বাংলাদেশ এখন ভাসছে বিশ্বকাপ ক্রিকেট উন্মাদনায়। স্বাগতিক দেশ বাংলাদেশ হওয়ায় বিশ্বকাপ নিয়ে উৎসাহ-উদ্দীপনা এখন ঘরে ঘরে।
আলী যাকের : আমাদের দেশে এবারই প্রথম এরকম একটি বিশ্বমানের টুর্ণামেন্ট হচ্ছে। ক্রিকেট নিয়ে আমার আগ্রহ সীমাহীন। কারণ আমি নিজেও একসময় ক্রিকেট খেলতাম। একসময় ক্রিকেটের ধারাভাষ্যও দিয়েছে। দেশের বাইরে বহু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আমি উপভোগ করেছি। নিজের দেশে বিশ্বকাপ ক্রিকেট হচ্ছে, আর আমি দেখবো না; তা হয় না। মাঠে গিয়ে তো সব খেলা দেখা সম্ভব নয়। টিভিতে ম্যাচগুলো দেখবো। বাংলাদেশের কয়েকটি খেলা গ্যালারিতে বসে দেখার ইচ্ছে আছে। আমি মনে করি, আমাদের ক্রিকেটাররা যদি ধারাবাহিকভাবে মাঠে নিজেদের খেলাটা দেখাতে পারে তাহলে কোয়ার্টার ফাইনালে পৌঁছে যাওয়া অসম্ভব কিছু নয়।
হুমায়ূন ফরীদি : আমি বরাবরই ক্রিকেটের ফ্যান। দেশে এবং বিদেশে বহু আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ আমি দেখেছি। বাংলাদেশে এবার বিশ্বকাপ ক্রিকেট হচ্ছে। সম্ভব হলে সবগুলো খেলাই আমি মাঠে বসে দেখতাম। তা তো সম্ভব না। তাই ঠিক করেছি, বাংলাদেশের ম্যাচগুলোতে মাঠে থাকার চেষ্টা করবো। অন্য ম্যাচগুলো টিভিতে দেখবো। বাংলাদেশের খেলার দিনগুলোতে আমি কোনো শিডিউল দেয় নি। কারণ নিজের দেশে বসে নিজের দলের খেলার সূযোগ জীবনে আর নাও পেতে পারি। বাংলাদেশ ক্রিকেট টিম নিয়ে আমি এবার বিশেষ আশাবাদী। দ্বিতীয় পর্ব পেরিয়ে যেতে আমাদের দেশের ক্রিকেটারদের খুব একটা বেগ পাওয়ার কথা নয়।
ইলিয়াস কাঞ্চন : বাংলাদেশে বিশ্বক্রিকেটের সবচেয়ে বড় আসর বসছে, এটা আমাদের জন্য ভীষণ আনন্দের। এই আনন্দের অংশীদার হওয়ার জন্য আমিও বাংলাদেশের দুএকটা ম্যাচ স্টেডিয়ামে বসে উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু টিকিট পাওয়াটাই তো কঠিন। চেষ্টা করছি টিকিট পাওয়ার। পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। যদি নাই পাই তাহলে টিভিতে খেলাগুলো দেখবো। আমি মনে করি, এবারে বিশ্বকাপের আসরে হট ফেবারিটদের তালিকায় বাংলাদেশকেও রাখা যায়। কারণ এবার আমাদের সাকিব বাহিনী পুরোপুরি পারফেক্ট টাইগারদের দল।
কুমার বিশ্বজিৎ : বিশ্বকাপ ক্রিকেটের স্বাগতিক দেশ বাংলাদেশ। কাজেই আশা করেছিলাম উদ্বোধনী ও সমাপনী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের শিল্পীদের গুরুত্ব থাকবে। এখন দেখছি, বাংলাদেশের শিল্পীদের যেটুক অংশগ্রহণ আছে তা নামে মাত্র। বিশ্বকাপের টাইটেল সঙটি আমাদের শিল্পীদের দিয়ে গাওয়ালে ভালো লাগতো। যাই হোক, নিজের দেশে বিশ্বকাপ হচ্ছে। এই আনন্দে যোগ দিতেই হয়। বাংলাদেশ-ভারতের খেলাটা স্টেডিয়ামে বসে দেখার ইচ্ছে আছে। আশা করছি, আমাদের সোনার ছেলেরা কোয়ার্টার ফাইনাল পর্যন্ত পৌছে যেতে পারবে।
শাকিব খান : আমি ভীষণ আনন্দিত বিশ্বকাপ ক্রিকেটের উদ্বোধনী পর্বে পারফর্মেন্সের সূযোগ পাওয়ায়। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিশ্বাকাপ হচ্ছে, এটা একটা ইতিহাস। আমি নিজেও সেই ইতিহাসের অংশ হয়ে গেলাম। এ জন্য আমি গর্বিত। আমার শুটিং শিডিউল অনেক আগে থেকেই দিয়ে রাখা বলে কয়টি খেলা দেখবো বলতে পারছি না। তবে বাংলাদেশের খেলাগুলো মিস করতে চাই না। মাঠে যাওয়া তো সম্ভব নয়, টিভিতে দেখবো। আমার ধারণা, এবারের বিশ্বকাপ ক্রিকেটে বাংলাদেশ সবচেয়ে বড় অঘটন ঘটাবে। আমি অধীর আগ্রহে তার অপেক্ষায় আছি।
