বিজয়ের এই মাসে দেশজুড়ে চলছে নানা আয়োজন। টিভি চ্যানেলগুলোতে শুরু হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ অনুষ্ঠান ও নাটক প্রচার।
এ দেশে টিভি সম্প্রচার কার্যক্রম শুরু হয়েছিল ১৯৬৪ সালের ২৫ ডিসেম্বর। তৎকালীন ঢাকার ডিআইটি ভবনের স্টুডিও থেকে প্রচারিত প্রথম টিভিনাটক ছিল ‘একতলা দোতলা’। শহীদ মুনীর চৌধুরী রচিত ও মনিরুল আলম প্রযোজিত এ নাটকটি স্টুডিও থেকে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়, কারণ রেকর্ড করে প্রচারের প্রযুক্তি দেশে তখনও আসেনি। টিভি সম্প্রচার শুরুর কিছুদিনের মধ্যেই দেখা গেলো, নাটকই বেশি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। জনপ্রিয়তার কারণে নানা সীমাবদ্ধতার মাঝেও স্বাধীনতার আগে থেকেই নিয়মিত টিভি নাটক প্রচার হতো। তবে পরাধীন দেশে গণআন্দোলন বা জাতীয় চেতনার ছবি শাসকগোষ্ঠীর চোখ রাঙানির কারণে টিভি নাটকে সরাসরি আসতে পারেনি সেই সময়। আকার-ইঙ্গিতে প্রতীকীভাবে এসেছে অধিকার-স্বাধিকারের বাণী।
টেলিভিশন প্রতিষ্ঠার সাড়ে ছয় বছর পর ১৯৭১ সালে শোষণ ও বঞ্চনার অচলায়তন ভাঙার বিদ্রোহে অগ্নিগর্ভ হয়ে দেশ। মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগেই তৎকালীন ঢাকা টেলিভিশনে সম্প্রচারিত অনুষ্ঠানমালায় বিদ্রোহের আবহ ছড়িয়ে পড়ে। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রস্তুতিপর্বে ১৯৭১ সালের ২১ মার্চ ঢাকা টেলিভিশন কেন্দ্র থেকে প্রচারিত হয় ‘আবার আসিব ফিরে’ নামের একটি নাটক। সৈয়দ মাহমুদ আহমেদের কাহিনীকে নাট্যরূপ দিয়েছিলেন প্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব আবদুল্লাহ আল মামুন। এ নাটকে সরাসরি দেশের জন্য জীবন দিয়ে লড়াই করার আহ্বান জানানো হয়েছিল।
একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে টেলিভিশনের অনেক কর্মীই সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। ভারতে গিয়ে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের মাধ্যমে যারা মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে কাজ করেন তাদের মধ্যে জামিল চৌধুরী, মুস্তাফা মনোয়ার, মুস্তাফিজুর রহমান অন্যতম। টেলিভিশনের প্রায় ২০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী পকিস্তান সরকারের পক্ষ ত্যাগ করে কাজে যোগদান থেকে বিরত থাকেন। লাহোর টেলিভিশন থেকে কর্মী এনে টিভি সম্প্রচার চালু রাখা হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় যারা একসময় টিভিতে ছোটদের অনুষ্ঠান বা নাটকে অংশ নিয়েছেন, সেইসব গেরিলারা ডিআইটি ভবনের টিভি টাওয়ারে বোমা বিস্ফোরণ ঘটান। গেরিলাদের মধ্যে ছিলেন মাহবুব আলী, নজিবুল্লাহ , আহসান নেওয়াজ বাবু প্রমুখ। টিভি ভবনে এত