উনিশ শতকের শেষ দিকে চলচ্চিত্রের উদ্ভাবন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত দেশে দেশে কত ছবিই না তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে ছবির পরিভাষা আর বিচিত্র বিষয় ও বিভাগ।
কাসাব্লাঙ্কা (১৯৪২)
আমেরিকান প্রেমের ছবি হিসেবে ‘কাসাব্লাঙ্কা’র নাম শুরুর দিকেই পাওয়া যায়। ১৯৪২ সালে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই ছবিটি প্রেমিক-মনে বেশ ঝড় তুলে আছে। সেই ঝড়ের জোর যেন আজও অম্লান।
ছবিটির প্রেক্ষাপটে দেখা যায় মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কা শহর। তবে গল্পে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রেশ। এই শহরের এক নৈশকাবের মালিক ও তার সাবেক প্রেমিকাকে নিয়েই আবর্তিত হয়েছে ছবিটির গল্প। মেয়েটি তার বর্তমান স্বামীর হাত ধরে আমেরিকার পথে পা বাড়ায়। এই চলার পথেই দেখা হয় পুরনো প্রেমিকের সাথে। তার মন চায় কাসাব্লাঙ্কায় থেকে যাওয়ার। কিন্তু, সাথে যে স্বামী!
মাইকেল কার্টিস পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন হামফ্রে বোহার্ট, ইনগ্রিড বার্গমান, পল হেনরিড।
রোমান হলিডে (১৯৫৩)
এই ছবিটির নাম ঘুরে বেড়ায় ছবি-প্রেমিকদের মুখে মুখে। উইলিয়াম উইলার পরিচালিত এই ছবিটিকে অনেকেই সর্বকালের সেরা রোমান্টিক ছবি বলেও গণ্য করেন। এতে অভিনয় করেছেন গ্রেগরি প্রেগ ও অড্রে হেপবার্ন।
ছবিটির গল্পে অ্যান একটি দেশের রাজকুমারী। দেশ সফরের এক পর্যায়ে এসেছেন ইতালির রাজধানী রোমে। সব কাজ ধরাবাঁধা। বেশ কান্তও বটে। চিকিৎসক দিয়েছেন ঘুমের পরামর্শ। কিন্তু চপলমতি এই রাজকুমারী সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের অন্ধকারে বেরিয়ে পড়েন রোম ভ্রমণে। শুরু হয় কাহিনী।
অ্যান অফিসার অ্যান্ড আ জেন্টেলম্যান (১৯৮২)
এই ছবিটি সাতটি অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিল। এর ফলে ছবিটির গুরুত্ব কিছুটা হলেও অনুমান করা যায়। ছবিতে নৌবাহিনীর একজন অফিসার পেশাগতভাবে কাজের চাপে পড়ে যায়। এই প্রচ- চাপের ফলে সে নিজের জীবনকে অর্থহীন ভাবতে শুরু করে। একসময় এসব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আশ্রয় খুঁজে বেড়ায়। অবশেষে এক নারীশ্রমিকের ভেতর খুঁজে পায় সত্যিকারের ভালোবাসা।
ছবিটি পরিচালনা করেছেন টেইলর হ্যাকফোর্ড। অভিনয় করেছেন রিচার্ড গেরে, ডেবরা উইংগার এবং ডেভিড কিথ।
হোয়েন হ্যারি মেট স্যালি (১৯৮৯)
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নতুন স্নাতক হ্যারি ও স্যালির ভেতর বন্ধুত্ব গড়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার আগ মুহূর্তে। দুজনের দুটি পথ দুটি দিকে সরে যায়। নিউ ইয়র্কে এসে জীবনের প্রয়োজনে দুজনেই ব্যস্ত হয়ে যায়। দুজনেই প্রেমে পড়ে দুজন ভিন্ন মানুষের সাথে। মাঝে মাঝে দেখাও হয়। কোথায় যেন টান অনুভব করে।
তবে অনেক বছর পর তারা বুঝতে পারে তাদের বন্ধুত্ব শুধু বন্ধুত্বই নয়। এরও বেশি কিছু। তারপর...
