‘আমি অন্যায় করেছি, সেই অন্যায়ের শাস্তি ভোগ করছি। কিন্তু আমার সঙ্গে যারা অন্যায় করল, তাদের মুখোশ কি কোনোদিন খুলবে না?’ এই প্রশ্ন প্রভার।
অভিনেতা ও মডেল অপূর্বর সঙ্গে ডিভোর্স হওয়া প্রসঙ্গে প্রভা বলেন, `গত ১১ ফেব্রুয়ারি আমাদের বাসায় দুই পরিবারের উপস্থিতিতে ডিভোর্স হয়েছে। যদিও আমি শেষ পর্যন্ত চেয়েছিলাম সংসার টিকিয়ে রাখতে। অপূর্ব আমাকে শারীরিকভাবে প্রহার করার পরও শরীরে ব্যথা নিয়ে নিঃশব্দে তার জন্য রান্না করতে গেছি। কিন্তু সে আমার সঙ্গে কুকুর-বেড়ালের মতো ব্যবহার করেছে। `
বিয়ের দেনমোহর প্রাপ্তি প্রসঙ্গে প্রভা বললেন, `৫ লাখ ১ টাকা দেনমোহরে আমাদের বিয়ে হয়েছিল। ডিভোর্সের সময় সেই দেনমোহর পরিশোধের কথা ওঠে। অপূর্ব জানায়, দেনমোহরের টাকা সে কোর্টের মাধ্যমে পরিশোধ করবে। আমি তখন আপত্তি জানিয়ে বলেছিলাম, দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করার পরই আমি ডিভোর্স লেটারে সাইন করব। কিন্তু আমার বাবা আমাকে দেনমোহরের টাকা ক্ষমা করে দিতে বললে আমি তাই করি। অথচ এখন অপূর্ব বলে বেড়াচ্ছে সে নাকি আমার দেনমোহরের টাকা পরিশোধ করে দিয়েছে। এটা ডাহা মিথ্যা। এরকম অনেক মিথ্যাচারের মধ্য দিয়েই সে আমার সামনে ঘোর তৈরি করে এবং আমাকে বিপথগামী করে। `
প্রভা বলেন, অপূর্বর সঙ্গে সংসার শুরু করার পর আমার মা রাগ করে আমাকে ত্যাজ্য মেয়ে ঘোষণা করে। আমার সব জিনিসপত্র অপূর্বর বাসায় পাঠিয়ে দেয়। আমার সেই জিনিসপত্রও অপূর্ব ফেরত দেয়নি। আমাকে এক কাপড়ে অপূর্বর বাসা থেকে বেরিয়ে আসতে হয়েছে। `
রাজিব প্রসঙ্গে প্রভা বলেন, `আমার কম বয়সের সরলতার সুযোগ নিয়ে রাজিব ফাঁদ পেতে আমাদের ঘনিষ্ঠ মুহূর্তের ফুটেজ রেকর্ড করে। আমাকে সে শপথ করে জানায়, এসব সে মুছে ফেলবে। কিন্তু কীভাবে সে প্রতিশোধ নিতে এগুলো ব্যবহার করেছে তা তো সবাই জানেন। সবাই প্রশ্ন করতে পারে, রাজিবকে ছেড়ে আমি অপূর্বের প্রতি কেন ঝুঁকলাম? এই প্রশ্নের উত্তর আমি নিজেও জানি না। আসলে অপূর্ব আমার সামনে এক ধরনের ঘোর তৈরি করেছিল। আমার প্রতিটি ব্যাপার সে নিজের বলে মনে করত। কথাবার্তা সব কিছুতেই সে আমার প্রতি গভীর অনুভূতি দেখাত। রাজিবের সঙ্গে সম্পর্কের বিষয়ে কোনো কথাই আমি তার কাছে গোপন করিনি। সব জেনেশুনেই আমাকে সে বিয়ে করে। কিন্তু বিয়ের সপ্তাহখানেক পরই পাল্টে যায় তার আচরণ। `
প্রভা আরো বললেন, `অতীতে অপূর্ব সম্পর্কে অনেকরকম কথাবার্তা শুনেছি। কিন্তু সেই সময়টায় সে আমার সামনে এমন একটা মোহের জাল ছড়িয়ে দিয়েছিল যে বাবা-মা, ক্যারিয়ার সব ভুলে আমি তার সঙ্গে বেরিয়ে পড়ি। বিয়ের এক সপ্তাহের মধ্যে আমার চোখে ধরা পড়ে, একাধিক মেয়ের তার সম্পর্ক রাখার বিষয়টি। এ নিয়ে কিছু বলতে চাইলেই সে আমাকে মারধর করত। অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল করত। আমার হাতের যে মোবাইল ফোনটা ছিল, সেটিও সে কেড়ে নিয়ে ভেঙে ফেলে। `
প্রভা সবশেষে বললেন, `রাজিব উচ্চবিত্ত ঘরের ছেলে। সে এখন দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াচ্ছে। কোনো কিছুতেই তার পরোয়া নেই। ওদিকে অপূর্ব সব দোষ আমাকে দিয়ে পার পেয়ে গেছে। আমি কাউকে আমার মুখ দেখাতে পারি না। আত্মীয়-স্বজন সবাই আমাকে নিয়ে বিব্রত। চারদেয়ালের মধ্যে বন্দি জীবন কাটাচ্ছি। আমি কি এই বন্দিত্ব থেকে কোনোদিন মুক্তি পাবো না?`
প্রভার সঙ্গে কথা বলার পর এ বিষয়ে অপূর্বের মন্তব্য জানার জন্য বাংলানিউজ তার সঙ্গে বহুবার যোগাযোগের চেষ্টা করে। কিন্তু তার মোবাইল ফোন বরাবরই বন্ধ পাওয়া যায়।
বাংলাদেশ সময় ২১২৮, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১১