয়ার পরও নিশ্চিত মৃত্যুর মুখ থেকে কেউ কেউ আল্লাহর রহমতে ফিরে এসেছেন। আজম খান একজন উঁচু মনের দরদী মানুষ। আমার বিশ্বাস, এই মানুষটার প্রতি সৃষ্টিকর্তা মুখ তুলে তাকাবেন। দেশের লাখো মানুষের প্রার্থণা তিনি শুনবেন। আমাদের গুরুকে ফিরিয়ে দিবেন জীবন। তাই চিকিৎসকদের অনুরোধ জানিয়েছে, আজম খানকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া লাইফ সাপোর্ট চালিয়ে যাওয়ার জন্য’।
জনপ্রিয় গায়ক ফকির আলমগীর বললেন, ‘কথায় আছে যতোক্ষণ শ্বাস ততোক্ষণ আশ। আজম খানের বেঁচে থাকার আশা আমরা ত্যাগ করতে চাই না। খোঁজ নিয়ে জেনেছি, তার প্রেসার এখন স্বাভাবিক। কিডনিও কাজ করছে। তার মানে একটু একটু করে ভালো হয়ে উঠছেন। এই মানুষটার মধ্যে আমি সবসময় অসম্ভব জীবনীশক্তি দেখেছি। তাই তার পরিবারের প্রতি আমার পরামর্শ, তারা যেন ধৈর্য্য না হারায়। চিকিৎসকদের কাছে আমার অনুরোধ লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলার কথা যেন তারা না ভাবেন। আমার বিশ্বাস আজম খান ফিরে আসবেন’।
নগরবাউল জেমস আজম খানকে দেখতে একাধিকবার স্কয়ার হাসপাতালে গিয়েছিলেন। পপসম্রাটকে লাইফ সাপোর্টে রাখা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ ভরসা। আজম খানের সুস্থতার জন্য ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে লাখো মানুষ প্রার্থনা করছে। এতোগুলো মানুষের দোয়া বিফলে যেতে পারে না। পৃথিবীতে এর চেয়েও বাজে অবস্থা থেকে আবার জীবন ফিরে পাবার দৃষ্টান্ত রয়েছে। তাই গুরুর লাইফ সাপোর্ট খুলে না ফেলার জন্য আমি চিকিৎসকদের কাছে আহ্বান জানাই। প্রক্রিয়াটি ব্যয়বহুল। তাতে কী! আজম খানের অপারেশনও ছিল ব্যয়বহুল। অর্থের জন্য সেটা আটকে থাকে নি। আমার তার শিল্পী ভাইয়েরা এখনো বেঁচে আছি। এবারও আটকাবে না’।
জনপ্রিয় কণ্ঠশিল্পী ফাহমিদা নবীও আশা করছেন আবারও সুস্থ হয়ে উঠবেন আজম খান। তিনি বলেন, ‘লাইফ সাপোর্ট দেয়া হয় মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য। লাইফ সাপোর্ট থেকে অনেকেই আবার সুস্থ ও স্বাভাবিক জীবনে ফিরেছেন। আমার বিশ্বাস, আজম খানও সুস্থ হয়ে উঠবেন। তার পরিবারকে ধৈর্য্য না হারানোর জন্য অনুরোধ জানাই’।
বাংলাদেশ মিউজিক্যাল ব্যান্ড এসোসিয়েশন (বামবা)-এর সভাপতি হামিন আহমেদ পপগুরুর সুস্থতা কামনা করে বলেন, আজকে আমরা যে ধারায় গান করছি তার পথিকৃত পপগুরু আজম খান। যতোক্ষণ তার দেহে প্রাণের স্পন্দন আছে, ততোক্ষণ আমরা আশা ছাড়তে রাজি নই। এজন্য যতোদিন দরকার ততোদিন গুরুকে লাইফ সাপোর্টে রাখার জন্য অনুরোধ জানাচ্ছি। এতে অর্থসংকুলনের ঘাটতি হলে বামবা পপগুরুর চিকিৎসা সহায়তার জন্য প্রয়োজনে আবারও একাধিক কনসার্টের আয়োজন করবে।
শিল্পী সমাজের পরামর্শে আজম খানের পরিবার পপগুরুর লাইফ সাপোর্ট খুলে রাখার প্রশ্নে চিকিৎসকদের এখনও কোনো সিদ্ধান্ত জানায় নি।