আসিফ : গত দুবারের বিশ্বকাপের বেশিরভাগ ম্যাচই আমি দেখেছি। কিন্তু এবার একটু সংশয়ের মধ্যে আছি। বাড়ির সামনে মসজিদ থাকলে আমরা যেমন জামায়াত ধরতে পারি না। এবার তো মনে হয় সে অবস্থা হবে। কারণ টিকিট সংগ্রহে ভোগান্তি। বাংলাদেশে অনুষ্ঠিত সবগুলো ম্যাচের টিকিট সংগ্রহের চেষ্টা করে আমি ব্যর্থ হয়েছি। তবে আমি অবশ্যই ক্রিকেট মাঠে থাকবো সবক’টি ম্যাচে থাকতে না পারলেও বাংলাদেশের সব ম্যাচে মাঠে থাকার জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমি অবাস্তব কোনো প্রত্যাশায় না গিয়ে বলবো, বাংলাদেশ দল এবার ভালো খেলবে। বড় দলগুলোকেও সহজে ছাড় দিবে না, অন্তত ফাইট দিবে।
মেহেরীন : বিশ্বকাপের এই আসরে আমি বেক্সিমকোর একটি থিম সঙে কণ্ঠ দিয়েছি। এই কাজটি করে মন অন্যরকম তৃপ্তিতে ভরে গেছে। আমার গানটি যদি খানিকটা হলেও বাংলাদেশে ক্রিকেটের অনুপ্রাণিত করতে পারে তাহলে নিজেকে স্বার্থক মনে করবো। গত কয়েকদিন ধরে ঘর থেকে বেরুলেই পুরো ঢাকাশহর জুড়ে যে আলোর রোশনাই চোখে পড়ে তা সত্যিই উপভোগের। আমি আমার বাচ্চাদের নিয়ে তাই এখন প্রায় প্রতিদিন রাতে গাড়িতে করে এই আলোর উৎসব দেখতে বের হই। নিজের সমস্ত কাজের শিডিউল থেকে ক্রিকেটের জন্য আলাদা সময় বের করে রেখেছি। বাংলাদেশের খেলা একটাও মিস করতে আমি রাজি নই।
মীর সাব্বির : বিশ্বকাপ উন্মাদনা যে কি তা আমার বাসায় এলে টের পাওয়া যায়। আমার ৬ বছরের একমাত্র সন্তান এখনই গায়ে সাকিবের জার্সি জড়িয়ে সারাঘর ছোটাছুটি করে। তাকে ক্রিকেটের ব্যাট আর বল কিনে দিতে হয়েছে। আমাদের প্রতিদিনই সে জিজ্ঞেস করে, কবে থেকে শুরু হবে বিশ্বকাপ। আমাদের বলতে হয়, এইতো আর মাত্র কটা দিন বাকি বিশ্বকাপ আসরের। বিশ্বকাপের খেলা অবশ্যই দেখবো। টিকিট সংগ্রহ করতে না পারায় মাঠে যাওয়া হচ্ছে না। ঘরে বসেই টিভিতে দেখবো। বাংলাদেশের খেলার দিনগুলোতে আমি কোথাও শিডিউল দেই নি। আশা করি এবার কোয়ার্টার ফাইনালে যাবে বাংলাদেশ।
মোনালিসা : বিশ্বকাপ ক্রিকেটের খেলা দেখার জন্য এরই মধ্যে আমি দুটি টিকিট সংগ্রহ করেছি। যদিও সংগ্রহ করতে অনেক কষ্ট হয়েছে। কাছের যেসব বন্ধু টিকিট পেয়েছে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে খেলা দেখতে যাবো। বাংলাদেশ-ভারতের ম্যাচটি আমি কিছুতেই মিস করবো না। বাংলাদেশে বিশ্বকাপ ক্রিকেট হচ্ছে, এই জনমে এমন সুযোগ আর আসবে কিনা জানি না। তাই সুযোগটি হাতছাড়া করতে চাই না। সে জন্যই আমি সবাইকে উৎসাহ দিচ্ছি এবারের আসরটি কেউ যেন মিস না করেন। যদিও টিকিট পাওয়াটা অনেক কষ্টসাধ্য ব্যাপার। সে হিসেবে আমি অনেক সৌভাগ্যবান। আমি আশা করি, বাংলাদেশ এবার সেমিফাইলালে খেলবে।
শখ : বাংলাদেশে এবার বিশ্বকাপ ক্রিকেট হচ্ছে। এ উপলক্ষে ক্রিকেট নিয়ে তৈরি করা একাধিক নাটকে আমি অভিনয় করেছি। মাঠে বসে খেলা দেখার ইচ্ছে থাকলেও সম্ভব হবে কিনা জানি না। কারণ টিকিট যোগার করাটা কঠিন। তবু আমি চেষ্টা করছি। মাঠে না যেতে পারলেও টিভিতে খেলা দেখবো। বাংলাদেশের খেলা একটাও মিস করবো না। এবার বিশ্বকাপে সেরা খেলোয়াড় হবে বাংলাদেশের ক্যাপ্টেন সাকিব আল হাসান। বাংলাদেশও এবার ফেবারেট টিম।
বাংলাদেশ সময় ১৭৪০, ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১১