রোব রাইনার পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন বিলি ক্রিস্টাল ও মেগ রিয়ান।
গোস্ট (১৯৯০)
এই রোমান্টিক ছবিটিকে ফ্যান্টাসি মুভিও বলা হয়। কেননা, প্রিয় স্ত্রীর সামনে খুন হওয়া স্বামী যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। কোনো রকম বিপদ-আপদ থেকে আগলে রাখেন স্ত্রীকে। নিজেদের ভালোবাসাকে রাখেন অক্ষত ও অম্লান।
অভিনয় করেছেন প্যাট্রিক সোয়াইজ, ডেমি মুর, টনি গোল্ডউইন, হুপি গোল্ডবার্গ। পরিচালনা করেছেন জেরি জুকার।
দ্য ইংলিশ পেশেন্ট (১৯৯৬)
ছবিটি জয় করে নিয়েছিল নয়টি অস্কার আর অসংখ্য দর্শকের হৃদয়। হাসপাতালে শুয়ে তীব্র শারীরিক যন্ত্রণা ও মানসিক কষ্টের ভেতর গল্প বলে যান ছবিটির নায়ক। চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যদিও ত্রিমাত্রিক প্রেম, তবু প্রেমের প্রচ- শক্তিই তাকে বাঁচিয়ে রাখে। প্রেমকেই বাঁচাতে ত্যাগ করেন মাতৃভূমির স্বার্থ।
অ্যান্টনি মিঙ্গেলা পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন রালফ ফিনেস, জুলিয়ে বিনোশে, ক্রিস্টিন স্কট টমাস, নাভিন অ্যান্ড্রুস।
টাইটানিক (১৯৯৭)
ইতিহাসের এই ঘটনাটি যুগে যুগে অনেক চিত্রনির্মাতাকে আকৃষ্ট করে এসেছে। তৈরিও হয়েছে অনেক ছবি। কিন্তু জেমস ক্যামেরন পরিচালিত ‘টাইটানিক’ সৃষ্টি করেছে নতুন ইতিহাস। এই ইতিহাস ছবির জগতে।
শতবর্ষী এক নারীর স্মৃতিচারণই এই ছবিটির গল্প। টাইটানিকে চড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন আমেরিকার পথে। জাহাজেই পরিচয় হয় এক তরুণের সাথে। মেয়েটি অন্যের বাগদত্তা হলেও ভুলে যেতে চান সেই সম্পর্ক। জাহাজডুবি, ভালোবাসার মানুষটির অকালমৃত্যু। কিন্তু হৃদয়ের গভীরে থেকে যায় সব স্মৃতি...
অভিনয় করেছেন কেট উইন্সলেট ও লিওনার্ডো ডিক্যাপরিও।
সিটি অব অ্যাঞ্জেলস (১৯৯৮)
এক দয়াবতী নারীর প্রেমে পড়ে এক অ্যাঞ্জেল। সিদ্ধান্ত নেয় নিজেকে প্রকাশ করার। মুখোমুখি হয় ভালোবাসার মানুষটির সামনে। কিন্তু সে এটাও জানে তার প্রকাশ পাওয়া মানে নিজেকে মরণশীল করে তোলা।
পরিচালক ব্র্যাড সিলবারলিং পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন নিকোলাস কেজ, মেগ রিয়ান ও ডেনিস ফ্রানজ।
হোয়াট ড্রিমস মে কাম (১৯৯৮)
অস্কারবিজয়ী এই ছবিটিতে দেখা যায় একটি অতিপ্রকৃত ঘটনা। এখানে এক নারী তার সন্তান ও স্বামীর মৃত্যু শোকে কাতর। কিন্তু তার মৃত স্বামী চেষ্টা করে যান স্ত্রীর কাতরতা কমানোর। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন রবিন উইলিয়ামস, কিউবা গুডিং ও অ্যানাবেলা সিওরা। পরিচালনা করেছেন ভিনসেন্ট ওয়ার্ড।
ফিফটি ফার্স্ট ডেটস (২০০৪)
এই রোমান্টিক কমেডিতে একটি লোক একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় প্রথম দেখাতেই। কিন্তু স্মৃতিবিভ্রমের কারণে প্রতিদিনই ভুলে যায় তার প্রেমিকাকে। প্রতিদিনই চেষ্টা করে মেয়েটির মন পাওয়ার জন্য। পিটার সেগাল পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন অ্যাডাম স্যান্ডলার এবং ড্রিউ ব্যারিমোর।
বাংলাদেশ সময় ১৭৫৫, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১১
১০টি দর্শকনন্দিত রোমান্টিক ছবি
রবাব রসাঁ
উনিশ শতকের শেষ দিকে চলচ্চিত্রের উদ্ভাবন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত দেশে দেশে কত ছবিই না তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে ছবির পরিভাষা আর বিচিত্র বিষয় ও বিভাগ। এবারের বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো হলিউডের ১০টি দর্শকনন্দিত রোমান্টিক ছবি।
কাসাব্লাঙ্কা (১৯৪২)
আমেরিকান প্রেমের ছবি হিসেবে ‘কাসাব্লাঙ্কা’র নাম শুরুর দিকেই পাওয়া যায়। ১৯৪২ সালে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই ছবিটি প্রেমিক-মনে বেশ ঝড় তুলে আছে। সেই ঝড়ের জোর যেন আজও অম্লান।
ছবিটির প্রেক্ষাপটে দেখা যায় মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কা শহর। তবে গল্পে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রেশ। এই শহরের এক নৈশকাবের মালিক ও তার সাবেক প্রেমিকাকে নিয়েই আবর্তিত হয়েছে ছবিটির গল্প। মেয়েটি তার বর্তমান স্বামীর হাত ধরে আমেরিকার পথে পা বাড়ায়। এই চলার পথেই দেখা হয় পুরনো প্রেমিকের সাথে। তার মন চায় কাসাব্লাঙ্কায় থেকে যাওয়ার। কিন্তু, সাথে যে স্বামী!
