‘যিনি রাঁধতে জানেন, তিনি চুলও বাঁধতে পারেন’-- এ কথা কী সবার জন্যই! না, নিশ্চয়ই নয়। সবাই সবদিক ঠিক রেখে এগিয়ে যেতে পারেন না।
কত বছর হলো অভিনয়ে? তা এক যুগ তো হবেই। জানালেন সুমাইয়া শিমু। শুরুতে ছোট ছোট চরিত্র। অভিনয়টা ছিল শখের মতো। এরপর নির্মাতাদের আস্থা অর্জন। গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রে নিজেকে প্রমাণ। শখ থেকে নেশা, তারপর পেশা হিসেবে অভিনয়টা গ্রহণ। ক্রমেই গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র থেকে প্রধান চরিত্রে অভিনয়। দর্শকদের হৃদয়ে জায়গা করে নেওয়া।
সুমাইয়া শিমুর অভিনয়জীবনের টার্নিং পয়েন্ট ধারাবাহিক নাটক ‘স্বপ্নচূড়া’। এ নাটকে অনবদ্য অভিনয় তাকে নিয়ে যায় আলাদা উচ্চতায়। একুশে টিভির ‘ললিতা’ নাটকের নামভূমিকায় অভিনয় করে সুমাইয়া আরেকবার প্রমাণ করেছেন তার অভিনয়ক্ষমতা। নিজের অভিনয় সম্পর্কে শিমুর মূল্যায়ন: এখনো আমি শেখার মধ্যেই আছি। নিজের অভিনয় নিয়ে পুরোপুরি তৃপ্ত হতে পারিনি কখনো। মনে হয়েছে, আরো ভালো করা যেতো বা আরো ভালো করা উচিত ছিল।
শুরুর দিকের কিছু কাজ ছাড়া অভিনয়ে শিমু বরাবরই চুজি। দেখে-শুনে-বুঝে তবেই কাজ করেন। সব অভিনয়শিল্পীর মতোই মনের মধ্যে লালন করেন ব্যতিক্রমী চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ। শিমু অভিনীত তিনটি ধারাবাহিক নাটক এখন বিভিন্ন চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে ললিতা, এফএনএফ ও প্রজাপতি মন।
একাডেমিক পড়াশোনাতেও সুমাইয়া শিমু স্পর্শ করতে চলেছেন উচ্চতর শিখর। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সরকার ও রাজনীতি বিষয়ে এমএসএস করার পর নাটক ও নাট্যতত্ত্ব বিভাগ থেকে এমফিল করেন শিমু । এমফিল করাকালীন ফার্স্ট পার্টে প্রথম বিভাগে উত্তীর্ণ হন। এ কারণে সেকেন্ড পার্ট না করেই তিনি পিএইচডি শুরু করেন। পিএইচডি করা প্রসঙ্গে শিমু বলেন, আমি পিএইচডি করি এটা আমার যেমন স্বপ্ন, তার চেয়ে বেশি স্বপ্ন দেখেন আমার বাবা-মা। তাদের স্বপ্নকে সত্যি করতেই অনেক কাজের ঝামেলা থাকা সত্ত্বেও ক মাস হলো পিএইচডি শুরু করেছি। শিমুর পিএইচডির বিষয় : ‘বাংলাদেশের গণমাধ্যমে নারীর অভিনয় : শৈল্পিক ও আর্থ-সামাজিক পরিপ্রেতি’। তার তত্ত্বাবধায়ক জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. আফসার আহমেদ। পিএইচডি করার পর নিজের নামের শুরুতে ড. শব্দটি যুক্ত হবে, এটা ভাবতেই যেন ভালো লাগে শিমুর।
ধাপের পর ধাপ ডিঙিয়ে অভিনয়ে কাক্সিক্ষত অবস্থানে পৌঁছে যাওয়া, উচ্চশিক্ষার শেষ প্ল্যাটফর্মে পা রাখা; এতকিছুর পর কিছু যেন বাকি রয়ে যায়। হ্যাঁ, সমসাময়িক সব অভিনেত্রী বিয়ের পিঁড়িতে বসলেও এখনো কনে সাজা হয়নি সুমাইয়া শিমুর। বিশেষ করে এখন যেমন তারকাদের বিয়ে করার ধুম পড়েছে, এ অবস্থায় কতদিন আর একা একা থাকবেন সুমাইয়া শিমু? এ প্রসঙ্গে শিমু বলেন, বিয়ে তো করতেই হবে। একজীবন তো আর একা একা কাটিয়ে দেয়া যায় না। তবে পিএইচডি শেষ না হলে আমি এ নিয়ে ভাবতে চাই না। বাবা-মা ভাবছেন অনেকদিন ধরে। তাদের ভাবনাকে সম্মান করতে চাই। তাই আমার বিয়ের ব্যাপারে আমার চেয়ে বাবা-মার কাছে জানতে চান তারাই ভালো বলতে পারবেন।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৫২০, অক্টোবর ০৩, ২০১০