‘ধীরে চলো আপন ঘরে’ গানটির মাধ্যমে শুরু হলো নরেন বিশ্বস পদক প্রদান অনুষ্ঠান। তারপর ঘোষণা দেয়া হলো এ বছর বাকশিল্পাচার্য নরেন বিশ্বাস পদক পেলেন নন্দিত আবৃত্তি শিল্পী ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর।
২৭ নভেম্বর সন্ধ্যায় এই বাকশিল্পীর ১২তম প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় গণগ্রন্থাগারের শওকত ওসমান মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ পদক বিতরণ করা হয়। আসাদুজ্জামান নূরকে পদক পরিয়ে দেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী এবং ১০ হাজার টাকার চেক প্রদান করেন কণ্ঠশীলনের সাধারণ সম্পাদক আহমাদুল হাসান হাসনু।
দেশের অন্যতম নেতৃস্থানীয় আবৃত্তি সংগঠন কণ্ঠশীলন আয়োজিত এই পদক বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সহ-সভাপতি গোলাম কুদ্দুস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সৌরভ শিকদার, আবৃত্তিকার আশরাফুল আলম এবং কণ্ঠশীলন সভাপতি শিল্পী কাইয়ুম চেীধুরী।
আসাদুজ্জামন নূর তার অনুভূতি ব্যক্ত করে বলেন, তার পাওয়া অন্যান্য পুরস্কারের মধ্যে এই পুরস্কারটি বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। ‘এই পুরস্কারটি পেয়ে আমি গর্বিত বোধ করছি। ’
নরেন বিশ্বাসকে একজন শুদ্ধতম বাঙালি হিসেবে উল্লেখ করে নূর বলেন, ‘নরেন বিশ্বাস বাংলা ভাষা, বাঙালি মূল্যবোধ, দেশ ও দেশের মানুষের প্রতি ভালোবাসা আত্মস্থ করেছিলেন। ’
তিনি আরো বলেন, অশুভের বিরুদ্ধে শুভের লড়াই, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে গণতন্ত্রের লড়াই, শোষকের বিরুদ্ধে শোষিতের লড়াই চলবে। এটা চালিয়ে গেলেই নরেন বিশ্বাস-এর প্রতি শ্রদ্ধা জানানো হবে।
নবীন আবৃত্তিকারদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, শুধু ভালো উচ্চারণ করলেই হবে না, কবিতার গূঢ় অর্থ বুঝতে হবে। শব্দের ভেতর লুকিয়ে থাকা রহস্য বোঝার চেষ্টা করতে হবে।
আসাদুজ্জামান নূর তার অনুভূতি প্রকাশ শেষে সৈয়দ শামসুল হকের অনবদ্য কাব্যনাটক ‘নূরলদীনের সারা জীবন’ থেকে অংশবিশেষ আবৃত্তি করেন।
অনুষ্ঠানে নরেন বিশ্বাসের কর্মময় জীবন ও স্মৃতিচারণ করে আলোচকরা বলেন, নরেন বিশ্বাস ছিলেন একাধারে একজন বাকশিল্পী, কবি, নাট্যকার, শিক্ষক ও প্রশিক্ষক। দেশের বাকশিল্প উন্নয়নে তিনি অনন্য অবদান রেখে গেছেন।
১৯৯৮ সালে নরেন বিশ্বাসের মৃত্যুর পরের বছর থেকে তার নামে প্রবর্তিত এই পুরস্কার এর আগে পেয়েছেন নাজিম মাহমুদ (মরণোত্তর), গোলাম মুস্তাফা, নিখিল সেন, সন্জীদা খাতুন, ভাস্বর বন্দ্যোপাধ্যায়, খান সারওয়ার মুরশিদ, সৈয়দ হাসান ইমাম প্রমুখ।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১৫০৪, নভেম্বর ২৮, ২০১০