লিটল রিভার ব্যান্ড সংক্ষেপে এলআরবি নামে যাত্রা শুরু করেছিল সেই ১৯৯১ সালে। চলতি পথের প্রথম বছরেই বদলে যায় ব্যান্ডের নাম।
দুই দশক পূর্তি উপলক্ষে ৫ এপ্রিল সন্ধ্যায় রাজধানীর বেইলি রোডের থার্টি থ্রি মিউজিক ক্যাফেতে এলআরবির আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে জমকালো অনুষ্ঠান। জন্মদিনের এই উৎসব শুরু হয় আনুষ্ঠানিকভাবে কেক কাটার মাধ্যমে। এ সময় এলআরবির সদস্যরা ছাড়াও ছিল দেশের বিভিন্ন ব্যান্ডের মিউজিশিয়ন ও শুভানুধ্যায়ীরা। জন্মদিনের কেক কাটার পর চলে সঙ্গীত পরিবেশনার পালা। শুধু এলআরবিই নয়, গানে কন্ঠ মিলিয়েছেন অন্যরাও।
দুই দশক পূর্তির অনুভূতির কথা জানিয়ে এলআরবি প্রধান বাংলানিউজকে বলেন, এলআরবি নিয়ে সেই ’৯১ থেকে যুদ্ধ করে চলেছি। নানা প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে আমাদের যুদ্ধ এখনও চলছে। স্বাধীনতার সুখের নাগাল আজও পাইনি। তবুও আমরা হাল ছাড়িনি। এলআররি তার নিজের ধারা বজায় রেখে দুই দশক পার করেছে। এলআরবি বিশ থেকে একুশে পা দিচ্ছে, তার মানে আমরা সবে তারুণ্যে পদার্পণ করলাম। তারুণ্যের দুর্বার গতি নিয়েই আমরা আরো দুই দশক এগিয়ে যেতে চাই। এলআরবির এবারের জন্মবার্ষিকীটা তাই এ দেশের তরুণ প্রজন্মের জন্য উৎসর্গ করছি।
জন্মদিনে নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, বিশ্বের সেরা মিউজিশিয়নদের পাশে তিনি এলআরবিকে নিয়ে দাঁড়াতে চান। তাদের সঙ্গে একই মঞ্চে দাঁড়িয়ে মিউজিক করতে চান।
প্রতিষ্ঠার দুই দশক পূর্তিতে এলআরবি তাদের পুরনো ওয়েব সাইটটিকে নতুন আয়োজনে সাজিয়েছে। জন্মদিনের কেক কাটার পর পরই ‘এলআরবি.কম.বিডি’ আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হয়। এ সাইটে এখন থেকে এলআরবির এ যাবৎকালের সব গানই শোনা যাচ্ছে। পাশাপাশি এতে নিয়মিত আপলোড করা হবে আনরিলিজড গান। যার কারণে এলআরবির শ্রোতারা এ সাইট থেকে গান শুনতে পারলেও ডাউনলোড করতে পারবেন না।
দেশে শিল্পী তৈরির কারখানা হিসেবে খ্যাত জনপ্রিয় ব্যান্ড ‘সোলস’-এ টানা ১০ বছর গিটার বাজানোর পর ১৯৯১ সালের পাঁচ এপ্রিল আকস্মিকভাবে আইয়ুব বাচ্চু গঠন করেন নিজের ব্যান্ড ‘এলআরবি’। তার সঙ্গে সে সময় সহযোদ্ধা হিসেবে ছিলেন স্বপন, জয় ও এসআই টুটুল। ১৯৯২ সালে সেলফ টাইটেল ডাবল অ্যালবাম প্রকাশ করে তাক লাগিয়ে দেয় এলআরবি। স্টেজ প্রোগ্রামেও তারা হয়ে উঠেন ব্যাপক জনপ্রিয়।
সেলফ টাইটেল ডাবল ডেব্যু অ্যালবামের পর এলআরবিকে আর পিছু ফিরে তাকাতে হয় নি। একে একে এলআরবি প্রকাশ করে ‘সুখ’(১৯৯৩), ‘তবুও’ (১৯৯৪), ‘ঘুমন্ত শহরে’ (১৯৯৫), ‘স্বপ্ন’ (১৯৯৬), ‘ফেরারি মন : আনপ্লাগড’ (১৯৯৬), ‘আমাদের বিস্ময় : ডাবল্স’ (১৯৯৮), ‘মন চাইলে মন পাবে’ (২০০১), ‘অচেনা জীবন’ (২০০৩), ‘মনে আছে নাকি নাই’ (২০০৫) এবং ‘স্পর্শ’ (২০০৮)। এলআরবি’র প্রতিটি অ্যালবামই পেয়েছে ব্যাপক সাফল্য। বিশেষ করে দেশের তরুণ প্রজন্ম এলআরবির অ্যালবাম বের হওয়া মাত্রই বরাবরই লুফে নিয়েছে। এলআরবি’র মুক্তি প্রতীক্ষিত অ্যালবাম ‘যুদ্ধ’ এ বছরই রিলিজ পাচ্ছে।
দেশ ছাড়িয়ে কলকাতাতেও এলআরবি সমান জনপ্রিয়। কলকাতার স্থানীয় ব্যান্ডগুলোকে এখন প্রায়ই এলআরবির গান গাইতে দেখা যায়। আমেরিকা ও ইউরোপের বাঙালী অধ্যুষিত বহু বড় বড় শহরে এলআরবি প্রতিবছরই নিয়মিত স্টেজ পারফর্ম করছে।
আইয়ুব বাচ্চুর নের্তৃত্বে গত দুই দশক এলআরবির লাইনআপে অন্য অনেক ব্যান্ডের মতো বড়ধরণের কোনো বিপর্যয় নেমে আসে নি। মধ্যবর্তী সময়ে ব্যক্তিগত কারণে এলআরবি ছেড়েছেন জয়, মিল্টন আকবর, সুমন, এস আই টুটুল এবং সবশেষে রিয়াদ।
এলআরবি’র বর্তমান লাইনআপ হচ্ছে লিড ভোকাল ও লিড গিটারে আইয়ুব বাচ্চু (দলনেতা), বেজ গিটারে স্বপন, গিটার ও সাইডভয়েস মাসুদ এবং ড্রামসে রোমেল।
বাংলাদেশ সময় ২০৩৫, এপ্রিল ০৫, ২০১১