রুপালি পর্দার রূপের রানী এলিজাবেথ টেইলর ৭৯ বছর বয়সে লস অ্যাঞ্জেলেসের সিডার সিনাই মেডিক্যাল সেন্টারে মারা যান ২৩ মার্চ। সুদীর্ঘ ৫৯ বছরের সফল অভিনয় জীবনে তিনি ৪৭টি ছবিতে অভিনয় করেছেন।
উল্লেখ্য, দশ বছর বয়সে ‘দেয়ারস ওয়ান বর্ন এভরি মিনিট’ ছবিতে তিনি প্রথম অভিনয় করেন। ১২ বছর বয়সে ‘ন্যাশনাল ভেলভেট’ ছবিতে অভিনয় করে অর্জন করেন তারকাখ্যাতি। লিজ টেইলরের জনপ্রিয় ১০টি ছবির খবর তুলে ধরা হলো বাংলানিউজের পাঠকদের জন্য।
দেয়ারস ওয়ান বর্ন এভরি মিনিট (১৯৪২)
বহুল আলোচিত এ ছবির মাধ্যমে অভিনয় শুরু করেন এলিজাবেথ টেইলর। ডেভিন গ্র্যাডি পরিচালিত এ হাস্যরসাত্মক ছবিতে এলিজাবেথ যে অভিনয় করেছিলেন তাতে খুশি হতে পারেননি ছবিটির প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান ইউনিভার্সাল পিকচারস। তারা বলেছিল, মেয়েটি গাইতে পারে না, নাচতেও পারে না, এমনকি অভিনয়ও করতে পারে না। এ পরিবারের সঙ্গে পরিচিত হয়ে ভুলই হয়েছে।
তবে এলিজাবেথের জীবনের প্রথম ছবি হিসেবে ইতিহাসে সোনার হরফে লেখা হয়ে গেছে ‘দেয়ারস ওয়ান বর্ন এভরি মিনিট’ এর নাম।
ন্যাশনাল ভেলভেট (১৯৪৪)
কারেন্স ব্রাউন পরিচালিত এ ছবিতে ভেলভেট ব্রাউনের চরিত্রে অভিনয় করে এলিজাবেথ মাত্র ১২ বছর বয়সে চিত্রজগতে সুদৃঢ় করেন নিজের নাম। মিকি রুনি ও ডোনাল্ড ক্রিসপের সঙ্গে অভিনয় করে তরুণ এ অভিনেত্রী মুগ্ধ করেন দর্শকদের। ছবিটি বাণিজ্যিকভাবে সাফল হয়। এ সঙ্গে এলিজাবেথ পেয়ে যান তারকাখ্যাতি।
দ্য লাস্ট টাইম আই স প্যারিস (১৯৫৪)
রির্চাড ব্রুকস পরিচালিত এ রোমান্টিক ছবিটির প্রেক্ষাপট ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরবর্তী ইউরোপ। এ ছবিতে ফন জনসনের সঙ্গে অভিনয় করেছিলেন এলিজাবেথ টেইলর। তখন হলিউডজুড়ে চলছিল এ নায়িকার জয়জয়কার।
জায়েন্ট (১৯৫৬)
এ ছবিটি তৈরি হয়েছে টেক্সাসের রেঞ্চারদের বর্ণাঢ্য জীবনকাহিনী নিয়ে। প্রযোজনা ও পরিচালনা করেন জর্জ স্টিভেন্স। এ ছবিতে এলিজাবেথ অভিনয় করেছেন রক হাডসন ও জেমস ডিন। এ ছবি থেকে স্টিভেন্স আয় করেছিলেন ছবির খরচের প্রায় পাঁচগুণ।
রেইটট্রি কান্ট্রি (১৯৫৭)
১৮৬০ দশকে আমেরিকার গৃহযুদ্ধের ওপর নির্মিত এ ছবিটি টেইলরের জীবনে এনে দেয় প্রথম অস্কার মনোনয়নের স্বাদ। এদুয়ার্দ দিমিত্রিক পরিচালিত এ ছবিতে আরও অভিনয় করেছেন মন্টগোমারি কিফট, ইভা মারি সেন্ট এবং লি মারভিন।
