ঢাকা, মঙ্গলবার, ১০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ২৪ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৬

লাইফস্টাইল

ফাগুন দিনের আগুন

বিপুল হাসান | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫৮ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১১

‘বসন্ত বাতাসে সই লো বসন্ত বাতাসে, বন্ধুর বাড়ির ফুলের গন্ধ আমার বাড়ি আসে রে...’  ঋতুরাজ বসন্ত এলে কাউকে বলে দিতে হয় না। ফুলের  মৌ  মৌ গন্ধে প্রাণে জাগে দোলা।

হৃদয়ে জাগায় আবেগ, মনকে করে তোলে মাতাল। বসন্তের প্রথম দিনে বাসন্তী রঙের ঢল নামে রাজপথে। নগরীতে শুরু হয় উৎসব, বসন্ত উৎসব।

ফাগুন দিনের আগুন সবার মতোই ছুঁয়ে যায় আমাদের শোবিজের মানুষদের মাঝেও। শোবিজে পহেলা ফাল্গুন পালনের প্রস্তুতি আজকাল চোখে পড়ার মতো। অনেক সেলিব্রিটিই এই দিনটির শিডিউল ফাঁকা রাখেন, প্রিয়জনদের নিয়ে ঘুরে বেড়ানোর জন্য। বসন্তকে স্বাগত জানান তারা রঙিন সাজ-পোশাকে। আসুন, সেলিব্রিটিদের মুখ থেকেই শুনি বসন্ত নিয়ে তাদের অনুভূতি আর বসন্ত বরণের গল্প।

 বসন্ত এলে আমি গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলি : হুমায়ূন আহমেদ

বসন্ত এলে গাছে গাছে নতুন পাতা গজায়, ফুল ফোটে। গাছগুলো ফিরে পায় তাদের যৌবন। বসন্ত এলে আমি গাছগুলোর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলি। কারণ প্রতি বসন্তেই বৃক্ষ-তরু তাদের যৌবন ফিরে পায়। কিন্তু মানুষের জীবনে যৌবন একবার গেলে আর ফিরে আসে না। তাই প্রতি বসন্তেই আমার মনে হয়, মানবজনমের চেয়ে বৃক্ষজনমই ভালো ছিল।

আমাদের সময় এমন বাসন্তী রঙের ছড়াছড়ি ছিল না : আলী যাকের

আজকাল বসন্ত উৎসব-নবান্ন উৎসব বেশ ঘটা করে উদযাপন করা হচ্ছে। দেখে শান্তি পাই। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতি মানুষের আগ্রহ-উৎসাহ দিন দিন বাড়ছে। এটা আনন্দের বিষয়। এখন যেমন রাস্তায় বাসন্তী রঙের পোশাকে ছেলেমেয়েদের ঢল দেখে বুঝা যায়, বসন্ত এসেছে। আমাদের সময় এমন বাসন্তী রঙের ছড়াছড়ি ছিল না। ঢাকা শহরের বিভিন্ন রাস্তার পাশে তখন ছিল কৃষ্ণচূড়া গাছ। কৃষ্ণচূড়ার লাল আগুন দেখে আমরা বুঝে নিতাম, বসন্ত এসেছে।

 বসন্তের প্রথম দিনে আমরা একটু সাজগোজ করে বাসা থেকে বের হতাম : ফেরদৌসী মজুমদার

ছাত্রজীবনে আমরা ঘরোয়াভাবে বন্ধু-বান্ধব মিলে নিজেরা নিজেরা পহেলা ফাল্গুন পালন করতাম। এখনকার মতো উৎসব আমেজে বসন্ত বরণের রেওয়াজ তখন চালু হয়নি। বাঙালির সাংস্কৃতিক উৎসব বলতে ছিল এক পহেলা বৈশাখ। যা দু-চারটা অনুষ্ঠান হতো, তা বাংলা নববর্ষেই। বসন্তের প্রথম দিনে আমরা একটু সাজগোজ করে বাসা থেকে বের হতাম। বাসন্তী রঙের শাড়ি না হলেও উজ্জ্বল রঙের শাড়ি পরতাম।

বসন্ত নিয়ে আমার একটা গান আছে : কুমার বিশ্বজিৎ

শিল্প-সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত হবার পর থেকে দেখে আসছি চট্টগ্রামে বসন্ত বরণের নানা অনুষ্ঠান। তবে তা এখনকার মতো জমকালো ছিল না। বিভিন্ন সংগঠন বিচ্ছিন্নভাবে পহেলা ফাল্গুন পালন করতো। অল্প বয়সে এরকম দু-একটা অনুষ্ঠানে আমার গান গাওয়ার অভিজ্ঞতাও আছে। বসন্ত নিয়ে আমার একটা গান আছে। আমার খুব পছন্দের গান। গানটি হলো, বসন্ত ছুঁয়েছে আমাকে ঘুমন্ত মন তাই জেগেছে।