মাইকেল কার্টিস পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন হামফ্রে বোহার্ট, ইনগ্রিড বার্গমান, পল হেনরিড।
রোমান হলিডে (১৯৫৩)
এই ছবিটির নাম ঘুরে বেড়ায় ছবি-প্রেমিকদের মুখে মুখে। উইলিয়াম উইলার পরিচালিত এই ছবিটিকে অনেকেই সর্বকালের সেরা রোমান্টিক ছবি বলেও গণ্য করেন। এতে অভিনয় করেছেন গ্রেগরি প্রেগ ও অড্রে হেপবার্ন।
ছবিটির গল্পে অ্যান একটি দেশের রাজকুমারী। দেশ সফরের এক পর্যায়ে এসেছেন ইতালির রাজধানী রোমে। সব কাজ ধরাবাঁধা। বেশ কান্তও বটে। চিকিৎসক দিয়েছেন ঘুমের পরামর্শ। কিন্তু চপলমতি এই রাজকুমারী সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের অন্ধকারে বেরিয়ে পড়েন রোম ভ্রমণে। শুরু হয় কাহিনী।
অ্যান অফিসার অ্যান্ড আ জেন্টেলম্যান (১৯৮২)
এই ছবিটি সাতটি অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিল। এর ফলে ছবিটির গুরুত্ব কিছুটা হলেও অনুমান করা যায়। ছবিতে নৌবাহিনীর একজন অফিসার পেশাগতভাবে কাজের চাপে পড়ে যায়। এই প্রচ- চাপের ফলে সে নিজের জীবনকে অর্থহীন ভাবতে শুরু করে। একসময় এসব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আশ্রয় খুঁজে বেড়ায়। অবশেষে এক নারীশ্রমিকের ভেতর খুঁজে পায় সত্যিকারের ভালোবাসা।
ছবিটি পরিচালনা করেছেন টেইলর হ্যাকফোর্ড। অভিনয় করেছেন রিচার্ড গেরে, ডেবরা উইংগার এবং ডেভিড কিথ।
হোয়েন হ্যারি মেট স্যালি (১৯৮৯)
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নতুন স্নাতক হ্যারি ও স্যালির ভেতর বন্ধুত্ব গড়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার আগ মুহূর্তে। দুজনের দুটি পথ দুটি দিকে সরে যায়। নিউ ইয়র্কে এসে জীবনের প্রয়োজনে দুজনেই ব্যস্ত হয়ে যায়। দুজনেই প্রেমে পড়ে দুজন ভিন্ন মানুষের সাথে। মাঝে মাঝে দেখাও হয়। কোথায় যেন টান অনুভব করে।
তবে অনেক বছর পর তারা বুঝতে পারে তাদের বন্ধুত্ব শুধু বন্ধুত্বই নয়। এরও বেশি কিছু। তারপর...