নিরাপত্তার পরও বোমা বিস্ফোরণে স্তম্ভিত হয়ে যায় পাকিস্তানি শাসকরা। একাত্তরের ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানিদের আত্মসমর্পণের পরপরই একদল মুক্তিযোদ্ধা টিভি ভবনে প্রবেশ করেন। মুক্তিযোদ্ধা ক্র্যাকপ্ল্যাটুনে ছিলেত প্রয়াত শাহাদাত চৌধুরী, নাসির উদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, রাইসুল ইসলাম আসাদসহ আরো অনেকে। ১৭ ডিসেম্বর টিভি স্ক্রিনে ভেসে ওঠে নতুন টেলপ ‘বাংলাদেশ টেলিভিশন’।
স্বাধীনতার পর বাংলাদেশ টেলিভিশনে প্রচার হওয়া প্রথম নাটকটিই ছিল মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক। ‘বাংলা আমার বাংলা’ নামের এ নাটকটির রচনায় ছিলেন ড. ইনামুল হক এবং প্রযোজনায় ছিলেন আবদুল্লাহ আল মামুন। একাত্তরের ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে প্রদর্শিত এ নাটকের প্রধান চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন আবুল হায়াত। ১৯৭২-এর মধ্যবর্তী সময়ে বিটিভিতে প্রচারিত একটি আলোচিত মুক্তিযুদ্ধের নাটক ‘জনতার কাছে আমি’। আমজাদ হোসেন রচিত ও মুস্তাফিজুর রহমান পরিচালিত এ নাটকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ-বিপক্ষের চিত্র তুলে ধরা হয়েছিল নাটকীয়ভাবে। কাছাকাছি সময়ের আরেকটি উল্লেখযোগ্য নাটক ‘এরা ছিল এধারে’। মোর্শেদ চৌধুরী রচিত এ নাটকটি প্রযোজন করেছিলেন মোহাম্মদ বরকতউল্ল্যাহ। এতে মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন দেশে অবস্থানরত মানুষদের স্বাধীনতার পক্ষে কাজ করার চিত্র তুলে ধরা হয়। ১৯৭৩ সালে আবদুল্লাহ ইউসুফ ইসামের প্রযোজনায় ‘প্রতিদ্বন্দ্বী’ নাটকে প্রতীকীভাবে আসে যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ের স্বাধীন দেশের বিশৃঙ্খল প্রেক্ষাপট। নাটকটির নাট্যকার ছিলেন জেসমিন চৌধুরী। ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ের টিভি নাটকে মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ এসেছে বার বার। পরে বিটিভিতে মুক্তিযুদ্ধের নাটক প্রধানত স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসের মধ্যে সীমিত হয়ে পড়ে।
আশির দশকে পদার্পণের আগে আরো কিছু মানসম্পন্ন মুক্তিযুদ্ধের নাটক বিটিভিতে প্রচারিত হয়। এর মধ্যে জিয়া আনসারীর রচনায় ‘কোনো এক কুলসুম’, আতিকুল হক চৌধুরী রচিত ও প্রযোজিত ‘কম্পাস’, রাবেয়া খাতুন রচিত ও মোহাম্মদ আবু তাহেরের প্রযোজিত ‘বাগানের নাম মালানীছড়া, জোবেদ খান রচিত ও বদরুন্নেসা আবদুল্লাহ প্রযোজিত ‘একটি ফুলের স্বপ্ন’ এবং রাজিয়া মজিদ রচিত ও বদরুন্নেসা আবদুল্লাহ প্রযোজিত ‘জোৎস্নার শূন্য মাঠ’ প্রভৃতি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