পহেলা ফাল্গুনের দিনটি কাটবে আমার ‘চৈতাপাগল’ ধারাবাহিকটির শুটিংয়ে : মাহফুজ আহমেদ

এই বসন্তে আমার যে কী হবে বা আমি যে কী করবো, তা বুঝতে পারছি না। কারণ সময় ঘনিয়ে এসেছে। ফাল্গুনের পরেই আসছে চৈত্র। এটা বোধহয় জানেন সবাই যে, চৈত্র মাস এলে চৈতাপাগলের মাথাটা বেশি গরম হয়ে যায়। এই মুহূর্তে আমি যার মধ্যে ডুবে আছি, সেই চৈতা পাগলের কথাই আসলে বললাম এতক্ষণ। পহেলা ফাল্গুনের দিনটি কাটবে আমার ‘চৈতাপাগল’ ধারাবাহিকটির শুটিংয়ের মধ্যেই।

এখন কাজের চাপে পহেলা ফাল্গুনের কথা মনেই থাকে না : আফসানা মিমি

একটা সময় বসন্ত-বৈশাখ উদযাপনের জন্য উৎসব আয়োজনে আমি নিজেও জড়িত ছিলাম। ফাল্গুনের প্রথম দিনে কী পরব, কী করব, এই নিয়ে একসপ্তাহ আগে থেকেই চলত প্রস্তুতি। এখন কাজের মধ্যে এমন ডুবে গেছি যে, পহেলা ফাল্গুনের কথা মনেই থাকে না। মেয়েরা বাসন্তি রঙের শাড়ি পড়ে রাস্তায় নেমে এলে বুঝতে পারি, আজ পহেলা ফাল্গুন।

পহেলা ফাল্গুনেও আমাকে কাজের মধ্যে থাকতে হবে : আনিসুর রহমান মিলন

বসন্ত বা বৈশাখ এলে আমি আমার আগের সেই বোহেমিয়ান জীবনটা খুব মিস করি। বসন্ত উৎসব আয়োজন নিয়ে কী প্রচ- উৎসাহ নিয়ে একসময় কাজ করতাম। আর এখন কাজ নিয়ে এতোটাই ব্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, বসন্ত উৎসবে যাওয়ারই সময় হয় না। এবারের পহেলা ফাল্গুনেও আমাকে কাজের মধ্যে থাকতে হবে। একটা নাটকের শুটিং আছে।

প্রতি বছরই বেশ আনন্দের সঙ্গে পালন করি : নাদিয়া

পহেলা ফাল্গুন প্রতি বছরই বেশ আনন্দের সঙ্গে পালন করি। পরিবারের সঙ্গে বাইরে ডিনার করি। কখনো লং ড্রাইভে যাই। এবার অবশ্য সেটা সম্ভব নাও হতে পারে। কারণ নাচের দুটো প্রোগাম আছে। বসন্তবরণের জন্যই নাচবো। নাচের পোশাকটা হবে বাসন্তী রঙের। সেই সঙ্গে থাকবে গাঁদা আর গোলাপের অলংকার। কোথাও শো থাকলে সেই দিনটা প্রস্তুতি নিতে নিতেই কেটে যায়।

বসন্তের প্রথম দিন আসছে আমার সাজার উপলক্ষ নিয়ে : নওশীন

পৃথিবীতে পহেলা ফাল্গুন আসবে আর আমি বাসন্তী শাড়ি পরবো না, নিজেকে ফুলে ফুলে সাজবো না, তা হতে পারে না। আমি সাজতে বেশ পছন্দ করি। বসন্তের প্রথম দিন আসছে আমার সাজার উপলক্ষ নিয়ে। সাজগোজ করবো ঠিকই, কিন্তু দিনটা নিজের মতো কাটাতে পারবো না। কারণ চ্যানেল আই বসন্ত বরণের আয়োজন করেছে। দিনের বেশির ভাগ সময় আমাকে সেখানেই দিতে হবে।

ইচ্ছে আছে বসন্ত নিয়ে একটা গান করার : হৃদয় খান

বসন্ত নিয়ে অনেক সুন্দর সুন্দর গান আছে। আমারও ইচ্ছে বসন্ত নিয়ে একটা গান করার। এবারের পহেলা ফাল্গুনটা আমাকে কাটাতে হবে প্র্যাকটিস প্যাডে। কারণ পরদিন ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে দুইটা কনসার্টে গান করতে হবে। রাতে বাংলাভিশন চ্যানেলে আছে লাইভ শো। সেখানে দর্শকদের অনুরোধের গান গাইতে হবে। কখন কোন দর্শক কী গান শুনতে চাইবেন, গাইতে না পারলে মুশকিল। তাই প্রস্তুতির মধ্যে আছি।

বাংলাদেশ সময় ১৩৪০, ফেব্রুয়ারি ১১, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।