রোব রাইনার পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন বিলি ক্রিস্টাল ও মেগ রিয়ান।
গোস্ট (১৯৯০)
এই রোমান্টিক ছবিটিকে ফ্যান্টাসি মুভিও বলা হয়। কেননা, প্রিয় স্ত্রীর সামনে খুন হওয়া স্বামী যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। কোনো রকম বিপদ-আপদ থেকে আগলে রাখেন স্ত্রীকে। নিজেদের ভালোবাসাকে রাখেন অক্ষত ও অম্লান।
অভিনয় করেছেন প্যাট্রিক সোয়াইজ, ডেমি মুর, টনি গোল্ডউইন, হুপি গোল্ডবার্গ। পরিচালনা করেছেন জেরি জুকার।
দ্য ইংলিশ পেশেন্ট (১৯৯৬)
ছবিটি জয় করে নিয়েছিল নয়টি অস্কার আর অসংখ্য দর্শকের হৃদয়। হাসপাতালে শুয়ে তীব্র শারীরিক যন্ত্রণা ও মানসিক কষ্টের ভেতর গল্প বলে যান ছবিটির নায়ক। চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যদিও ত্রিমাত্রিক প্রেম, তবু প্রেমের প্রচ- শক্তিই তাকে বাঁচিয়ে রাখে। প্রেমকেই বাঁচাতে ত্যাগ করেন মাতৃভূমির স্বার্থ।
অ্যান্টনি মিঙ্গেলা পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন রালফ ফিনেস, জুলিয়ে বিনোশে, ক্রিস্টিন স্কট টমাস, নাভিন অ্যান্ড্রুস।
টাইটানিক (১৯৯৭)
ইতিহাসের এই ঘটনাটি যুগে যুগে অনেক চিত্রনির্মাতাকে আকৃষ্ট করে এসেছে। তৈরিও হয়েছে অনেক ছবি। কিন্তু জেমস ক্যামেরন পরিচালিত ‘টাইটানিক’ সৃষ্টি করেছে নতুন ইতিহাস। এই ইতিহাস ছবির জগতে।
শতবর্ষী এক নারীর স্মৃতিচারণই এই ছবিটির গল্প। টাইটানিকে চড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন আমেরিকার পথে। জাহাজেই পরিচয় হয় এক তরুণের সাথে। মেয়েটি অন্যের বাগদত্তা হলেও ভুলে যেতে চান সেই সম্পর্ক। জাহাজডুবি, ভালোবাসার মানুষটির অকালমৃত্যু। কিন্তু হৃদয়ের গভীরে থেকে যায় সব স্মৃতি...
অভিনয় করেছেন কেট উইন্সলেট ও লিওনার্ডো ডিক্যাপরিও।
সিটি অব অ্যাঞ্জেলস (১৯৯৮)
এক দয়াবতী নারীর প্রেমে পড়ে এক অ্যাঞ্জেল। সিদ্ধান্ত নেয় নিজেকে প্রকাশ করার। মুখোমুখি হয় ভালোবাসার মানুষটির সামনে। কিন্তু সে এটাও জানে তার প্রকাশ পাওয়া মানে নিজেকে মরণশীল করে তোলা।
পরিচালক ব্র্যাড সিলবারলিং পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন নিকোলাস কেজ, মেগ রিয়ান ও ডেনিস ফ্রানজ।
হোয়াট ড্রিমস মে কাম (১৯৯৮)
অস্কারবিজয়ী এই ছবিটিতে দেখা যায় একটি অতিপ্রকৃত ঘটনা। এখানে এক নারী তার সন্তান ও স্বামীর মৃত্যু শোকে কাতর। কিন্তু তার মৃত স্বামী চেষ্টা করে যান স্ত্রীর কাতরতা কমানোর। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন রবিন উইলিয়ামস, কিউবা গুডিং ও অ্যানাবেলা সিওরা। পরিচালনা করেছেন ভিনসেন্ট ওয়ার্ড।
ফিফটি ফার্স্ট ডেটস (২০০৪)
এই রোমান্টিক কমেডিতে একটি লোক একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় প্রথম দেখাতেই। কিন্তু স্মৃতিবিভ্রমের কারণে প্রতিদিনই ভুলে যায় তার প্রেমিকাকে। প্রতিদিনই চেষ্টা করে মেয়েটির মন পাওয়ার জন্য।
পিটার সেগাল পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন অ্যাডাম স্যান্ডলার এবং ড্রিউ ব্যারিমোর।
বাংলাদেশ সময় ১৭৫৫, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১১
রবাব রসাঁ
উনিশ শতকের শেষ দিকে চলচ্চিত্রের উদ্ভাবন হওয়ার পর থেকে আজ পর্যন্ত দেশে দেশে কত ছবিই না তৈরি হয়েছে। তৈরি হয়েছে ছবির পরিভাষা আর বিচিত্র বিষয় ও বিভাগ। এবারের বিশ্ব ভালোবাসা দিবস বা ভ্যালেন্টাইন ডে উপলক্ষে বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো হলিউডের ১০টি দর্শকনন্দিত রোমান্টিক ছবি।
কাসাব্লাঙ্কা (১৯৪২)
আমেরিকান প্রেমের ছবি হিসেবে ‘কাসাব্লাঙ্কা’র নাম শুরুর দিকেই পাওয়া যায়। ১৯৪২ সালে মুক্তি পাওয়ার পর থেকেই ছবিটি প্রেমিক-মনে বেশ ঝড় তুলে আছে। সেই ঝড়ের জোর যেন আজও অম্লান।
ছবিটির প্রেক্ষাপটে দেখা যায় মরক্কোর কাসাব্লাঙ্কা শহর। তবে গল্পে আছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের রেশ। এই শহরের এক নৈশকাবের মালিক ও তার সাবেক প্রেমিকাকে নিয়েই আবর্তিত হয়েছে ছবিটির গল্প। মেয়েটি তার বর্তমান স্বামীর হাত ধরে আমেরিকার পথে পা বাড়ায়। এই চলার পথেই দেখা হয় পুরনো প্রেমিকের সাথে। তার মন চায় কাসাব্লাঙ্কায় থেকে যাওয়ার। কিন্তু, সাথে যে স্বামী!