শুধু মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক টিভি নাটকই নয়, সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশের নাটক মানগত উৎকর্ষে অগ্রগামী হয়ে উঠে আশির দশকে। গণমাধ্যম হিসেবে টেলিভিশন আরো বিস্তৃত হয়। সাদাকালো থেকে রঙিন যুগে পদার্পণ করে টিভি মিডিয়া। বিটিভির নাটকের জনপ্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ে দেশ ছাড়িয়ে পশ্চিমবঙ্গেও। আশির দশকেই সবচেয়ে বেশি মানসম্পন্ন মুক্তিযুদ্ধের টিভি নাটক নির্মিত ও প্রচার হয়। যার মধ্যে আলাদাভাবে ‘আমার দ্যাশের লাগি’ ও ‘এই সেই কণ্ঠস্বর’ নাটকের নাম উল্লেখ করতে হয়। হাবিবুল হাসানের রচনায় ও আবদুল্লাহ আল মামুনের প্রযোজনায় ‘আমার দ্যাশের লাগি’ নাটকে আল-মনসুরের হৃদয়ছোঁয়া অভিনয় আজও অনেক পুরনো দিনের দর্শকের চোখে লেগে আছে। মমতাজ উদ্দীন আহমেদের রচনা ও মোস্তফা কামাল সৈয়দের প্রযোজনায় ‘এই সেই কণ্ঠস্বর’ নাটকে অভিনয় করেন টিভি মিডিয়ার সেরা জুটি আফজাল হোসেন ও সুবর্ণা মুস্তাফা। এ নাটকে মুক্তিযুদ্ধ ও প্রেম দুটো বিষয়কে সমান্তরালভাবে তুলে ধরা হয়। আশির দশকের আলোচিত মুক্তিযুদ্ধের টিভিনাটকের মধ্যে আরো আছে আবদুল্লাহ আল মামুনের রচনা ও প্রযোজনায় ‘আয়নার বন্ধুর মুখ’ ও ‘একটি যুদ্ধ অন্যটি মেয়ে’। আসাদুজ্জামান নূরের রচনায় একই প্রযোজকের ‘এ মোর অহংকার’, রাহাত খানের রচনায় ও ম হামিদের প্রযোজনায় ‘সংঘর্ষ’, আল মনসুরের রচনা ও প্রযোজনায় ‘শেকল বাঁধা নাও’ ও ‘নয়ন সমুখে তুমি নাই’, আতিকুল হক চৌধুরীর রচনা ও পরিচালনায় ‘যদিও দূরের পথ’ ও ‘স্বর্ণতোড়ণ’, মামুনুর রশীদ রচনায় ও মুস্তাফিজুর রহমানের প্রযোজনায় ‘খোলা দুয়ার’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য। আশির দশকের শেষ ভাগেই মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী ও চেতনা নিয়ে ধারাবাহিক নাটক নির্মাণ শুরু হয়। সাইফুল বারী রচিত ও জিয়া আনসারী প্রযোজিত ‘জোনাকী জ্বলে’ এবং আমজাদ হোসেন রচিত ও ফখরুল আবেদীন প্রযোজিত ‘জন্মভূমি’ নামের দুটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক ধারাবাহিক নাটক বিটিভিতে প্রচারিত হয়।
নব্বইয়ের দশকে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটে যায় টিভি মিডিয়ায়। আকাশ-সংস্কৃতির যুগে প্রবেশ করে বাংলাদেশ। নব্বইয়ের মাঝামাঝিতে প্যাকেজের আওতায় বেসরকারি উদ্যোগে নাটক প্রচার শুরু হয়। ১৯৯৭ সালে আত্মপ্রকাশ করে দেশের প্রথম স্যাটেলাইট চ্যানেল এটিএন বাংলা। ১৯৯৯ সালে আত্মপ্রকাশ করে চ্যানেল আই। একুশে টিভি আসে ২০০০ সালে। স্বাভাবিকভাবেই টিভি মিডিয়ার আওতা ও পরিধি বেড়ে যায়। নব্বইয়ের দশকে বিটিভিতে প্রচারিত উল্লেখযোগ্য মুক্তিযুদ্ধের নাটকের মধ্যে রয়েছে হাবিবুল হাসানের রচনা ও নূরুজ্জামান