ক্লিওপেট্রার কথা মনে পড়ে? না, না ফারাও রানী ক্লিওপেট্রা নয়। আমাদের লিজ।
৭৯ বছর বয়সে এসে থেমে গেল রূপালী পর্দার এই ক্লিওপেট্রার জীবন।
লন্ডনের হাম্পস্টিডে জগত-কাঁপানো এই অভিনেত্রী জন্মেছিলেন ১৯৩২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি। তার আমেরিকান বাবা-মা স্বদেশে ফিরে যান ২য় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর খানিক আগে।
টেইলরকে রূপালী পর্দায় প্রথম দেখা যায় দশ বছর বয়সে। ছবির নাম ‘দেয়ারস ওয়ান বর্ন এভরি মিনিট’। এখানে অভিনয়ের পর ছবির প্রযোজনাকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল পিকচার্স বলেছিল, ‘মেয়েটি গাইতেও পারে না, নাচতেও পারে না, অভিনয়ও করতে পারে না। এ পরিবারের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ভুলই হয়েছে। ’
কিন্তু না, ভুল হয়নি। পরে এই মেয়েটিই হয়ে উঠেছিলেন হলিউডের ‘রানী’! কালজয়ী অভিনেত্রী! দর্শকদের মাথার মুকুট! আরো কত কী!
মাত্র বারো বছর বয়সেই এলিজাবেথ অর্জন করেন তারকাখ্যাতি। সেটি ছিল ১৯৪৪ সাল। ‘ন্যাশনাল ভেলভেট’ ছবিতে ভেলভেট ব্রাউনের চরিত্রে অভিনয় করে তিনি চিত্রজগতে সুদৃঢ় করেন তার নাম। অভিনয় শৈলী দিয়ে মুগ্ধ করেন দর্শকদের। ছবিটি পায় বিশাল বাণিজ্যিক সাফল্য। এরপর, আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি লিজকে।
লিজ তার দীর্ঘ জীবনে শুধু অন্যের জীবন চিত্রিত করেই যাননি। সৃষ্টি করেছিলেন নিজের জীবনকাহিনী। তার প্রতিভা আর সৌন্দর্য দিয়ে যেমন আলোচনার ঝড় তুলেছিলেন হলিউডের রঙিন দুনিয়ায়, তেমনি সাতটি বিয়ে করে আলোচনার ঝড় তুলেছিলেন উদারনীতির মার্কিন সমাজে।
১৯৪২ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত মোট সাতচল্লিশটি ছবিতে অভিনয় করেছিলেন লিজ টেইলর। অভিনয়খ্যাতি তাকে এনে দিয়েছিল ‘সর্বকালের অন্যতম সেরা’ অভিনেত্রীর মর্যাদা। ‘বাটারফিল্ড এইট’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস পান ১৯৬১ সালে। এই পুরষ্কার তার হাতে আবারো আসে ১৯৬৭ তে ‘হুজ অ্যাফ্রেড অব ভার্জিনিয়া ওলফ?’ ছবিতে অভিনয়ের জন্য। ১৯৯৩ সালেও অ্যাকাডেমি অ্যাওয়ার্ডস পেয়েছিলেন টেইলর।
এছাড়া, গোল্ডেন গ্লোবসহ আরো অনেক পুরষ্কার এসেছিল ৫ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার এই অভিনেত্রীর ঝুলিতে।
অনেকদিন থেকেই অসুস্থতায় ভুগছিলেন লিজ। লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডার সিনাই মেডিক্যাল সেন্টারে ২৩ মার্চ মারা যাওয়ার সময়টিতে তার চার সন্তানই উপস্থিত ছিলেন হাসপাতালে মায়ের পাশে।
লিজ মারা গেলেন কিন্তু রয়ে গেলেন অগণিত ভক্তের হৃদয়ে।
বাংলাদেশ সময় ২২০৬, মার্চ ২৩, ২০১১