ক্যাট অন অ্যা হট টিন রুফ (১৯৫৮)
হাইস্কুলের সোনালি দিনগুলো ফিরে পেতে চায় মাতাল ব্রিক পলিট। তার জীবনের বিভিন্ন ঘটনা নিয়ে রির্চাড ব্রুকস তৈরি করেছেন এ ছবিটি।
যদিও নাট্যকার টেনেসি উইলিয়ামস তার পুলিৎজার বিজয়ী নাটকটির বড় পর্দার সংস্করণটি পছন্দ করেননি তবুও এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য এলিজাবেথ টেইলর ও পল নিউম্যান অস্কার মনোনয়ন পেয়েছিলেন।
সাডেনলি, লাস্ট সামার (১৯৫৯)
টেনেসি উইলিয়ামসের এ নাটকের বড় পর্দার সংস্করণও টেইলরকে এনে দেয় অস্কারে সেরা অভিনেত্রীর মনোনয়ন। ১৯৩৭ সালের একটি কাহিনীর ওপর ভিত্তি করে ছবিটি তৈরি করেন ইয়োসেফ এল মানকিয়েভিচ।
উল্লেখ্য, টেইলরে বহুল আলোচিত সাত স্বামীর অন্যতম ইডি ফিশার ও অভিনয় করেছিলেন এ ছবিতে।
বাটারফিল্ড এইট (১৯৬০)
এ ছবির গল্পে আছে নিউইয়র্কের এক যৌনকর্মী প্রেমে পড়েন বিবাহিত এক পুরুষের। ফলে দুঃখ নেমে আসে মেয়েটির জীবনে। জটিল থেকে জটিলতর হয়ে উঠে তার দৈনন্দি জীবন।
দানিয়েল মান পরিচালিত এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য সেরা অভিনেত্রী হিসেবে এলিজাবেথ অস্কার পান ১৯৬১ সালে। এ ছবিতেও টেইলরের স্বামী ইডি ফিশার অভিনয় করেছিলেন। তবে এলিজাবেথ ও ইডি দু’জনেই নাকি ছবিটি অপছন্দ করেছিলেন।
কিওপেট্রা (১৯৬৩)
ইয়োসেফ এল মানকিয়েভিচ পরিচালিত ইতিহাসভিত্তিক এ ছবিতে অভিনয় করেন এলিজাবেথ এক মিলিয়ন ডলার পারিশ্রমিক নিয়েছিলেন। রেকর্ড করেছিলেন হলিউডের ইতিহাসে।
বিখ্যাত ফারাও রানী ‘কিওপেট্রা’র চরিত্রে অভিনয় করে তিনি মূর্ত করেছিলেন কয়েক হাজার বছরের পুরোনো এ রানীর অপরূপ রূপ।
এলিজাবেথের জীবনে ছবিটির আরেকটি গুরুত্ব আছে। এ ছবিতে অভিনয় করতে গিয়ে রিচার্ড বার্টনের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে উঠে।
হুজ অ্যাফ্রেড অব ভার্জিনিয়া ওলফ? (১৯৬৬)
নিউ ইংল্যান্ডের একটি ছোট কলেজের প্রেক্ষাপট নিয়ে নির্মিত হয় এ ছবি। ইতিহাসের এক অধ্যাপক জর্জ ও কলেজ প্রেসিডেন্টের কন্যা মার্থার সম্পর্কই হচ্ছে এ ছবির মূল দৃশ্যপট।
মাইক নিকোলস পরিচালিত এ ছবিতে অভিনয়ের জন্য এলিজাবেথ দ্বিতীয়বার সেরা অভিনেত্রী হিসেবে ১৯৬৭ সালে অস্কারে ভূষিত হন। এ ছবিতে এলিজাবেথের অন্যতম স্বামী রিচার্ড বার্টন জর্জের চরিত্রে অভিনয় করেন। এলিজাবেথ করেন মার্থার চরিত্রে অভিনয়।
বাংলাদেশ সময় ২১১২, মার্চ ২৪, ২০১১