শেখের প্রযোজনায় ‘মেঘের ছায়ার নিচে’, আখতার ফেরদৌস রানা (ফেরদৌস হাসান) রচিত জিয়া আনসারীর প্রযোজনায় ‘সেই এক গায়েন’, মোস্তফা কামাল রচিত ও বদরুজ্জমান প্রযোজিত ‘পোড়া মাটির গন্ধ’, বুলবন ওসমান রচিত ও কাজী কাইয়ুম প্রযোজিত ‘পুষ্পের পবিত্রতা’, নাসির আহমেদ রচিত ও আলাউদ্দিন আহমেদ প্রযোজিত ‘কোনো এক বুলা গল্প’, মুহম্মদ রওশন আলী রচিত ও ফিরোজ মাহমুদ প্রযোজিত ‘নীল নকশা’ প্রভৃতি। বিটিভিতে প্যাকেজের আওতায় নির্মিত নাটকে মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গ তুলনামূলক কমই এসেছে। প্যাকেজের আওতায় ফেরদৌস হাসানের রচনা ও পরিচালনায় ‘ঠিকানা’ এবং রেজানুর রহমানের রচনা ও পরিচালনায় নির্মিত মুক্তিযুদ্ধের নাটক ‘পতাকা’ নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়। ২০০১ সালে বিটিভিতে প্রচারিত তারিক আনাম খানের ‘জেরা’ নাটকটিও মুক্তিযুদ্ধের একটি ভালো নাটক হিসেবে স্বীকৃত। কাছাকাছি সময়ে আবুল হায়াতের রচনা ও পরিচালনায় নির্মিত মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক টেলিফিল্ম ‘পিতা’ দর্শকদের কাছে প্রশংসিত হয়।
নতুন শতাব্দীতে পদার্পণের পরবর্তী সময়ে বেসরকারি টেলিভিশনের আগমনে বিটিভির দর্শক দিন দিন কমতে থাকে। বিটিভির স্বীকৃত ও পরীক্ষিত (প্রযোজক) নির্মাতারও বিভিন্ন চ্যানেলে ছড়িয়ে পড়েন।
স্যাটেলাইট চ্যানেল এটিএন বাংলা নতুন শতকের প্রথম বছরে শুরু করে ‘কোন সীমানায় মুক্তি’ নামের একটি মুক্তিযুদ্ধের ধারাবাহিক নাটক প্রচার। এটি রচনা ও পরিচালনায় ছিলেন সাইদুর রহমান জুয়েল। এই চ্যানেলে ২০০৫ সালে প্রচার হওয়া মামুনুর রহমানের রচনা ও পরিচালনায় প্রচারিত মুক্তিযুদ্ধের নাটক ‘অচেনা বন্দর’ আলোচিত হয় সুধীমহলে। এটিএন বাংলা চ্যানেলে ২০০৭-এর বিজয় দিবসে প্রচার হওয়া মাসুম রেজা রচিত ও রিপন নবী পরিচালিত ‘একটি আত্মহত্য’ নাটকটিও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় নির্মিত। ২০১০ সালের স্বাধীনতা দিবসে এটিএন বাংলায় প্রচার হওয়া তানভির হোসেন প্রবালের রচনা ও পরিচালনায় ‘তুফান আলীর ভূত’ টেলিফিল্মটিও মুক্তিযুদ্ধের একটি ভালো কাজ।
মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক প্রচারে মুন্সিয়ানার পরিচয় দেয় চ্যানেল আই। সম্প্রচার শুরু হবার পর থেকে এই স্যাটেলাইট চ্যানেলে বেশ কিছু ভালো মুক্তিযুদ্ধের নাটক প্রচার করা হয়েছে। এর মধ্যে আলোচিত হয়েছে রাবেয়া খাতুনের গল্প অবলম্বনে মাসুম রেজার চিত্রনাট্য রচনা ও সাইদুল আনাম টুটুলের পরিচালনায় টেলিফিল্ম ‘বিজয় নিশান’। একই চ্যানেলে প্রচারিত সাইদুল আনাম টুটুলের রচনা ও পরিচালনায় ‘গল্পের শেষ আছে’ নাটকটিও মুক্তিযুদ্ধের একটি ভালো কাজ চ্যানেল আইতে প্রচার হওয়া খালেদ মাহমুদ মিঠু নির্মিত ‘ধূসর অ্যালবাম’ ও ‘স্মৃতি সপ্তাহ’ এবং আবুল হায়াতের ‘অগ্নিদিনে তাহারা’ ও ‘খোঁজ’ নাটকগুলোতেও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ফুটে ওঠেছে দারুণভাবে।