মাইকেল কার্টিস পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন হামফ্রে বোহার্ট, ইনগ্রিড বার্গমান, পল হেনরিড।
রোমান হলিডে (১৯৫৩)
এই ছবিটির নাম ঘুরে বেড়ায় ছবি-প্রেমিকদের মুখে মুখে। উইলিয়াম উইলার পরিচালিত এই ছবিটিকে অনেকেই সর্বকালের সেরা রোমান্টিক ছবি বলেও গণ্য করেন। এতে অভিনয় করেছেন গ্রেগরি প্রেগ ও অড্রে হেপবার্ন।
ছবিটির গল্পে অ্যান একটি দেশের রাজকুমারী। দেশ সফরের এক পর্যায়ে এসেছেন ইতালির রাজধানী রোমে। সব কাজ ধরাবাঁধা। বেশ কান্তও বটে। চিকিৎসক দিয়েছেন ঘুমের পরামর্শ। কিন্তু চপলমতি এই রাজকুমারী সবার চোখ ফাঁকি দিয়ে রাতের অন্ধকারে বেরিয়ে পড়েন রোম ভ্রমণে। শুরু হয় কাহিনী।
অ্যান অফিসার অ্যান্ড আ জেন্টেলম্যান (১৯৮২)
এই ছবিটি সাতটি অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিল। এর ফলে ছবিটির গুরুত্ব কিছুটা হলেও অনুমান করা যায়। ছবিতে নৌবাহিনীর একজন অফিসার পেশাগতভাবে কাজের চাপে পড়ে যায়। এই প্রচ- চাপের ফলে সে নিজের জীবনকে অর্থহীন ভাবতে শুরু করে। একসময় এসব থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আশ্রয় খুঁজে বেড়ায়। অবশেষে এক নারীশ্রমিকের ভেতর খুঁজে পায় সত্যিকারের ভালোবাসা।
ছবিটি পরিচালনা করেছেন টেইলর হ্যাকফোর্ড। অভিনয় করেছেন রিচার্ড গেরে, ডেবরা উইংগার এবং ডেভিড কিথ।
হোয়েন হ্যারি মেট স্যালি (১৯৮৯)
শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই নতুন স্নাতক হ্যারি ও স্যালির ভেতর বন্ধুত্ব গড়ে উঠে বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়ার আগ মুহূর্তে। দুজনের দুটি পথ দুটি দিকে সরে যায়। নিউ ইয়র্কে এসে জীবনের প্রয়োজনে দুজনেই ব্যস্ত হয়ে যায়। দুজনেই প্রেমে পড়ে দুজন ভিন্ন মানুষের সাথে। মাঝে মাঝে দেখাও হয়। কোথায় যেন টান অনুভব করে।
তবে অনেক বছর পর তারা বুঝতে পারে তাদের বন্ধুত্ব শুধু বন্ধুত্বই নয়। এরও বেশি কিছু। তারপর...