মোস্তফা সরয়ার ফারুকী নির্মিত ‘স্পার্টাকাস ৭১’ চ্যানেল আইতে প্রচার হয় ২০০৭ সালে, একই চ্যানেলে ২০০৮ সালে প্রচারিত হয় তার ‘এমন দেশটি কোথাও খুঁজে পাবে নাকো তুমি’ নামে দুটি মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক। দুটো নাটকই বেশ প্রশংসা অর্জন করে।
বন্ধ হয়ে যাওয়া টেরিস্টোরিয়াল চ্যানেল একুশে টিভিতেও বেশ কিছু মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক প্রচার হয়েছে যার মধ্যে গিয়াসউদ্দীন সেলিমের ‘পাপপুণ্য’, আবদুল্লাহ রানার ‘বলাকা’, অরণ্য আনোয়ারের ‘জন্ম’ প্রভৃতি উল্লেখযোগ্য।
২০০৩ সালে আত্মপ্রকাশ করা এনটিভিতে এ পর্যন্ত বেশ কিছু ভালো মুক্তিযুদ্ধের নাটক দেখানো হয়েছে। যার মধ্যে মোরশেদুল ইসলামের রচনা ও পরিচালনায় ‘শেকড়’ নাটকটির আলাদাভাবে উল্লেখযোগ্য। এতে আজকের প্রজন্মের অনুভূতির সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সময় মুক্তিযোদ্ধাদের অনুভূতির সাদৃশ্য খোঁজা হয়েছে। এছাড়া ২০০৯ সালে এনটিভিতে প্রচার হওয়া মুহম্মদ জাফর ইকবালের গল্প অবলম্বনে গোলাম সোহরাব দোদুল নির্মিত ‘মুক্তি’ এবং ইরাজ আহমেদের রচনায় ও জহির উদ্দিন পেয়ার পরিচালিত ‘পেছনে তখন’ নাটক দুটোও বেশ প্রশংসিত হয়েছে। আরটিভি, বাংলাভিশন, বৈশাখী টিভি ও দেশটিভির সম্প্রচার শুরু হওয়ার পর পর দেখানো হয়েছে একাধিক মুক্তিযুদ্ধের নাটক। যার মধ্যে আলোচিত হয়েছে ২০০৮ সালে বাংলাভিশনে প্রচার হওয়া ফেরদৌস হাসানের রচনা ও পরিচালনায় নাটক ‘দাগ’। একই বছর সৈয়দ শামসুল হক রচিত ও আশরাফী মিঠু পরিচালিত ‘ম্যাজিক’ নাটক দেশ টিভিতে প্রচার হওয়ার বেশ প্রশংসা অর্জন করে।
২০১০ সালের স্বাধীনতা দিবসে একুশে টিভিতে প্রচার হওয়া তাহের শিপনের ‘কক্ষপথের যুদ্ধ’ মুক্তিযুদ্ধের একটি ভালো নাটক হিসেবে প্রশংসিত হয়েছে।
চলতি বছরের ডিসেম্বরকে সামনে রেখেও সব চ্যানেলই মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক নাটক প্রচারের উদ্যোগ নিয়েছে। এর মধ্যে দেশ টিভিতে প্রচার শুরু হয়েছে ১৬ পর্বের প্রতিদিনের ধারাবাহিক নাটক ‘মুক্তিযুদ্ধ-১৯৭১’। কথাসাহিত্যিক মাহবুব আলমের উপন্যাস ‘গেরিলা থেকে সম্মুখযুদ্ধে’ অবলম্বনে চিত্রনাট্য লিখেছেন মহিউদ্দিন আহমেদ, পরিচালনা করেছেন পারভেজ আমীন। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে এ ধরনের প্রতিদিনের নাটক এবারই প্রথম প্রচার হচ্ছে। এবারের ১৬ ডিসেম্বরে সব চ্যানেলই প্রচার করবে মুক্তিযুদ্ধের বিশেষ নাটক।
বাংলাদেশ স্থানীয় সময় ১২৩৫, ডিসেম্বর ০২, ২০১০