রোব রাইনার পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন বিলি ক্রিস্টাল ও মেগ রিয়ান।
গোস্ট (১৯৯০)
এই রোমান্টিক ছবিটিকে ফ্যান্টাসি মুভিও বলা হয়। কেননা, প্রিয় স্ত্রীর সামনে খুন হওয়া স্বামী যোগাযোগ রক্ষা করে চলেন। কোনো রকম বিপদ-আপদ থেকে আগলে রাখেন স্ত্রীকে। নিজেদের ভালোবাসাকে রাখেন অক্ষত ও অম্লান।
অভিনয় করেছেন প্যাট্রিক সোয়াইজ, ডেমি মুর, টনি গোল্ডউইন, হুপি গোল্ডবার্গ। পরিচালনা করেছেন জেরি জুকার।
দ্য ইংলিশ পেশেন্ট (১৯৯৬)
ছবিটি জয় করে নিয়েছিল নয়টি অস্কার আর অসংখ্য দর্শকের হৃদয়। হাসপাতালে শুয়ে তীব্র শারীরিক যন্ত্রণা ও মানসিক কষ্টের ভেতর গল্প বলে যান ছবিটির নায়ক। চলছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। যদিও ত্রিমাত্রিক প্রেম, তবু প্রেমের প্রচ- শক্তিই তাকে বাঁচিয়ে রাখে। প্রেমকেই বাঁচাতে ত্যাগ করেন মাতৃভূমির স্বার্থ।
অ্যান্টনি মিঙ্গেলা পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন রালফ ফিনেস, জুলিয়ে বিনোশে, ক্রিস্টিন স্কট টমাস, নাভিন অ্যান্ড্রুস।
টাইটানিক (১৯৯৭)
ইতিহাসের এই ঘটনাটি যুগে যুগে অনেক চিত্রনির্মাতাকে আকৃষ্ট করে এসেছে। তৈরিও হয়েছে অনেক ছবি। কিন্তু জেমস ক্যামেরন পরিচালিত ‘টাইটানিক’ সৃষ্টি করেছে নতুন ইতিহাস। এই ইতিহাস ছবির জগতে।
শতবর্ষী এক নারীর স্মৃতিচারণই এই ছবিটির গল্প। টাইটানিকে চড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন আমেরিকার পথে। জাহাজেই পরিচয় হয় এক তরুণের সাথে। মেয়েটি অন্যের বাগদত্তা হলেও ভুলে যেতে চান সেই সম্পর্ক। জাহাজডুবি, ভালোবাসার মানুষটির অকালমৃত্যু। কিন্তু হৃদয়ের গভীরে থেকে যায় সব স্মৃতি...
অভিনয় করেছেন কেট উইন্সলেট ও লিওনার্ডো ডিক্যাপরিও।
সিটি অব অ্যাঞ্জেলস (১৯৯৮)
এক দয়াবতী নারীর প্রেমে পড়ে এক অ্যাঞ্জেল। সিদ্ধান্ত নেয় নিজেকে প্রকাশ করার। মুখোমুখি হয় ভালোবাসার মানুষটির সামনে। কিন্তু সে এটাও জানে তার প্রকাশ পাওয়া মানে নিজেকে মরণশীল করে তোলা।
পরিচালক ব্র্যাড সিলবারলিং পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন নিকোলাস কেজ, মেগ রিয়ান ও ডেনিস ফ্রানজ।
হোয়াট ড্রিমস মে কাম (১৯৯৮)
অস্কারবিজয়ী এই ছবিটিতে দেখা যায় একটি অতিপ্রকৃত ঘটনা। এখানে এক নারী তার সন্তান ও স্বামীর মৃত্যু শোকে কাতর। কিন্তু তার মৃত স্বামী চেষ্টা করে যান স্ত্রীর কাতরতা কমানোর। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন রবিন উইলিয়ামস, কিউবা গুডিং ও অ্যানাবেলা সিওরা। পরিচালনা করেছেন ভিনসেন্ট ওয়ার্ড।
ফিফটি ফার্স্ট ডেটস (২০০৪)
এই রোমান্টিক কমেডিতে একটি লোক একটি মেয়ের প্রেমে পড়ে যায় প্রথম দেখাতেই। কিন্তু স্মৃতিবিভ্রমের কারণে প্রতিদিনই ভুলে যায় তার প্রেমিকাকে। প্রতিদিনই চেষ্টা করে মেয়েটির মন পাওয়ার জন্য।
পিটার সেগাল পরিচালিত ছবিটিতে অভিনয় করেছেন অ্যাডাম স্যান্ডলার এবং ড্রিউ ব্যারিমোর।
বাংলাদেশ সময় ১৭৫৫, ফেব্রুয়ারি ১৩, ২০১১